প্রেমিককে দিয়েই মাকে খুন করায় মেয়ে

প্রকাশিত: ৭:৩৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৮, ২০২০

প্রেমিককে দিয়েই মাকে খুন করায় মেয়ে

Manual8 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মা মাহমুদা বেগমকে (৪৫) প্রেমিক ও তার বন্ধুদের দিয়ে খুন করায় মেয়ে জুলেখা আক্তার জ্যোতি। গত বুধবার সকালে মানিকগঞ্জ শহরের দক্ষিণ সেওতা এলাকায় নিজ বাড়িতে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় মাহমুদা বেগমকে। হত্যায় অংশ নেয় জ্যোতির কথিত প্রেমিক নাঈম ইসলাম ও তার তিন সহযোগী।

আজ সোমবার বিকেলে মানিকগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহমেদের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় গ্রেপ্তার জ্যোতি, নাঈম ও নাঈমের সহযোগী রাকিব।

মানিকগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শামীম আল মামুন জানান, মাহমুদা বেগমকে নিজ ঘরে খাটের উপর লেপচাপায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে জ্যোতিকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে তার মাকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার লুটের নাটক সাজায় তারা। কিন্তু পুলিশের তদন্তে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়।

Manual5 Ad Code

পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, মেয়ে জ্যোতিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হত্যার দিনই থানায় ডেকে নেয় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে জ্যোতি। বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার বিকেলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। হত্যাকাণ্ডের অধিকতর তথ্য আদায়ের লক্ষ্যে আদালতের বিচারকের কাছে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। বিচারক ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Manual2 Ad Code

শুক্রবার রাতে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, জ্যোতি আক্তার তার মায়ের হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতেই তার কথিত প্রেমিক কেরানীগঞ্জের আরাকুল গ্রামের বাসিন্দা নাঈম ইসলাম এবং তার সহযোগী একই গ্রামের রাকিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরও দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

শুক্রবার বিকেলে নিহতের স্বামী জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মেয়ে জ্যোতি আক্তার, তার কথিত প্রেমিক নাঈম ইসলাম এবং তার সহযোগী রাকিব ও অন্য দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তের স্বার্থে ওই দুই সহযোগীর নাম পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শামীম আল মামুন জানান, প্রেমের সূত্র ধরে জ্যোতির সঙ্গে ভোলা জেলার নির্মাণশ্রমিক নাঈমের দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। তবে তার সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না মা। তাই তিন মাস আগে জ্যোতি ও নাঈম পরিকল্পনা করে তাকে হত্যা করার।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতেই নাঈম ও তার সহযোগীরা জ্যোতির ঘরে প্রবেশ করে। রাতে কয়েক দফা চেষ্টা করেও জ্যোতির মাকে হত্যার সুযোগ পায়নি তারা। পরে সকাল ৭টার দিকে জ্যোতির বাবা ফজরের নামাজ শেষে বাইরে বের হলে তারা মাহমুদা বেগমকে হত্যা করে।

নিহতের স্বামী জহিরুল ইসলাম জানান, বছর তিনেক আগে মেয়ে জ্যোতি আক্তারকে বিয়ে দেন ঢাকার ধামরাই এলাকায়। কিন্তু মেয়ের নানা নৈতিক স্খলনের কারণে সেই স্বামীর সঙ্গে ৩ মাস আগে বিচ্ছেদ হয়। ৩ মাস ধরে মেয়ে তাদের সঙ্গেই থাকেন।

Manual4 Ad Code

আবেগ তাড়িত হয়ে জহিরুল ইসলাম বলেন, ২০১০ সালে তিনি তার স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে হজ পালন করেছেন। হত্যাকাণ্ডের আগের রাতেও তার স্ত্রী তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু মেয়ের এই নৈতিক স্খলনের কারণে তিনি তার আত্মীয়স্বজনের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন।

Manual6 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..