প্রধান শিক্ষিকার মামলায় ৪ শিক্ষক-কর্মচারী কারাগারে

প্রকাশিত: ৭:০০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৮, ২০২০

প্রধান শিক্ষিকার মামলায় ৪ শিক্ষক-কর্মচারী কারাগারে

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ঝিনাইদহের শৈলকূপায় প্রধান শিক্ষিকার দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় চার শিক্ষক-কর্মচারীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। প্রধান শিক্ষিকার মিথ্যা সাজানো মামলার প্রতিবাদে শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলনে নেমেছেন। ঘটনাটি শৈলকূপা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের। কয়েক মাস আগে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দিলারা ইয়াসমিন সাত শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে ঝিনাইদহ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন।

প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতি ও অনিয়মের ঘটনা আড়াল করতে এমন হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষকরা বলছেন, প্রধান শিক্ষিকাকে অপসরণ না করা পর্যন্ত তারা আর ক্লাসে ফিরে যাবেন না।

প্রধান শিক্ষিকা দিলারা ইয়াসমিনকে অপহরণ ও চাকুরিচ্যুতির দাবিতে মঙ্গলবার শিক্ষকরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন ও কর্মবিরতি পালন করছেন। শৈলকুপা শহরের উপজেলা শহীদ মিনার চত্ত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। এসময় তারা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড বহন করে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত রমজান মাসে প্রধান শিক্ষিকা দিলারা ইয়াসমিনকে তার অফিসে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন সহকারী প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান, সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম, ল্যাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট আবুল কালাম, চায়না আফরোজ, পিয়ন শহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষক-কর্মচারী। এ ঘটনায় তিনি ঝিনাইদহ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে আদালত তা আমলে নিয়ে আসামিদের হাজির হওয়ার সমন জারি করেন। আসামিদের মধ্যে সোমবার দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে পাঁচ শিক্ষক-কর্মচারী জামিন আবেদন করলে আদালত চায়না আফরোজকে জামিন দেন। সহকারী প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান, সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম, ল্যাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট আবুল কালাম, পিয়ন শহিদুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

শৈলকূপা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ছাড়াও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রতিবাদে যোগ দেন এবং তাদের দাবির সাথে একত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন। এসময় শৈলকুপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মনিরুজ্জামান সাচ্চু রাজপথে অব্যাহত আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

এ ঘটনায় শৈলকূপা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি রেজাউল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষকের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় ৪ শিক্ষক-কর্মচারীকে কারাগারে যেতে হয়েছে। প্রতিবাদে তারা প্রধান শিক্ষক অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষক-কর্মচারী ক্লাসে ফিরে যাবেন না।

স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তৈয়বুর রহমান খান বলেন, এটা একটি মিথ্যা ঘটনা ছিল যা স্কুল পরিচালনা পর্ষদ বসে মিমাংসা করে দিয়েছিল। প্রধান শিক্ষকও তা মেনে নিয়েছিল। অথচ গোপনে তিনি এ ধরনের কাজ করেছেন যা দুঃখজনক।

অভিভাবকরা জানান, দীর্ঘ ২ বছরের বেশি সময় ধরে স্কুলটিতে প্রায়ই এমন আন্দোলন-সংগ্রাম চলছে। এবার তা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে বিদ্যালয়টির সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার দেব বলেন, ঘটনাটি শুনেছিন। শিক্ষকদের মধ্যে সবসময় সদ্ভাব থাকবে। এমন অবস্থায় শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থান নেবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..