হসপিটাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নারীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ১:০৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২০

হসপিটাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নারীর মৃত্যু

Manual4 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :: চাঁদপুর শহরের নাভানা হসপিটালে দুই সন্তানের জননী তুহিন বেগম (৩০) ভুল চিকিৎসা ও রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি (খারাপ) হলেও সঠিক সময় মত চিকিৎসক না আসায় ব্যাথার যন্ত্রনায় কাতরাতে কাতরাতে অবশেষে মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিহত তুহিন বেগমের স্বামী মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, রোববার ভোর ৪টায় তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সাংবাদিক ও পুলিশকে জানানোর সুযোগ না দিয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিশোর কুমার সিংহ রায়সহ অন্যান্য স্টাফরা হসপিটালের চিকিৎসার বিল না রেখে এ্যামবুলেন্স ডেকে এনে মৃত রোগীকে জোর করে এ্যামবুলেন্সে উঠিয়ে হাসপাতাল থেকে বাহির করে দেয় এবং বাড়িতে লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এ ব্যাপারে তিনি মামলার প্রস্ততি নিচ্ছেন বলে জানান।

Manual7 Ad Code

নিহত রোগীর আত্মীয় স্বজনরা জানান, তুহিত বেগমের পেটে প্রচন্ড ব্যাথা হলে গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে গাইনী চিকিৎসক সামছুন্নাহার তানিয়াকে দেখায়। তার কথামত আলট্রাসনোগ্রাম করানোর পর তুহিন বেগমের পেটে টিউমার হয়েছে বলে তিনি জানান। সেমতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। তুহিন বেগমের স্বামী তার স্ত্রীকে নাভানা হসপিটালে ভর্তি করেন। গাইনী চিকিৎসক সামছুন্নাহার তানিয়া তুহিনকে আগামী সোমবার (২৭ জানুয়ারি) অপারেশনের সময় নির্ধারন করেন। হঠাৎ শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় কোনরকম পরীক্ষা নিরিক্ষা ছাড়া তুহিন বেগমকে অপারেশনের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান চিকিৎসক সামছুন্নাহার তানিয়া। সেখানে সামছুন্নাহার তানিয়া ও তার স্বামী ডা: মো: হাসানুর রহমান মিলে তুহিন বেগমকে অপারেশন করেন। রাত সাড়ে ৭টায় আধা ঘন্টা রাখার পর রুগী তুহিন বেগমকে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালের বেডে দিয়ে দেয়া হয়। রাত ২টায় রুগী তুহিন বেগমের জ্ঞান ফিরলে সে প্রচন্ড যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকে ও কাতরাতে থাকে। তখন রুগীর সাথে থাকা নাছিমা বেগম, হাওয়া বেগম ও বিউটি বেগম, সিস্টার সাহিদা বেগমকে বিয়টি জানালেও কোন চিকিৎসক না আসায় রুগি তুহিন বেগমের শারিরিক অবস্থা মারাত্বক অবনতি ও খারাপ হয়ে যায়।

Manual2 Ad Code

সিস্টার সাহিদা বেগম জানান, হঠাৎ রোগীর শরীরে খিচনী দেখা দেয়। এক পর্যায় সে প্রচন্ড যন্ত্রনায় ছটফট করে ও কাতরাতে কাতরাতে শনিবার ভোর পৌনে ৪টায় মারা যায়।

Manual6 Ad Code

নিহত তুহিন বেগমের স্বামী মিজানুর রহমান আরো জানান, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিশোর কুমার সিংহ রায়সহ অন্যান্য স্টাফরা নাভানা হসপিটালের চিকিৎসার টাকা না রেখে কোন অনুরোধ না শুনে তড়িগড়ি করে চালক সুমনের এ্যামবুলেন্স ডেকে এনে মৃত রুগীকে জোর করে এ্যামবুলেন্সে উঠিয়ে হাসপাতাল থেকে বাহির করে দেয়। এ্যামবুলেন্সে লাশটি রেখে বিভিন্ন দিকে যোগাযোগ করার চেস্টা করলে কিশোর কুমার আমাকে বিভিন্ন ভাবে ভয় ও চাপ দিয়ে লাশ তড়িগড়ি করে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

নিহত তুহিন বেগমের স্বামী মিজানুর রহমান বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে কেন ভুল চিকিৎসা দিয়ে মারলো তার জন্য প্রশাসনের নিকট এ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তি দাবি করছি। আমি চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে বিষয়টি জানিয়েছি। মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। মামলা করবো।

এ ব্যাপারে অপারেশন করা চিকিৎসক মো: হাসানুর রহমান বলেন, রাত ৮টায় রুগী তুহিনকে অজ্ঞান না করে অবশ করে পেট কেটে ওবারিয়াম সিস্ট (এটা হচ্ছে ভিতরে পানি উপরে পদ্মা ছিল) কেটে ফেলে দেওয়া হয়। পরে তার জ্ঞান ফিরলে আমি চলে যাই। রাতে তার অবস্থা খারাপ হলে ডিউটি ডাক্তার জীবন বিভিন্ন চিকিৎসা দিয়েও তাকে বাচাঁনো যায়নি। রোগীর প্রচন্ড ব্যাথায় (এমআই) হার্ডএটাক কয়েছে।

এ ব্যাপারে চিকিৎসক সামছুন্নাহার তানিয়া জানান, আমি অপারেশন করি নাই। আমি অপারেশনের সময় পাশে ছিলাম।

এ ব্যাপারে নাভানা হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিশোর কুমার সিংহ রায় মুঠো ফোনে জানান, এ ব্যাপারে তার কিছু বলা বা জানানোর নেই। আমি সরকারকে টেক্স দিয়ে ব্যবসা করি। এ বিষয়ে আমি জবাব দিবনা। রোগী চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছে, সেটা যে চিকিৎসক অপারেশন করেছে, সে সেটা জানে। মারা গেলে সে জবাব দিবে। আমি ডাক্তার না কিছু জানিনা। কিছু জানতে হলে রোগীর স্বামীকে নিয়ে আসেন।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..