সিলেট ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৪৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০১৯
ক্রাইম প্রতিবেদক : সিলেট ওসমানীনগরের গোয়ালা বাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনকালে আর্থিক দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট ও বিদ্যালয় তহবিলের টাকার হিসাবে রয়েছে বিরাট ফারাক। শিক্ষকদের মাসিক বেতনের সাথে ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন তিনি। শিক্ষার্থীদের প্রদানকৃত বেতনের রশিদ দেয়া হয়নি অদৃশ্য কারণে। স্কুল থেকে বিদায়ের আগের দিন তিনি গ্রেজুইটির খাত দেখিয়ে উন্নয়ন তহবিল থেকে দেড় লক্ষ টাকা তুলে নিলে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের কাছে ধরা পড়ে। এ বিষয়ে অভিভাবক ও এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ১১ নভেম্বর সিলেট সহকারী জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল লেইছের বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ায় চলতি বছরের ৩০সেপ্টেম্বর তিনি চাকুরি থেকে অবসর নিয়েছেন। তিনি দায়িত্বকালে আর্থিক দুর্নীতি ও নানা অনিয়মে বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিক্ষার্থীদের ফলাফলের কোনো প্রগ্রেস রিপোর্ট নেই। শিক্ষার্থীদের বেতন আদায়ের ক্যাশ রেজিষ্ট্রার মেইনটেইন করা হয়নি। তিনি সরকারি বরাদ্দের ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর তার বাড়িতে নিয়ে গেছেন। সেখান থেকে এগুলো চুরি হয়েছে বলে জানান। কিন্তু এবিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কোন সুষ্ঠ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রশ্নপত্র না নিয়ে বাজারি প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নিতেন, শ্রেণি কক্ষ ও আসবাবপত্রের সংকটসহ নানা সমস্যা থাকলেও সেদিকে কোন কর্ণপাত করেনি। দায়িত্ব হস্তান্তরের আগের দিন গ্রেজুইটির খাত দেখিয়ে নিয়ম বহিভূর্তভাবে বিদ্যালয় ফান্ডের প্রায় দেড় লক্ষ টাকা তুলে নেন। মিড ডে মিল অনুষ্ঠান দেখিয়ে পরিচালনা কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে রেজুলেশন করে কৌশলে টাকার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি এই টাকা উত্তোলন করেন, বিষয়টি প্রতারণার শামিল। এছাড়া তিনি শিক্ষকদের বেতনসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন করে নিতেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য আব্দুল কুদ্দুছ শেখ ও আব্দুল মুমিন, সদস্য শাহনূর রহমান শানুর, সাবেক সদস্য সাংবাদিক আলাউর রহমান রহমান আলা বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণে আমরা মর্মাহত হয়েছি। টাকা উত্তোলনের বিষয়টি আমরা জানতে পেরে ওই টাকা বিদ্যালয় ফান্ডে ফেরৎ দেয়ার জন্য তাকে প্রস্তাত করি। কিন্তু টাকা ফেরৎ না দিয়ে উল্টো নানা অজুহাত দেখান। কিন্তু স্কুলে ফান্ড থেকে উত্তোলনকৃত টাকা আজও ফিরত দেননি।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান মানিক এর মোবাইল ফোনে বারবার রিং দিলে ও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
অভিযুক্ত শিক্ষক বলেন, ‘যেহেতু এটি একটি যৌথ একাউন্ট তাই সভাপতির স্বাক্ষর নিয়েই আমি টাকা উত্তোলন করেছি। এই টাকা গ্রেজুইটি বাবৎ আমাকে দেয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে বির্তক ওঠলে আমি ৫০ হাজার টাকা ফেরৎ দেয়ার কথা বলেছি।’ কিন্তু ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে দিতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ওসমানীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার চক্রবর্তী লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘আমি এবিষয়টি জানতে পেরেছি এখন খোঁজ নিয়ে দেখবো।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd