সৌদি থেকে ৫৩ নারীর মরদেহ ফিরেছে, যা খুবই নগণ্য : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৭:৩৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০১৯

সৌদি থেকে ৫৩ নারীর মরদেহ ফিরেছে, যা খুবই নগণ্য : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Manual1 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সৌদি আরবে কর্মরত ২ লাখ ২০ হাজার নারীর মধ্যে ৫৩ জনের মরদেহ ফিরে এসেছে; যা খুবই নগণ্য বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর নিয়ে ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।

Manual3 Ad Code

সৌদি আরব থেকে নির্যাতিত হয়ে ফেরা নারীর সংখ্যা খুব বেশি নয় উল্লেখে করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাত্র ৮ হাজার নারী ফিরে এসেছেন যা খুবই নগন্য। নারীরা দূতাবাসের শেল্টারহোমে অভিযোগ না করে দেশে এসে অত্যাচারের কথা বলেন। যদি সংখ্যা দেখেন তাহলে খুবই ছোট একটা সংখ্যা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ছয় লাখ নারী কর্মী বিদেশে কাজ করেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজারের মতো সৌদি আরবে আছেন। অভিযোগগুলো বেশির ভাগই সৌদি আরব থেকেই আসে।

তিনি বলেন, সৌদি আরবেই কাজ করা ২ লাখ ৭০ হাজার নারীর মধ্য থেকে ফিরে এসেছেন আট হাজারের মতো। ৯৯ শতাংশ নারী ম্যানেজ করে নিয়েছেন; দেশে টাকাও পাঠাচ্ছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি থেকে ৫৩ জন নারীর মৃতদেহ এসেছে। এর কতজন আত্মহত্যা করেছেন তা আমরা জানি না। ব্র্যাকের একটা স্টাডিজে দেখেছে সর্বমোট ৫৩ জনের লাশ ফিরেছে।

ড. মোমেন বলেন, ‘বিদেশে নারীকর্মী নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। ওসব জায়গাতে শেল্টার তৈরি করেছি। নির্যাতিত হলে ওই শেল্টারে তাদের নিয়ে আসা হয়। এটা তাদের জন্য উন্মুক্ত। ইদানিং ২৪ ঘণ্টা হটলাইন তৈরি করেছি। যাতে তারা যেকোনো সমস্যার কথা জানাতে পারে।’

Manual6 Ad Code

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক নারী দেশে ফিরে বলেন, তার মনিব তাকে অত্যাচার করেছেন। তিনি যদি আমাদের শেল্টার হোমে ফিরে তথ্য দেন তাহলে আমরা মামলা করতে পারি। কিন্তু তারা ওখানে না বলে দেশে ফিরে এ ধরনের অভিযোগ করেন। তথ্য দিলে সৌদি সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু ভয় কিংবা অন্য কোনো কারণে আমাদের শেল্টার হোমে থাকার পরেও তারা সেখানে কিছু বলেন না।

এ বিষয়ে কী করব এখনোও আমরা জানি না। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এখন থেকে নারীকর্মী পাঠানোর আগে তার নিবন্ধন করাতে হবে বলে জানান তিনি। ড. মোমেন বলেন, ‘রিক্রুটিং এজিন্সরা নারীদের পাঠায় কিন্তু কোনো নিবন্ধন করে না। তারা জানায় না কারা বিদেশে যাচ্ছে এবং কোন বাড়িতে তাদের পাঠানো হচ্ছে। আমরা এ জন্য সব এজেন্সিকে বলেছি, যাকে পাঠাবে তার একটা নিবন্ধন হতে হবে। এর ফলে আমরা তাকে খুঁজে পাব।’

Manual3 Ad Code

তিনি বলেন, ‘বাসাবাড়িতে কাজ করা নারীরাই বেশি নির্যাতিত হন। বাসাবাড়িতে কাজ করতে নির্যাতনের আশঙ্কা বেশি।’

ড. মোমেন বলেন, ‘আমাদের প্রবাসী নারীদের সঙ্গে আলাপ করে জেনেছি সব নারী নির্যাতনের শিকার হন না। কিছু কিছু নারী নিজের কারণেও নির্যাতিত হন। তারা একটু অন্য রকমের।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের নারীরা ওখানে তাদের ভাষা বোঝে না, তাদের খাদ্যাভাসের সঙ্গে পরিচিত না। প্রথম যাওয়ার পরে তারা ভাষার সমস্যায় পড়েন। মালিক যা আদেশ করেন, তিনি তা বোঝেন না। রান্না করতে বললে তার রান্না সৌদিদের মতো হয় না। এ ধরনের বহুরকম গ্যাপ আছে। তবে পাঠানোর আগে নারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হলে এই পরিস্থিতির উন্নয়ন হতে পারে।’

নারীকর্মী বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বৈষম্য করতে চাই না। অনেকে আন্দোলন করছেন নারীকর্মী পাঠানো বন্ধের জন্য। এতে নারীদের সুযোগ কমে যাবে।’

‘সুতরাং কি করা হবে এটা খুব কঠিন প্রশ্ন। যারা দাবি করছেন নারী না পাঠানোর, তারা কি ওদের চাকরি জোগাড় করে দেবেন? দেশে কি ভাল চাকরি হবে তাদের? আমি জানি না। এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা করা দরকার,’- বলেন ড. মোমেন।

Manual7 Ad Code

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি সুমি নামে যে নারীকর্মীর দেশে ফেরার আকুতি জানানো ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, সেটি দেখে আমরা সংশ্লিষ্ট কনসাল জেনারেলের সঙ্গে কথা বলি তাকে উদ্ধারের জন্য। কিন্তু সমস্যা দেখা যায়, ওই মেয়েটি জানাননি তিনি কোন শহরে থাকেন। শেষ পর্যন্ত তার লোকেশন পাওয়া যায়। কোনো শহর নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক বাসাবাড়িতে তিনি কাজ করেন। তাকে ফেরত আনা হয়েছে।’

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2019
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

সর্বশেষ খবর

………………………..