ছাতকে স্বামীর পরকীয়া ও যৌতুকের বলি তিন সন্তানের জননী পারভীন

প্রকাশিত: ৫:৫০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১, ২০১৯

ছাতকে স্বামীর পরকীয়া ও যৌতুকের বলি তিন সন্তানের জননী পারভীন

Manual3 Ad Code

ছাতক প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের ছাতকে পরকীয়ায় আসক্ত প্রবাসী যৌতুক লোভী স্বামী কতৃক ৩ সন্তানের জননী তালাক প্রাপ্ত স্ত্রীর উপর হামলা ও মামলার পর মামলা দিয়ে হয়রানীর ঘটনায় জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করার পর আবারো তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উপজেলার ছৈলা-আফজালাবাদ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের মৃত. আব্দুল আজিজের মেয়ে পারভীন বেগম গত সোমবার (২৮ অক্টোবর) ছাতক থানায় জিডি করেন। যার নং ১৩২৭। একই উপজেলার পিরপুর গ্রামের মৃত তছবির আলীর ছেলে আক্তার হোসেনকে প্রধান আসামীসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

Manual6 Ad Code

জিডি সুত্রে জানা যায়, গত ২৫ অক্টোবর বিকেল ৪ টার পর আক্তার হোসেন বাহরাইন থেকে পারভীন বেগমের মুঠো ফোনে কল দিয়ে হুমকি প্রদান করে বলেন, মামলা প্রত্যাহার না করিলে তার লোকজন দিয়ে পারভীন বেগমকে মারপিট করে খুন জখম করিবে।

এর আগে ওই নারী গত ১৭ অক্টোবর আক্তার হোসেনকে প্রধানসহ ১০ জনকে আসামী করে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, পারভীন বেগম গত ০৯/১২/২০০৬ ইং তারিখে ২,০০,০০০/(দুই লক্ষ) টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে ইসলামী শরীহা বিধান মোতাবেক রেজিষ্টারী কাবিন নামা মুলে প্রবাসী আক্তার হোসেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ১২ বছরের দাম্পত্য জীবনে, স্মৃতি (১২), মুন্না (১০), মাহফুজ হোসেন মুহিত (৬) নামের তিনটি সন্তানও রয়েছে। তার (সাবেক) স্বামী আক্তার হোসেন প্রবাসে থাকা অবস্থায় ইউরোপের দেশে যাবেন মর্মে তার কাছে ৩ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন। টাকা না নিলে তাকে তালাক দিবেন বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। তার তিন সন্তানের দিকে থাকিয়ে গ্রামীন ব্যাংক থেকে প্রথমে ১ লক্ষ টাকা, পরে ৮০ হাজার টাকা, ৩০ হাজার টাকা, ৪০ হাজার টাকাসহ মোট ২৫০০০০/০০(দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা তুলে দেন পারভীন। কিন্ত ব্যাংকের কিস্তিগুলো এখনো তিনি পরিশোধ করিতে পারেননি।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রায় দুই বছর আগে পারভীন জানতে পারেন জগন্নাতপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের ঘি-পুরা গ্রামের আরজ আলীর মেয়ে শিমলা বেগমের সাথে তার (সাবেক) স্বামী প্রবাসী আক্তার হোসেন পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি এতে বাধা দিলে শিমলা বেগমকে বিয়ে করবেন এবং তাকে তালাক দিবেন বলে হুমকি দেন আক্তার হোসেন।

এর পর থেকে স্ত্রী সন্তানদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন আক্তার হোসেন। শেষে তিনি নিরুপায় হয়ে গত ০৩/১০/২০১৮ ইং তারিখে সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালত ছাতক, সুনামগঞ্জ মোকদ্দমা নম্বর (৩৮/২০১৮) দায়ের করেন।

Manual1 Ad Code

এর পর আক্তার হোসেন দেশে ফিরে তার কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন এবং মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেন। যৌতুকের টাকা না দিলে আক্তার হোসেন পালভীন বেগমকে সংসারে ফিরে নিবেননা ও ২য় বিয়ে করবেন বলে হুমকি প্রদান করেন বলে অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়।

বিশাল অংকের টাকা দেয়ার কোন সামর্থ পারভীনের না থাকায় অসহায় হয়ে আবারো ০২/০১/২০১৯ ইং তারিখে আমল গ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ছাতক, সুনামগঞ্জ মোকদ্দমা নং (১/২০১৯) দায়ের করেন। কিন্ত মামলা দায়ের করার পর আক্তার হোসেন আবারো প্রবাসে ফিরে যান।

এর কিছুদিন পর বিভিন্ন মাধ্যমে পারভীন জানতে পারেন গত ১৭/১২/২০১৮ ইং তারিখে সুনামগঞ্জ নোটারি পাবলিকে তার অজান্তে তালাক সংক্রান্ত হলফনামা সম্পাদন করে একই তারিখে সুনামগঞ্জ নোটারি পাবলিকে শিমলা বেগমের সাথে বিবাহের হলফ নামা সম্পাদন করেন আক্তার হোসেন। হলফনামা সংক্রান্ত কাগজ পত্র সংগ্রহ করে তার শশুড় বাড়ীর লোকজনকে দেখাতে গিয়ে তিনি প্রশ্ন করেন, আপনারা বললেন কোন বিয়ে সাদি করেন নাই বা আমাকে তালাক দেননি। তাহলে এই কাগজপত্রগুলো কি? এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিমলা বেগম, মাালেছা বিবি, নূর হোসেন গং তাকে মারপিট করে এবং মামলা তুলে নেযার হুমকি দিয়ে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনায়ও তিনি গত ২৯/০৭/২০১৯ ইং তারিখে ছাতক থানায় নন জি আই আর প্রসিকিউশন মামলা নং ২০৭/১৯ দায়ের করেন।

কিন্ত গত ১৩/১০/২০১৯  তারিখে মাালেছা বিবি (শাশুড়ী) কতৃক তার বিরুদ্ধে দায়েরী মামলায় সুনামগঞ্জ কোর্টে হাজিরা দিতে গেলে শিমলা বেগম গং অতর্কিত ভাবে তার উপর হামলা ও বেধড়ক মারপিট করে এবং মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেয় তারা। মামলা প্রত্যাহার না করলে তাকে সুনামগঞ্জ থেকে ফিরতে দেবেনা বলে হুমকি দেয়া হয়। এ অবস্থায় মামলা পরিচালনা, ব্যাংক লোনের কিস্তি পরিশোধ ও তিন সন্তানের লেখা পড়াসহ বরণপোষন নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন তিনি। অপরদিকে বিবাদীগণের অব্যাহত হুমকিতে তিনি ও তার সন্তানদের জীবন প্রায় বিপন্ন হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

Manual8 Ad Code

এ বিষয়ে এডভোকেট হানিফ সোলেমান বলেন, আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে পারভীন বেগমের দায়েরী মোকদ্দমা নং সি আর ১/২০১৯ যৌতুক মামলায় ওয়ারেন্ট হয়েছে। তার পর মাল ক্রোকের আদেশ হওয়ার পর পত্রিকা বিজ্ঞপ্তির জন্য কোর্টের নির্দেশ আছে। পারভীন বেগম সরকারী খরছে পত্রিকা বিজ্ঞপ্তির প্রকাশের জন্য আবেদন করেছেন।

Manual7 Ad Code

এ ব্যাপারে  ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তফা কামাল জিডি এন্ট্রির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, অভিযোগ ফ্রন্ট টেবিলে রিসিব করা হয়। সিরিয়ালমত আমার হাতে আসে। না দেখে কিছু বলা যাবেনা।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2019
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

সর্বশেষ খবর

………………………..