সিলেট ৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৭ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:০১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০১৯
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের দুর্নীতিবাজ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে অভিযোগপত্র প্রদান করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কাছে গণস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগপত্রটি ক্ষুব্ধ জনতার পক্ষে তুলে দেন ‘হাসপাতালের দুর্নীতি দমন ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ কমিটি’র নেতৃবৃন্দ।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে একটি দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট ইচ্ছেমতো হাসপাতাল পরিচালনায় অংশ নিয়ে লুটপাটের অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা করেছে। এই চক্র হাসপাতালের রোগীদের খাদ্য, ওষুধ, স্টেশনারিসহ নানা উপকরণ নয়ছয় করছে। সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডার আহ্বান না করেই পূর্বের ঠিকাদারদের সঙ্গে আতাত করে পণ্য সরবরাহ করছে। সম্প্রতি আউটসোর্সিংয়ে লোক নিয়োগ দিয়েও সিন্ডিকেট বিশাল দুর্নীতি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। নীতিমালা অনুযায়ী আউটসোর্সিংয়ে লোক নিয়োগ রিনিউ করার নিয়ম না থাকলেও পূর্বের কোম্পানিকে অনৈতিকভাবে কাজ পাইয়ে দিতে তৎপর রয়েছে সিন্ডিকেট।
লিখিত অভিযোগে আরো জানানো হয়, দীর্ঘদিন ধরে এই সিন্ডিকেট হাসপাতালের টেকনোলজি বিভাগের বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম বন্ধ রেখে রোগীদের বাইরে পরীক্ষা করাতে বাধ্য করছে। সম্প্রতি ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন হাসপাতালের প্রায় ২৫ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ কেনার নামে হাসপাতালের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট বিরাট দুর্নীতি করে সরকারের বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ওই চক্র প্রতি বছর হাসপাতাল সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য বরাদ্দের ১৫-১৮ লক্ষ টাকা কাজ না করিয়েই লোপাট করছে।
হাসপাতালে দুর্নীতি দমন ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ কমিটির লিখিত অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ওই চক্রের সদস্যরা এই হাসপাতালে থেকে দুর্নীতির সা¤্রাজ্য বিস্তার করে কোটি কোটি টাকা লোপাট করছে। দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের সদস্যরা দুর্নীতির মাধ্যমে ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফার্মেসি, রেস্টুরেন্টসহ কোটি টাকার আলিশান বাড়ির মালিক বনে গেছে। এছাড়া এই চক্রের সদস্যরা লালারচরে জমি ক্রয়, হাছনবাহারে দুটি বিশাল মৎস্য খামার, সদর হাসপাতালের সামনে তিন তলা মার্কেট, নতুন হাছন নগরে লালচাঁন মিয়া এবং আব্দুল মালেকের বাড়ির কাছে ১ কোটি টাকার কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, সুলতানপুরে এজাদ আলী মোড়লের বাড়ির পাশে তিনতলা বিশিষ্ট ২ কোটি টাকার আলিশান বাড়ি, অ্যাডভোকেট হুমায়ূন মঞ্জুরের বাসার পেছনে অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের জমি ক্রয়সহ দুর্নীতির মাধ্যমে বিত্তবৈভবের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
অভিযোগে জানানো হয়, গত ১৫ বছর ধরে সদর হাসপাতালের বিভিন্ন টেন্ডারের কাজ ওই চক্রের সদস্যরা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেরাই করছে। তাছাড়া মেডিকেল সার্টিফিকেট, পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট, ভিকটিম সার্টিফিকেট, নার্সদের বদলি, ফরওয়ার্ডিং, জেনারেটরের তেলের বরাদ্দসহ হাসপাতাল কেন্দ্রিক নানা ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ওই চক্রটি।
সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ওই চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। হাসপাতালের দুর্নীতি দমন ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক এনামুজ্জামান চৌধুরী বলেন, জেলার সাধারণ মানুষ হাসপাতালের দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। তারা মানুষের অধিকার লুট করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। শূন্য থেকে এই সিন্ডিকেটের সবাই এখন কোটিপতি। এদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd