সিলেট ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৪৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০১৯
জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই অফিস সহায়ক বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও যারা ছড়িয়েছে তাদের বিচার চেয়েছেন তিনি।
সোমবার সকালে জামালপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ছুটির আবেদনপত্র নিয়ে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ওই অফিস সহায়ক।
তিনি বলেন, এসব ভিডিও কীভাবে হলো আমি কিছুই জানি না। আমি বাঁচতে চাই না, আমার সন্তানের জন্য আমাকে আপনারা বাঁচান। এখানে ডিসি স্যারের কোনো দোষ নেই। যারা এসব ভিডিও ছড়িয়েছে আমি তাদের বিচার চাই।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার চান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বিচার চাই, তবে ডিসি স্যারের কোনো দোষ নেই।’ এসব কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন ওই নারী।
এরপর অফিসে একটি ছুটির আবেদনপত্র দিয়ে চলে যান তিনি। এর আগে রোববার অফিসে অনুপস্থিত থাকার পর সোমবার অফিসে এসে জ্ঞান হারান ওই নারী। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার সকালে জামালপুর জেলা প্রশাসকের কর্মস্থলে আসার পর জ্ঞান হারান সমালোচিত ওই নারী। এ সময় তার হাতে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে লেখা ছুটির আবেদনপত্র পাওয়া যায়। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ত্যাগ করেন তিনি।
ছুটির আবেদনপত্রে ওই নারী উল্লেখ করেন, ‘অফিস চলাকালীন অসুস্থবোধ করায় আগামীকাল ২৭ আগস্ট থেকে তিনদিনের ছুটির প্রয়োজন আমার।’
অফিস সহায়কের ছুটির আবেদনপত্র পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজীব কুমার সরকার বলেন, ওই অফিস সহকারী ছুটির আবেদন করেন। তার আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন জেলা প্রশাসক কর্মস্থলে যোগদান করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
সম্প্রতি জামালপুরের ডিসির একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে তার অফিসের এক নারীকর্মীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে খন্দকার সোহেল আহমেদ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর তা কিছু সময়ের মধ্যে ভাইরাল হয়। ওই ঘটনার পর থেকে ডিসি ও নারীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে হঠাৎ করে সোমবার সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে জেলা প্রশাসকের অফিসে হাজির হন ওই নারী। সকালে বোরকা এবং হিজাব পরিবর্তন করে অফিসে আসেন তিনি।
তাদের ওই ভিডিও নিয়ে জামালপুরসহ সারাদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় রোববার জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরকে ওএসডি করা হয়। একই সঙ্গে ডিসি আহমেদ কবীরকে সরিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) মোহাম্মদ এনামুল হককে জামালপুরের নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
ডিসি আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই নারীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই। এরই মধ্যে হঠাৎ করে রোববার উধাও হন ওই নারী। সেই সঙ্গে রোববার অফিসও করেননি তিনি।
এর আগের দিন শনিবার রাতের আঁধারে জামালপুর ছেড়ে অন্যত্র চলে যান ওএসডি হওয়া জামালপুরের বিতর্কিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীর।
এ বিষয়ে সচিবালয়ে নিজ দফতরে রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সদ্য ওএসডি হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে উদাহরণ সৃষ্টির মতো শাস্তি হবে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের বিষয়ে সোমবার সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওএসডি হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীর চাকরিচ্যুতও হতে পারেন।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd