সিলেট ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:৫৬ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০১৮
রাসেদ আহমদ :: সিলেট-তামাবিল-জাফলং সড়কের মামার দোকান নামে যেখানে পরিচিত মামা দোকান সেখানে বিভিন্ন স্থানে হাটু পানি জমে আছে আবার কোন স্থানে গাড়ির সাতার জাফলংয়ের নতুন আবিস্কার পানির উপর দিয়ে গাড়ি চলাল করে। বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি এসে রাস্তাটি একেবারে চলার অনোপযোগি হয়ে গেছে। খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন ও এলাকার লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
জাফলংয়ের রাস্তা সর্ম্পকে বেড়াতে আসা এক পর্যটক সাইফুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে চলাচলে আমাদেরকে ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। রাস্তা যেতে সময় লাগছে বেশী। ভাড়াও দিতে হচ্ছে বেশি টাকা। আর যাত্রাপথে রিকসা-ভ্যানের যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে ঘটছে দুর্ঘটনা। মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে খুব দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করা প্রয়োজন।
জানাযায় প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় থেকে সিলেট তামাবিল সড়কের এই রাস্তাটির এই বেহাল দশা হলেও রাস্তাটি মেরামতে নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। রাস্তার বেহাল দশার কারণে আরো বেশি বিপাকে রয়েছেন পর্যটন ও ব্যবসায়ীরা। এতে করে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এ ছাড়া যানবাহন চলাচল করার সময় সমস্যায় পরতে হয় চালকদের। রুস্তম আলী দীর্ঘদিন ধরে পোর্টে কাজ করেন। তিনি সিলেট-তামাবিল-জাফলং সড়ক সম্পর্কে বলেন, ‘রাস্তাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কয়েকদিন পর পর এখানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা গাড়িতে করে আসেন। তখন কোনোমতে ভাঙা ইট-বালু দিয়া সড়কের দায় সারানো হয়। আবার ওখানের পাতর দিয়া সারা দেশ চলে, আর আমরার ওখানের এই অবস্থা। মনে খয় ওউ এলাকায় আমরা মানুষ তাকিনা। মানুষ মনে খরলে তো সরকারে রাস্তা ঠিক কইরা দিলুনে।’
২৭ মে রবিবার সিলেট-তামাবিল-জাফলং সড়কটি সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় সড়কের অবস্থা ভয়াবহ। তামাবিল ও জাফলং পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা অবর্ণনীয়। আর ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে গাড়িগুলো। এসব কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা চরম ক্ষুব্দ।
স্থানীয়রা জানান- গত রমজান মাসে মাটি ফেলে রাস্তাটির ঢালাইয়ের কাজ করেছে। ঢালাই দিয়ে চলে যাওয়ার পরপরই গাড়ি যাতায়াতে আবার আগের অবস্থায় ফিরে সেটি। কাজের কাজ কিছুই হলো না। যে ভোগান্তি, তা রয়েই গেল। এরপর আর কোনো খবর নেই। ক’দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে, তাই প্যাক-কাঁদার সৃষ্টি। পায়ে রাস্তা পারাপারের উপায় নেই। পরনের কাপড় নোংরা হয়ে যায়। বেশি বেগে গাড়ি চলাচল করলে গর্তে থাকা ময়লা পানি চাকার চাপে চারিদিকে ছিটকে পড়ে। অনেক সময় গর্তে পড়ে গাড়িও আটকে থাকে দীর্ঘসময়। সৃষ্টি হয় যানজটের। আর শুকনো মৌসুমে এই এলাকার আশপাশে থাকাই দায়। ধুলোবালিতে অন্ধকার হয়ে যায় পুরো এলাকাটি। চোখে-মুখে এসে ঢুকে যায় তা। এর ফলে সর্দি-কাশি, এ্যাজমা- হাঁপানিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। রাস্তার পিচ ঢালাই উঠে গেছে। বের হয়ে আছে ইট-পাথরের খোয়া। সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। বৃষ্টির ফলে গর্তগুলোতে জমে আছে পানি। দেখে মনে হয় ছোট-ছোট পুকুর। এরইমধ্যে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে ভারত থেকে আসা জাফলং-তামাবিল-সিলেট হয়ে ঢাকামুখী যানবাহনগুলো।
স্থানীয় বাসিন্দা জানান, রাস্তার অবস্থার কারণে আগের চেয়ে পর্যটক আসা অনেক কমে গেছে। আমাদের রুটি-রুজিও কমে যাচ্ছে। পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। তার দাবি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিদের বারবার বলে আসলেও তারা বিষয়টি নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তার দাবি সরকারের উচ্চ মহল দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন সড়কটি মেরামতের।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd