ফ্রিজের পেছনে গোপন চেম্বারে রাখা হতো ইয়াবা! (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১০:২৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩, ২০১৭

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : গোপন সূত্রের খবর ছিল, একটি বাসায় ইয়াবা মজুদ করে বিক্রি করছে এক মাদক ব্যবসায়ী। তথ্য অনুযায়ী, ওই বাসায় অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) কর্মকতারা।

আটক করা হয় তানভীর আহমেদ চৌধুরী ওরফে জনি (৩০) নামে এক যুবককে। তবে ঘরে তল্লাশি করেও মিলেনি কোনো ইয়াবা। অভিযানকারী দলের হতাশ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ- যতই তথ্য থাকুক না কেন, আলামত জব্দ না করতে পারলে মাদকের মামলা করা যাবে না। পার পেয়ে যাবে এক ইয়াবার ডিলার! সূত্রের ওপর ভরসা রেখে আশা ছাড়েনি ডিএনসির দল। ঘরের মালপত্র খুলে খুলে তল্লাশি শুরু করে তারা। শেষে ফ্রিজের পেছনের অংশ খুলে পায় একটি ফাঁকা জায়গা। সেখান থেকেই বের করে আনে দুই হাজার পিস ইয়াবা।

গত ২৯ অক্টোবর রাজধানীর হাজারীবাগ থানার মিতালী রোডের ১৮ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ডিএনসির কর্মকর্তারা বলছেন, নির্ভরযোগ্য তথ্য ও ইয়াবা থাকার আলামত পেয়ে অধিক তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবা ডিলার জনিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।

ইয়াবাসহ মাদক খুঁজতে খুঁতে ডিএনসির সদস্যরা দক্ষ হয়ে উঠছেন। এই অভিযানে গোপন কিছু আলামতের কারণে তারা নিশ্চিত ছিলেন যে জনির বাসায় ইয়াবা আছে।

তদন্তকারীরা বলছেন, তার স্ত্রী শিশুসন্তান নিয়ে নেদারল্যান্ডে থাকে। স্ত্রী লেখাপড়ার করছে। পাশাপাশি তারা সে দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার চেষ্টাও করছে। ইয়াবার ব্যবসা করে এই টাকা সরবরাহ করছিল জনি।

ডিএনসির ঢাকা মেট্টো-উপ অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (এডি) খোরশিদ আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ফ্রিজের ভেতরে যে কায়দায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল তা পাওয়াটা কঠিনই ছিল। আমাদের সদস্যরা আশা ছাড়েনি। এর ফলে একজন বড় মাপের ইয়াবা ডিলারকে আমরা ধরতে পেরেছি। ’

ডিএনসির পরিদর্শক রায়হান আহমেদ খান বলেন, তাদের কাছে খবর ছিল জনির কাছে ইয়াবা আছে। কিন্তু আটক করার পর জনি তা অস্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায় সে ডিএনসির সদস্যদের ঘুষ নিয়ে চলে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। তখন সন্দেহ বাড়ে। এক পর্যায়ে ঘরের মধ্যে ইয়াবা থাকার কিছু কৌশলগত আলামত পায় অভিযানকারীরা। এরপর বড় মালপত্র খুলে তল্লাশি শুরু করে তারা। এক পর্যায় ফ্রিজের দিকে তাদের সন্দেহের তীর বিদ্ধ হয়। তখন পেছনের দিক থেকে ফ্রিজটি খুললে ভেতরে একটি চেম্বার বা গোপন জায়গা পায় অভিযানকারীরা। ওই স্থান থেকে ১০টি ইয়াবার প্যাকেট বের করে তারা। এসব প্যাকেটে ২০০টি করে মোট দুই হাজার ইয়াবা ছিল।

এখন সহজেই মাদক ব্যবসায়ীরা আমাদের চোখে ধুলো দিতে পারে না। কারণ আমাদের কিছু অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে। যোগ করেন পরিদর্শক রায়হান আহমেদ খান।

ডিএনসির কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনায় গত ২৯ অক্টোবরই হাজারীবাগ থানায় একটির মামলা করে ডিএনসি। এ মামলায় আসামিকে জনিকে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। গত ১ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

তদন্তকারীরা বলেন, জনি ঢাকা কলেজ থেকে অনার্স পাস করেছে। এরপর একটি শপিং মলে চামড়ার পণ্যের শো-রুমের ব্যবস্থাপক ছিলো। দুই-তিন বছরে ধরে সে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। এ সময়ের মধ্যে সে তার স্ত্রীকে নেদারল্যান্ডে পাঠিয়ে দেয়। জনিও সেখানে আসা-যাওয়া করে। তার স্ত্রী স্টুডেন্ট ভিসায় সে দেশে গেছে। তার সঙ্গে শিশুসন্তানও আছে। জনি ও তার স্ত্রী নেদারল্যান্ডে নাগরিকত্বের জন্য আবেদনও করেছে। নেদারল্যান্ডে সেকেন্ড হোম গড়ার জন্য যে টাকার প্রয়োজন তা ইয়াবার কারবার করেই জোগাড় করছিল জনি। ডিএনসির কর্মকর্তাদের ধারণা, জনির একটি বড় সিন্ডিকেটের সদস্য। তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টাও চলছে।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2017
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..