সিসিক নির্বাচনে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন : রাত পোহালেই ভোট

প্রকাশিত: ৮:০৩ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০২৩

সিসিক নির্বাচনে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন : রাত পোহালেই ভোট

Manual4 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটে সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের সরঞ্জামাদি বিতরণ করছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার (২০ জুন) বেলা ১১টা থেকে নগরের মেন্দিবাগস্থ আবুল মাল আব্দুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদেরের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসাররা ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনের আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামাদি গ্রহণ করে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তারা ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছেন। বেলা ২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নির্বাচনি সরঞ্জাম বিতরণ চলছে।

Manual7 Ad Code

ভোটের সরঞ্জামাদি বিতরণকালে সিসিক নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদির বলেন, ‘ভোট শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আনসার এবং আর্মড পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।

’তিনি জানান, প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুরো নির্বাচনী এলাকায় ১৪জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।আগামীকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ডসহ ৪২টি ওয়ার্ডে ১৯০টি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। ভোট গ্রহণ কার্যক্রম ঢাকা থেকে সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার (২০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় সিলেট মহানগর পুলিশ লাইন্সে এক সংবাদ সম্মেলন করে মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াস শরিফ বলেছেন, নির্বাচনে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন করতে নগরে কাজ করছে প্রায় ২ হাজার ৬০০ পুলিশ সদস্য। মাঠে রয়েছেন ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৪২টি ওয়ার্ডে ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনে কোনো বিশৃঙ্খলা হলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা করবেন।

Manual6 Ad Code

এসএমপি কমিশনার বলেন, নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১জন পুলিশ পরিদর্শক, একজন উপ পুলিশ পরিদর্শক ১ জন ও ৫ জন পুলিশ সদস্য এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডে একজন পুলিশ পরিদর্শক, একজন উপ পুলিশ পরিদর্শক ও ৪ জন পুলিশ সদস্য এবং ৭ জন নারী ও ৭ জন পুরুষসহ মোট ১৪ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি জানান, নির্বাচন উপলক্ষে প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে পুলিশের ৪২টি মোবাইল টিম, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে ১৪টি স্ট্রাইকিং টিম এবং প্রতি থানায় একটি করে ৬টি করে ৬টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং টিম থাকবে। পাশাপাশি থাকবে ২টি ওয়ার্ডে ১টি করে র‍্যাবের মোট ২২টি ও ৫টি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ১০ প্লাটুন বিজিবির টহল। এ সময় পুলিশ কমিশনার নির্বিঘ্নে ভোটদানের জন্য ভোটারদের প্রতি আহবান জানান।

Manual6 Ad Code

আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠেয় সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ডসহ ৪২টি ওয়ার্ডে ১৯০টি কেন্দ্রে মোট ১ হাজার ৩৬৪টি ভোটকক্ষের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে একাধিক সিসি ক্যামেরা থাকবে।

সিলেট সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে ৮জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে চারজন দলীয় প্রার্থী। বাকি চারজন স্বতন্ত্র। দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে যথারীতি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নৌকা প্রতীক, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম বাবুল লাঙ্গল, ইলসামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসান হাত পাখা এবং জাকের পার্টির প্রার্থী মো. জহিরুল আলম গোলাপ ফুল প্রতীক পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু ঘোড়া, মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা হরিণ প্রতীক, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন ক্রিকেট ব্যাট এবং মো. শাহজাহান মিয়া বাস গাড়ি প্রতীক। এরমধ্যে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন সুষ্ঠু হবেনা জানিয়ে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ইলসামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসান।

Manual8 Ad Code

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্র অনুযায়ী, মেয়র পদে আটজন, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭২ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মহানগরে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া ভোটর রয়েছেন ৬ জন।

২০১৮ সালে সিটি নির্বাচনে সিলেট নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪ এবং নারী ১ লাখ ৫০ হাজার ২৮৮ জন। কেন্দ্র ছিল ১৩৪টি, ভোট কক্ষ ছিল ৯২৬টি এবং অস্থায়ী কক্ষ ছিল ৩৪টি। এবার ৪২টি ওয়ার্ডে কেন্দ্র বেড়ে হয়েছে ১৯০টি এবং ভোট কক্ষ ১ হাজার ৩৬৭টি।

২০০২ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সিলেটের সকল ওয়ার্ডে এবারই প্রথম হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

June 2023
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930

সর্বশেষ খবর

………………………..