গোয়াইনঘাট রুস্তমপুর কলেজে স্থায়ী নিয়োগ থাকার পরও খন্ডকালীন শিক্ষক চেয়ে বিজ্ঞপ্তি

প্রকাশিত: ৪:১৯ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২৩

গোয়াইনঘাট রুস্তমপুর কলেজে স্থায়ী নিয়োগ থাকার পরও খন্ডকালীন শিক্ষক চেয়ে বিজ্ঞপ্তি

Manual1 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়াইনঘাট :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ডিগ্রি কলেজে বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক থাকার পরও খন্ডকালীন শিক্ষক চেয়ে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি এড. জামাল উদ্দিন নতুন করে আবারও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকবৃন্দ তাদের চাকরি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

শিক্ষকরা হলেন- বাংলা বিষয়ের প্রভাষক শাহ আলম খাঁন, হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক মোমেনা খন্দকার, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন বিষয়ের প্রভাষক জান্নাতুল ফেরদৌস রুমা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের প্রভাষক মো. লিয়াকত আলী, যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের প্রভাষক মো. জসিম উদ্দিন, মনোবিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক সামছুজ্জামান ও সহকারী লাইব্রেরীয়ান মো. নজরুল ইসলাম।

শিক্ষকদের অভিযোগ, তারা বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত নিয়মিত পাঠদান ও কলেজের গভর্নিং বডির শিক্ষক প্রতিনিধিসহ সকল দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু কলেজটি প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে এম.পি.ও ভুক্ত হওয়ার পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারী, সিলেট জেলা পর্যায়ে বাছাই কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে সকল শিক্ষক-কর্মচারীর উপস্থিতিতে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেন। কিন্তু গভর্নিং বডির সভাপতি এড. জামাল উদ্দিন হঠাৎ জেলা কমিটি বরাবরে তাদের এম.পি.ও প্রত্যয়ন না দেওয়ার জন্য লিখিত অনুরোধ করেন। এমন খবর জানার পর শিক্ষকবৃন্দ সভাপতির সাথে সাক্ষাত করলে তিনি উনাদের সাথে অমানবিক আচরণ করে প্রতি শিক্ষক থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করেন এবং না দিতে পারলে এম.পি.ও প্রত্যয়ন দেওয়া হবে না বলে রুক্ষ ভাষায় জানান।

এ ব্যাপারে অভিযোগকারী শিক্ষকবৃন্দ গত ১৩ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর একটি পত্র দাখিল করেছেন তারা। উক্ত পত্রে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামরুল আহমদের স্বাক্ষর সহ সুপারিশ রয়েছে।

Manual6 Ad Code

জানা গেছে, কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি এডঃ জামাল উদ্দিন ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামরুল আহমদের মতানৈক্যের কারণে এসব শিক্ষকবৃন্দ তাদের বৈধ কাগজপত্র থাকা স্বত্বেও এম.পি.ও প্রত্যয়ন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এবং চাকরি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন।

এছাড়াও গভর্নিং বডির সভাপতি জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। তিনি দীর্ঘ ১২বছর ধরে গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। অথচ নিয়মানুযায়ী সভাপতির মেয়াদ দুই বছর। সেখানে তিনি এত লম্বা সময় ধরে স্বপদে কিভাবে বহাল থাকেন সেটা নিয়েও সচেতন মহলে প্রশ্নের সঞ্চার হয়েছে। শুধু তাই নয় এড. জামাল উদ্দিন ঘুষ বাণিজ্যের পাশাপাশি সভাপতির ক্ষমতাবলে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে আপন ভাগ্নে বদর নামের এক ব্যক্তিকেও চাকুরী দিয়েছেন।

Manual8 Ad Code

এলাকার বাসিন্দারা বলেন, রুস্তমপুর কলেজের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে অদ্যাবদি বারবার বিধি বর্হিভূত ভাবে মোঃ জামাল উদ্দিন সভাপতির পদ বহাল রেখে কলেজে পেশি শক্তি ও একঘেয়েমি ভাবে কলেজ পরিচালনা করতেছেন। সরকারি বিধি মোতাবেক তিনি পরপর দুই বারের বেশি গভর্নিং বডির সভাপতি হতে পারেন না। এছাড়া উক্ত কমিটিতে ৩জন অভিভাবক সদস্য আছেন যারা প্রকৃত অভিভাবক নয়। আমরা চাই এই কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করে যাতে কলেজের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হয়। এ জন্য আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

Manual3 Ad Code

এ ব্যাপারে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি এড. জামাল উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী যাদেরকে নিয়োগ দিয়েছি এরা আছে। আর যারা নিয়মের বাহিরা আমরা গভর্নিং বডি নিয়োগ দেইনি এরকম কেউ থাকলে- আমাদের কাছে কেউ কোনদিনও কাগজপত্র দেয় নাই। শুনেছি ডিজি অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতেছে। নিয়োগের বৈধ কোন কাগজপত্র আমরা পাইনি। গভর্নিং বডি হিসেবে আমাদের কোন স্বাক্ষরও নাই, আমরা কোন ইন্টারভিউও নেইনি। তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী এম.পি.ও হওয়ার সময়সীমার ভেতরে তারা কোন কাগজ দেয় নি। তবে কাগজের বৈধতা থাকলে আমরা শতভাগ সহযোগিতা করবো৷ এ সময় তিনি প্রতিবেদককে ধন্যবাদ জানিয়ে অফিসে দেখা করার কথা বলেন।
রুস্তমপুর ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামরুল আহমদ বলেন, আমরা এই নিয়োগ দিয়েছি। পরবর্তীতে কেউ কেউ রেগুলার এসেছে আবার কেউ আসে নাই। এই বিষয় নিয়ে গভর্নিং বডি এসব শিক্ষকদের সুযোগ দিতে রাজি হচ্ছে না। তবে আমি রাজি এবং চাচ্ছি তাদেরকে সুযোগ দেওয়ার জন্য। তবে বিশেষ করে গভর্নিং বডির সভাপতি দিতে চাচ্ছেন না বলে উল্লেখ করেন তিনি। কমিটির বৈধতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এলাকার হিসেবে, শিক্ষানুরাগী হিসেবে বা আওয়ামী লীগের উপজেলা সাংগঠনিক হিসেবে উনাকে সভাপতি করেছি। তবে এই কমিটি আইনগত ভাবে ঠিক নয়।
কলেজের বঞ্চিত শিক্ষকদের দাবি, অভিযোগের সঠিক তদন্ত এবং কাগজপত্র যাচাই সহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কলেজের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুনজর কামনা করেন।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানের বর্তমান শিক্ষকদের মধ্যে কিছু সংখ্যক শিক্ষক সরকারি ও এম.পি.ও ভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপ্রাপ্ত হিসেবে রয়েছেন। আবার কারো কারো ব্যানবেইসে সঠিক কোন তথ্য নেই।

Manual7 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..