বিশ্বানাথে মিজানের ত্রাসের রাজত্ব, মামলা নেয়নি পুলিশ: সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ৮:০৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২

বিশ্বানাথে মিজানের ত্রাসের রাজত্ব, মামলা নেয়নি পুলিশ: সংবাদ সম্মেলন

Manual4 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেটের বিশ্বনাথে সন্ত্রাসী হামলা ও পুলিশের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিশ্বনাথ থানার সত্তিশ গ্রামের মখলিছুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মখলিছুর রহমান জানান, তাঁর প্রতিবেশী সত্তিশ গ্রামের মৃত মনোহর আলীর ছেলে মিজানুর রহমান ও হাবিবুর রহমানর এবং তাদের স্বজনরা সন্ত্রাসী, দাঙ্গাবাজ ও চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোক। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অপরাধ অপকর্মের মামলা। তাদের কাছে এলাকার শান্তিপ্রিয় নিরিহ মানুষজন জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

তিনি বলেন, মিজানুর রহমান একসময় বিএনপি-জাতীয় পার্টিসহ সরকার দলের নেতা পরিচয়ে এলাকার প্রভাব বিস্তার করে চলতেন। বর্তমান সরকারের আমলে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। সন্ত্রাসী হামলা-মামলা ভাঙচুর লুটপাট তার কাছে নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। সরকারদলীয় নেতা পরিচয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উপর প্রভাব খাটিয়ে তিনি যা ইচ্ছে তাই করে চলেছেন। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তার কোনো অপকর্মের প্রতিবাদ করলে নেমে আসে হামলা-মামলাসহ রকমফের নির্যাতন-নিপীড়ন। মিজানুর রহমান ও হাবিবুর রহমানের ভাইদের কাছে এলাকার মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

Manual1 Ad Code

লিখিত বক্তব্যে মখলিছুর রহমার আরোও অভিযোগ করেন, মিজানুর রহমান ও হাবিবুর রহমানের সাথে তার পরিবারের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জেরে মিজান ও হাবীব প্রায়ই তার পরিবারকে হত্যাসহ তাদের জানমালের ক্ষতি সাধনের চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় মিজানুর রহমান ও হাবিবুর রহমান এবং তাদের লোকজন গত ৫ ও ১০ আগস্ট দু’ দফা হামলা চালিয়ে তার স্বজনদের গুরুতর আহত করেন এবং তাদের ঘর-দরজার ভাঙচুর করেন। বিষ ঢেলে তার পুকুরের মাছও মেরে ফেলেন।

সংবাদ সম্মেলনে মখলিছুর রহমান বলেন, গত ৫ আগস্ট নামায শেষে তিনি ও তার দোকান কর্মচারী ভাগিনা বদরুল আলম রানা বাড়িতে ফিরলে মিজানুর রহমান, হাবিবুর রহমান ও হাবিবুর রহমানের ছেলে তানবীর দলবল নিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালান। হামলায় তারা দেশীয় মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র¿-সহ আগ্নেয়াস্ত্রও ব্যবহার করেন। ধারালো অস্ত্র দা দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে বদরুল আলম রানাকে গুরুতর আহত করেন। এ সময় হাবিবুর রহমানের ছেলে তানবীর বন্দুক দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলিও বর্ষণ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তানভীরকে বন্দুকসহ হাতেনাতে আটক করে এবং গুলির খোসাও উদ্ধার করে। গুরুতর আহত বদরুল আলম রানাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দিতে গেলে অজ্ঞাত কারণে পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। উপরন্তু বন্দুকসহ আটক তানবীরকে রাতে থানা থেকে ছেড়ে দেয়।

তিনি বলেন, থানাপুলিশ মামলা না নেওয়ায় মিজান, হাবিব ও তানভীর আরোও বেপরোয় হয়ে ওঠেন। আহত বদরুল আলম রানা বাড়ি ফিরলে ১০ আগস্ট তারা আবারো হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। ফলে দ্বিতীয় দফায় বদরুল আলম রানাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

Manual2 Ad Code

তিনি বলেন, মিজানদের দফায় দফায় হামলা এবং থানায় মামলা না নেওয়ায় মখলিছ গত ১৬ আগস্ট সিলেটের আমল গ্রহণকারী বিশ্বনাথ আদালতে মামলা করেন। মামলার আসামীরা হচ্ছেন, সিলেটের বিশ্বনাথ থানার সত্তিশ গ্রামের মৃত হাজি মনোহর আলীর ছেলে মিজানুর রহমান, হাবিবুর রহমান ও মতিউর রহমান এবং হাবিবুর রহমানের ছেলে তানবীর ও মিজানুর রহমানের ছেলে আরিফুর রহমান।

Manual7 Ad Code

আদালতের আদেশে ২৪ আগস্ট মামলাটি রেকর্ডে নিতে বাধ্য হন বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান। যা বিশ্বনাথ থানার মামলা নং-১২ (৮) ২০২২। পরে থানার এসআই মোয়াজ্জেম হোসেনকে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়।

মখলিছুর রহমানের অভিযোগ, অজ্ঞাত কারণে মামলার আসামীদের গ্রেফতার করছেন না বিশ^নাথ থানার ওসি তার তার পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোয়োজ্জেম হোসেন ২৬ আগস্ট মামলার এজহার নামীয় আসামী তানভীরকে সাথে নিয়েই মামলার তদন্ত কাজ করতে ও তানভীরের সাথে সবসময় ওঠা বসা করতে দেখা গেছে। আসামীদের গ্রেফতার না করায় মামলার বাদী হয়ে মখলিছুর রহমান প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আর এ সুযোগে মামলার এজাহারভুক্ত আসামী সন্ত্রাসী মিজান ও তানভীররা তার পুকুরে বিষ ঢেলে লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলেছে। তার বৃদ্ধা মা-সহ পরিারের মহিলা ও শিশুদের অপহরণ গুমসহ নানা হুমকি-ধামকি দিয়ে চলেছে।

এঘটনায় সিলেট জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা ঘটনায় তানবীরের বন্দুক জব্দ ও লাইসেন্স বাতিল করলেও অজ্ঞাত কারণে হামলাকারী তানবীরকে গ্রেফতার করছে না বিশ^নাথ থানা পুলিশ। ফলে সন্ত্রাসী হামলার মামলা দিয়ে উল্টো তিনি ও তার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন বলে জানান তিনি।

Manual6 Ad Code

সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী হামলার মামলার আসামী বিশ^নাথ থানার সত্তিশ গ্রামের মিজান ও তানভীরকে অবিলম্বে গ্রেফতার এবং আক্রান্ত পরিবারের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জাননো হয়। পাশপাশি কর্তব্যে অবহেলার জন্য থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার ও প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বদরুল আলম রানা, মাশুক মিয়া,লিলু মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2022
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930

সর্বশেষ খবর

………………………..