সিলেটে গ্রাহকের ৩০ কোটি টাকা বীমা কর্মকর্তাদের পেটে

প্রকাশিত: ৩:০৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০২২

সিলেটে গ্রাহকের ৩০ কোটি টাকা বীমা কর্মকর্তাদের পেটে

Manual1 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক :: অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে জীবন বীমা করপোরেশনের সিলেট আঞ্চলিক অফিস। গ্রাহকদের পলিসির টাকা আত্মসাৎই যেন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিত্যদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। গত দুই দশক ধরে একের পর এক ঘটছে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ঘটনা। কখনো কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলে মেরে দিচ্ছেন গ্রাহকের কিস্তির টাকা। কখনো আবার বিমার মেয়াদপূর্তিতে ভুয়া গ্রাহক সাজিয়ে পুরো টাকাই আত্মসাৎ করে দিচ্ছেন তারা। এখন পর্যন্ত জীবন বীমা করপোরেশন সিলেট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এসব ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক ও ভুক্তভোগী গ্রাহকরা মিলে ২৯টি মামলা দায়ের করেছেন। সর্বশেষ গত ২২ মার্চ জীবন বীমা করপোরেশনের সিলেট আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিনসহ ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

Manual3 Ad Code

জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত বীমা কোম্পানি জীবন বীমা করপোরেশন সিলেট আঞ্চলিক অফিসের ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন, কর্মকর্তা আবদুল লতিফ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম, উচ্চমান সহকারী ওয়াহিদুর রহমান মজুমদার, একই অফিসের দেলোয়ার হোসেন, জাবেদুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম ও ফিরোজ আলম মিলে ৮০২টি বীমা পলিসির ১ কোটি ৪৮ লাখ ৩৫ হাজার ১২ টাকা আত্মসাৎ করেন।

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের দল অনুসন্ধানে নামে। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়ে গত ২২ মার্চ সিলেট আঞ্চলিক অফিসের ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দুদক সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

Manual7 Ad Code

এর আগে জীবন বীমা করপোরেশন সিলেট আঞ্চলিক অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে ভুয়া বীমা গ্রহীতা সাজিয়ে ও কাগজপত্র তৈরি করে বিভিন্ন গ্রাহকের আমানতের ১৪ কোটি ৬৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন। এ ঘটনায় ২০১৪ সালে ৩৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা দায়ের করে দুদক।

Manual6 Ad Code

গত ২২ মার্চ দুদকের দায়েরকৃত মামলার প্রায় সব আসামি ২০১৪ সালে দায়েরকৃত মামলারও আসামি ছিলেন। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালে ওই ২৬ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয় আদালতে। বর্তমানে আদালতে মামলাগুলো বিচারাধীন।

এদিকে, ২০০২ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বীমা কর্মকর্তা আবদুল লতিফ চৌধুরীসহ কোম্পানির ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে ৫ হাজার ৮৫৮টি প্রিমিয়াম জালিয়াতি করে ১৩ কোটি ৫৮ লাখ ৪২ হাজার ৩০২ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযাগ ওঠে। ওই ঘটনায়ও মামলা হয়।

এ ছাড়াও সিলেট আঞ্চলিক অফিসের ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে সাবেক নিম্নমান সহকারী দেলোয়ার হোসেন, উচ্চমান সহকারী ওয়াহিদুর রহমান মজুমদার ও জুনিয়র অফিসার ফিরোজ আলম মিলে গ্রাহকের ১ কোটি ৯০ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৫ টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৬ সালের শুরুতে আত্মসাতের এ ঘটনাটি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় জীবন বীমার আঞ্চলিক অফিসের ম্যানেজার আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ২০১৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাগবাড়ী থেকে গিয়াস উদ্দিনসহ চারজন দুদকের হাতে গ্রেফতার হন।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

March 2022
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..