বিশ্বনাথে বাঁশের সাঁকো আর সেতু হয় না

প্রকাশিত: ৩:০৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৪, ২০২১

বিশ্বনাথে বাঁশের সাঁকো আর সেতু হয় না

Manual7 Ad Code

মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ থেকে :: সিলেটের বিশ্বনাথে দীর্ঘ ৩০ বছরের এই সাঁকোটি কবে সেতু রূপে তৈরি হবে সেই স্বপ্ন দেখছেন স্থানীয়রা। বরাবরই উন্নয়নের ছোয়া থেকে বঞ্চিত উপজেলার অলংকারি ইউনিয়নের রামধানা শেখের গাঁও পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দারা। সাঁকো দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা হলেও বর্ষায় ভোগান্তি বাড়ে দ্বিগুণ এলাকাবাসীর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ভোট এলে সব দলের নেতাই প্রতিশ্রুতি দেন, বাঁশের সাঁকো আর থাকবে না। কষ্ট করতে হবে না। সাঁকোর বদলে সেতু হবে। কিন্তু দল পাল্টায়, বাঁশের সাঁকো আর সেতু হয় না। হাজার মানুষের কষ্ট-দুঃখও ঘোচে না।

তারা আরো বলেন, সরকার গেল, সরকার এলো, কত এমপি এলো গেলো, আমাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হলো না।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্বাচন আসলে নেতা আর কর্মীদের মুখে শুধু কথার ফুলঝুরি ফোটে। নির্বাচন শেষ হলে তাদের আর সাক্ষাৎ মিলে না। বছরের পর বছর শুধুই আশ্বাস আর আশ্বাস।
একটি সেতু নির্মাণের অভাবে এলাকাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছেন। ব্রিজ যে কবে নাগাদ হবে তা কেউ জানে না।

Manual5 Ad Code

একটি সেতু নির্মাণের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এ সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় এলাকাবাসীর যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে যত দ্রুত সম্ভব এখানে একটি সেতু দরকার।

কারো টাকা কিংবা সরঞ্জাম। কেউ দেন শ্রম। বাঁশ, বেত, রশি, আর চট দিয়ে বছরে দু’বার অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করেন তারা। একাধিকবার দেয়া হয় জোড়াতালিও। তবুও মাঝে মধ্যে ভেঙে গিয়ে ব্যাহত হয় চলাচল। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হন কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ কর্মজীবী মানুষ।

একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এভাবেই চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। খাল পেরিয়ে গভীর কাদাজল মাড়িয়েই গন্তব্যে যান তারা।

Manual5 Ad Code

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মূল সড়ক থেকে একটি মেঠো পথ প্রবেশ করেছে শেখের গাঁও পশ্চিম পাড়ায়। পাড়া শেষে এটি মিলিত হয়েছে অলংকারি প্রাইমারি স্কুল সড়কে। একটু অগ্রসর হলেই চোখে পড়ে খালের উপর তৈরি প্রায় ৪৫ ফুট দীর্ঘ ও ৫ ফুট প্রস্থের একটি বাঁশের সাঁকো।
সাঁকো পেরিয়েই কাদাজলের গভীর খাদ। এগুলো মাড়িয়ে চলাচল করতে দেখা যায় পাড়ার মানুষদের।

Manual1 Ad Code

কথা হয় পাড়ার বাসিন্দা মো. বশর আলীর (৬৫) সাথে। তিনি জানান, আমাদের পাড়ার প্রবেশ পথের মাঝ দিয়েই প্রবাহিত গোয়ালি খাল। এক সময় কলা গাছের ভেলায় ও কয়েকটি বাঁশ একসাথে জুড়ে দিয়ে তৈরি করা সাঁকোতে পার হতাম।

সাঁতরে নেয়া হতো গবাদি পশু। শিশু শিক্ষার্থী ও বয়স্কদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হলে ধরণ পাল্টানো হয় সাঁকোর। আড়াআড়ি বাঁশের ফলা জুড়ে, তিন হাত প্রস্থের সাঁকো তৈরি করা হয়।

বিশ বছর ধরে এ ভাবেই চলছি আমরা। পড়শিদের আপত্তি ও নানা জটিলতায় হচ্ছেনা সেতু ও সড়কে মাটি ভরাট। ফলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে আমাদের। এক সময় দু’দুবার সেতু নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন হয়। কিন্তু প্রতিবেশী রমজান ও পেচন গংরা খালপাড়ের জায়গা নিজেদের দাবী করে আপত্তি দিলে ভেস্তে যায় সেতুর প্রক্রিয়া।

Manual7 Ad Code

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল সাংবাদিকদের বলেন, এ স্থানে দু’বার সেতু নির্মাণ প্রকল্প সরকারি ভাবে অনুমোদন হয়। কিন্তু স্থানীয় ক’জনের আপত্তির কারণে সেতু না করেই ফেরত দিতে হয় বরাদ্দের অর্থ।

এ ব্যাপারে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক সুমন চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..