জৈন্তাপুরে চোরাই চক্র বেসামাল, ঝুঁকিতে সারাদেশ

প্রকাশিত: ২:৪৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৩০, ২০২১

জৈন্তাপুরে চোরাই চক্র বেসামাল, ঝুঁকিতে সারাদেশ

Manual6 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :: সিলেট সীমান্তের জৈন্তাপুর উপজেলার ১৪ চোরাকারবারি বেসামাল। কোন অবস্থাতেই তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা। তারা অবৈধভাবে ভারতীয় পণ্যের চালান আমদানির পাশাপাশি নিয়ে আসছে মহামারি করোনাকেও। ভারতের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যখন গোটা বিশ্ব শংকিত, তখন বেসামাল সিলেটের এই কারবারিরা। তাদের সহযোগীতা দিচ্ছে সীমান্তরক্ষীদের বিশেষ কিছু সদস্য। অবশ্য অভিযোগ আছে জৈন্তাপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধেও।

এই চোরাকারবারি ও তাদের সোর্সরা হলেন, উপজেলার হরিপুর বাজারের ব্যবসায়ী রফিক আহমদ উরফে লোদাই হাজী, হেলাল আহমদ, আব্দুর রশিদ, মো. আলী, মো. আব্দুল্লাহ, মো. ইব্রহিম আলী, দরবস্ত মানিকপাড়া গ্রামের বিলাল আহমদ, লালাখাল গ্রামের সেলিম আহমদ, লালাখাল কালিঞ্জিবাড়ী গ্রামের রহিম উদ্দিন।

রহিম উদ্দিন ও সেলিম আহমদ বিজিবি- ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও পুলিশের লাইনম্যান বা সোর্স হিসাবে পরিচিত। অপরদিকে জৈন্তাপুর সীমান্তে এককভাবে পুলিশ, বিজিবি ও বিএসএফ’র লাইনম্যান বা সোর্স হিসাবে পরিচিত আব্দুল করিম উরফে বেন্ডিজ করিম, কেন্দ্রি মিজান আহমদ রুবেল, আলুবাগান গ্রামের কবিরাজ ফারুক, ৪নং বাংলাবাজারের জামাল আহমদ প্রমুখ।

Manual3 Ad Code

সীমান্তের ৩ ইউনিয়নের বিভিন্ন পথে ভারত থেকে তারা অবাধে নিয়ে আসছে গরু-মহিষ, কসমেটিক্স, শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেট, মদ, ইয়াবা, গাড়ীর পার্স, টায়ার, সিএনজিচালিত আটোরিকশার চাকা, মোবাইল হ্যান্ড সেট, চা-পাতা, মটরসাইকেল, বিস্কুট ও ভারতীয় শাড়ী।

সীমান্ত ঘুরে জানা গেছে, বিজিবি ও পুলিশের কিছু সদস্যকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে চোরাকারবারিরা উল্লেখিত পণ্যের চালান নিয়ে আসছে। সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলেও তাদের বাণিজ্য চলছে খুব স্বাভাবিকভাবে।

নলজুরী, আলু বাগান, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর, আসামপাড়া, ছাগল খাউরী, মিনাটিলা, রাবার বাগান, কাটালবাড়ী, কেন্দ্রী হাওর, ডিবির হাওর, আসামপাড়া, ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা, কমলাবাড়ী, ভিতরগোল, গোয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, নয়াগ্রাম, কালিঞ্জীবাড়ী, জালিয়াখলা, বড়গাং নদীর উৎসমুখ, সারী নদীর মুখ, লাল মিয়ারটিলা, বাঘছড়া, জঙ্গীবিল, আফিফানগর, তুমইর, ইয়াং রাজা, বালিদাঁড়া, সিঙ্গারীর পাড় এলাকার অন্তত ১২০টি পথ দিয়ে ভারতীয় পণ্য নিয়ে আসা হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে আমদানীকৃত মটরশুটি, ডাল এবং স্বর্ণের বার।

এদিকে চোরাকারবার নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিলে তথ্য প্রদানকারীদের বাড়ীতে এবং নানাভাবে হয়রানীসহ হুমকী ধমকি দেয়া হয়। এ কারণে তারা মুখ খুলতে চান না।

বিভিন্ন সূত্রে আরও জানা যায়, সীমান্তের আওতা ছাড়া ব্যাটালিয়ন কমান্ডর (সিও) লাইননামে ও সোর্স চক্র চাঁদা আদায় করছে। এছাড়া সীমান্ত পথ ব্যবহার করে ভারতীয় খাসিয়ারা বিনা বাধায় বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এবং সিলেট শহরসহ শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার এমনকি রাজধানী ঢাকা শহরে তারা অবস্থান করছে। বিষয়টি সরকারী বেসরকারী গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের তদন্তেও উঠে এসেছে।

স্থানীয়দের দাবি, এই মহামারি পরিস্থিতিতে জৈন্তাপুর সীমান্তের চোরাকারবারিদের সামলাতে না পারলে সিলেট বিভাগসহ গোটা দেশ আরও বেশি ঝুঁকিতে পড়বে। করোনা মহামারির ধ্বংসযজ্ঞ থেকে দেশকে সুরক্ষা দিতে অবিলম্বে জৈন্তাপুরের চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান জরুরী।

Manual6 Ad Code

এবিষয়ে জানতে ১৯ বিজবির লালাখাল বিওপি কমান্ডারের নম্বরে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় জেনে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।পরে আরও একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

Manual3 Ad Code

এ বিষয়ে জানতে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম দস্তগীর আহমদ বলেন, আমি এই ষ্টেশনে নতুন যোগদান করেছি। যোগদানের পর থেকে অপরাধ দমনে কাজ করে যাচ্ছি। সীমান্তরক্ষী বাহিনী আন্তরিক না হলে চোরাচালান রোধ করা কঠিন। সূত্র-সিলেট প্রতিদিন

Manual7 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..