শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মৃত্যু, ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ৭:২৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০২১

শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মৃত্যু, ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

Manual6 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : বরিশালে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করিম রেজা মৃত্যুর ঘটনায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মহিউদ্দিন ও অজ্ঞাত আরও দুই পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে মামলা হয়েছে।

হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ছাড়াও মামলায় দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় ওই তিন আসামির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগও আনা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে রেজার বাবা মো. ইউনুস মুন্সি বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থিত হয়ে ছেলেকে হত্যার অভিযোগে নালিশি অভিযোগটি দাখিল করেন। এ সময় বিচারক মো. আনিছুর রহমান অভিযোগ গ্রহণ করে তার মৌখিক বক্তব্যও শোনেন।

মামলা গ্রহণ করার বিষয়ে আদেশের জন্য দুপুর আড়াইটায় সময় নির্ধারণ করেন বিচারক। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে মামলাটি গ্রহন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পিবিআইকে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেয়া হয়।

Manual2 Ad Code

মামলায় এসআই মহিউদ্দিন ছাড়াও অজ্ঞাত দুই পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। বাদী মো. ইউনুস মুন্সি মামলায় উল্লেখ করেছেন, অজ্ঞাত ওই দুইজনকে দেখলে তিনি চিনতে পারবেন।

বাদীপক্ষে মামলার আইনজীবী ছিলেন আবুল কালাম আজাদ। নালিশি অভিযোগটি দাখিলের সময় আইনজীবী মহসিন মন্টু, সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু, নাজিম উদ্দিন পান্না ছাড়াও জেলা আইনজীবী সমিতির অন্তত ৩০ জন সদস্য বাদীপক্ষে অংশ নেন।

Manual6 Ad Code

রেজার বাবা মো. ইউনুস মুন্সি মামলায় অভিযোগ করেন, গত বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে বরিশাল নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী হামিদ খান সড়কের নিজ বাড়ি সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে বসা ছিলেন রেজা। রাত সাড়ে আটটার দিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মো. মহিউদ্দিন সেখান থেকে তাকে ধরে নিয়ে যান। পরে এসআই মো. মহিউদ্দিন জানান, রেজাউল করিমের কাছ থেকে ১৩৮ গ্রাম গাঁজা এবং চার পিস নেশাজাতীয় ইনজেকশন জব্দ করা হয়েছে।

এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে রেজাউল করিমকে আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায় মাদক আইনে মামলা করেন এসআই মো. মহিউদ্দিন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন শুক্রবার রেজাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

অভিযোগে ইউনুস মুন্সি বলেন, ‘রেজার শরীরে মারা যাওয়ার মতো কঠিন কোনো রোগ ছিল না। তবে শুক্রবার আদালতে সোপর্দের সময় রেজা গুরুতর অসুস্থ ছিল। সে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছিল না। আদালতের নির্দেশে রেজাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে মৃত্যু হয় রেজাউলের।’

ইউনুস মুন্সি মামলায় আরও উল্লেখ করেন, ডিবির এসআই মো. মহিউদ্দিন ও অজ্ঞাত আরও দুই পুলিশ সদস্যের হত্যার উদ্দেশে শারীরিক নির্যাতনেই তার ছেলে রেজার মৃত্যু হয়েছে। পরে কারা কর্তৃপক্ষ আসামিদের আড়াল করতে তড়িঘড়ি করে রেজাকে হাসপাতালে ভর্তিসহ বিভিন্ন নাটক ও প্রচারণা চালায়। এ ঘটনার অনেক সাক্ষী ও প্রমাণ রয়েছে বলেও ইউনুস মুন্সি মামলায় উল্লেখ করেছেন।

বাদীপক্ষে মামলার আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ জানান, শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করিম রেজা মৃত্যুর ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৩/১ ও ২ ধারা এবং দণ্ডবিধি আইনের ৩০২/৩৪ ধারায় তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

Manual3 Ad Code

রেজাউলের স্ত্রী মারুফা বেগম বলেন, ‘এসআই মো. মহিউদ্দিন ধরে নেয়ার সময় রেজা সুস্থ ছিল। রেজার এমন কী রোগ হলো, যে দুইদিনের মাথায় তার মৃত্যু হবে।’ মারুফার দাবি, পুলিশি নির্যাতনেই তার স্বামী মারা গেছেন।

রেজাউলের স্ত্রী জানান, সোমবার সকালে তিনিসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানের দফতরে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার কথা তাকে জানানো হয়। এ সময় পুলিশ কমিশনার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিলেও বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাদের বলেন।

এ কারণে তারা থানায় অভিযোগ না করে আদালতে আজ মামলা করেন বলে জানান রেজাউলের স্ত্রী মারুফা বেগম।

Manual2 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

January 2021
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সর্বশেষ খবর

………………………..