শ্বশুরবাড়িতে যুবক খুন : স্ত্রী ও পুলিশ সদস্য শ্যালক গ্রেফতার

প্রকাশিত: ৩:৩৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২০

শ্বশুরবাড়িতে যুবক খুন : স্ত্রী ও পুলিশ সদস্য শ্যালক গ্রেফতার

Manual3 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নীলকণ্ঠপুর গ্রামে গাছে ঝুলন্ত আবিদ হোসেন বাবুর (২৮) মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে মরদেহটি গাছে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। হত্যায় ব্যবহৃত খেজুরের কাঁটা, হাতুড়ি, প্লাস, রক্তমাখা জামা ও লুঙ্গি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া হত্যায় জড়িত থাকায় পুলিশ কনস্টেবল আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এদিকে বুধবার বিকেলে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার ও হত্যার বর্ণনা দিয়ে সাতক্ষীরা আদালতের বিচারক ইয়াসমিন নাহারের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আবিদ হোসেন বাবুর স্ত্রী সাবিনা বেগম।

নিহত আবির হোসেন বাবু নীলকণ্ঠপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের মা হোসনে আরা বাদী হয়ে কালিগঞ্জ থানায় ৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

Manual1 Ad Code

জানা গেছে, আট মাস আগে নীলকণ্ঠপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আরশাদ আলী মোড়লের মেয়ে দুই সন্তানের জননী বিধবা সাবিনাকে প্রেমের সূত্র ধরে বিয়ে করেন ভাটাশ্রমিক আবিদ হোসেন বাবু। বিয়ের পর বাড়িতে যাওয়ার জন্য বাবা-মা বললেও শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন বাবু। একপর্যায়ে সাবিনা মাগুরা জেলায় কর্মরত এক ব্যক্তির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। এ নিয়ে সাবিনাকে তালাক দিতে বলেন তার পুলিশ সদস্য ভাই আরিফ ও বোন শরিফা। বাবু তার স্ত্রীকে তালাক দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।

Manual4 Ad Code

এরই অংশ হিসেবে রোববার পাঁচ দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসেন পুলিশ সদস্য আরিফুল ইসলাম। সোমবার রাতের কোনো একসময় নির্যাতন চালিয়ে হত্যার পর বাবুর গলায় ওড়না পেচিয়ে পার্শ্ববর্তী পুকুরপাড়ে লেবুগাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখা হয়। হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মঙ্গলবার সকালেই আরিফ তার কর্মস্থলে যোগদান করেন। পুলিশ মঙ্গলবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার ও দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্ত্রী সাবিনাকে আটক করে।

Manual5 Ad Code

জেলা পুলিশ সুপারের বিশেষ শাখা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, আসামি সাবিনা স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন- তার স্বামী আবিদ হোসেন বাবু বেকার জীবনযাপন করতেন। সংসারে কোনো কাজ করতেন না। সাবিনার ভাই মাগুরা জেলা পুলিশে কর্মরত আরিফুল ইসলামের সংসারে থাকতেন তারা। এ সমস্ত কারণে শ্বশুরালয়ের লোকজনের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘটনার রাতে স্বামী-স্ত্রী তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ঝগড়া করেন। ঝগড়ার পর আবিদ হোসেন ঘর থেকে বেরিয়ে শ্যালক আরিফুল ইসলামের কাছে তার বোনের বিরুদ্ধে নালিশ করেন। এই ঝগড়াকে কেন্দ্র করেই সাবিনা ও তার পুলিশ সদস্য ভাই ও আত্মীয়স্বজন মিলে তাকে হত্যা করে পরিকল্পিতভাবে। পরে মরদেহটির গলায় ফাঁস লাগিয়ে বাড়ির পেছনে একটি গাছে ঝুলিয়ে রাখে। যাতে সাধারণ মানুষ মনে করে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

Manual8 Ad Code

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জিয়ারত আলী জানান, গ্রেফতার সাবিনা তার স্বামীকে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন জানান, হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকায় সাবিনার ভাই মাগুরার শালিখা থানাধীন হাজরাহাটি তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত পুলিশ সদস্য আরিফুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2020
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..