সৈয়দ হেলাল আহমদ বাদশা, গোয়াইনঘাট :: গতকাল যেখানে ছিল কচিকাচা ধানের সবুজের মেলা আজ সেখানে সাদা পানির ঢেউওের কলতানির খেলা। চারিদিকে থই থই করছে বন্যার পানি। বন্যার পানির ঢেউয়ের তালে তালে সাধারণ কৃষকের হৃদয় ভাঙ্গা কান্না।আবারো বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় । টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে নিন্মাঞ্চল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত গোয়াইনঘাট উপজেলার সদ্য রোপায়িত আমন সহ সবজিক্ষেত। বন্যার পানিতে এ উপজেলাগুলোর প্রায় ৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে গোয়াইনঘাট উপজেলা।
বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সারী, পিয়াইন, গোয়াইন ও ডাউকি ও বরাক নদীর পানি। প্রবল বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পানিতে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই গোয়াইনঘাটের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। অব্যাহতভাবে পানি বাড়তে থাকায় অনেক গ্রামীন রাস্তা আজ পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের জাফলং চা-বাগান, মমিনপুর, আসাম পাড়া, আসাম পাড়া হাওর, ছৈলাখেল অষ্টম খণ্ড (আংশিক এলাকা) নবম খণ্ড, সানকি ভাঙ্গা, নয়াগাঙের পাড়, বাউরবাগ হাওর, ভিত্রিখেল হাওর, আলীরগাঁও ইউনিয়নের নাইন্দার হাওর, তিতকুল্লিহাওর, বুধিগাঁও হাওর, রাজবাড়ি কান্দিসহ পশ্চিম জাফলং, রুস্তমপুর, ডৌবাড়ী, লেঙ্গুড়া, তোয়াকুল ও নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের রাস্তাঘাটসহ বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। এতে করে কৃষকের আউশ ধান, বোনা আমন, বীজ তলা এবং সবজি ক্ষেতসহ এ উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। নিজেদের পাশপাশি গৃহপালিত গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শত শত পরিবারের মানুষজন। স্থানীয়দের সাথে এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপকালে তাদের সুত্রমতে জানা যায় পাহাড়িঢলে পানি ওঠেছে কম অনেক ঘরবাড়িতে এবং ২ হাজারের বেশি কাচা পাকা ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্থ ও হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সুলতান আলী জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় আউশ ধান, বোনা আমন ও আমন ধানের বীজতলা এবং সবজি ক্ষেতসহ সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৩০০০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আর যদি বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হয় তাহলে, তলিয়ে যাওয়া ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে ধীরে ধীরে বন্যার পানি ভয়ঙ্কর ও প্রকটরুপ ধারণ করছে।
Sharing is caring!