সুনামগঞ্জে মুকুট ইমন যার যার, মতিউর সবার

প্রকাশিত: ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯

সুনামগঞ্জে মুকুট ইমন যার যার, মতিউর সবার

Manual7 Ad Code

সাম্প্রতিক বছরগুলো জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কে কাকে নিয়ে ‘খেলছে’ এই হিসেব মিলাতে হিমসিম খাচ্ছেন দলের কর্মীসহ রাজনৈতিক সচেতন মানুষেরা। সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান কখনও সিনিয়র সহ-সভাপতি মুকুটঘেঁষা, কখনও আবার সাধারণ সম্পাদক ইমনের পাশে।
মতিউর রহমান যখনই যারা অনুকূলে অবস্থান নিয়েছেন তখনই তার সমর্থকেরা উচ্ছ্বসিত হচ্ছেন। কেউ কেউ একধাপ এগিয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘ভাই মতিউর রহমানকে নিয়ে খেলছেন’। আরো একধাপ গভীরে গিয়ে অনেককে বলতে শোনা যায় মতিউরকে নিয়ে নয়, মতিউর সবাইকে নিয়ে ‘খেলছেন’।
‘খেলা’ কিংবা ‘খেলানো’ এ নিয়ে নির্বিকার বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ মতিউর রহমান সাড়া দিচ্ছেন সবার ডাকে। আজ এর বিরুদ্ধে বলছেন তো কাল ওর বিরুদ্ধে। পক্ষও নিচ্ছেন একই কায়দায়।
সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জগলুলের মৃত্যুর পর জেলা আওয়ামী লীগের গ্রুপিং রাজনীতিতে নয়া মোড় নেয়। একপক্ষে সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট ও অপরপক্ষের নেতৃত্বে আসেন সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমন। এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মাঝে স্থানীয় উদ্যোগে এবং কেন্দ্রের নির্দেশে ঐক্যের প্রচেষ্টা হয়েছে অনেকবারই। কিন্তু রাজনৈতিক বিরোধের বিষয়টি ক্রমান্বয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশে পরিণত হওয়ায় ঐক্যের স্থায়ীত্ব বেশি সময় টিকেনি।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হতে জোর প্রচেষ্টা করেছিলেন নূরুল হুদা মুকুট। কিন্তু কেন্দ্রে লবিংয়ের জোরে পদটি পেয়ে যান ইমন। এ বছরের ডিসেম্বরেই জেলা পরিষদ নির্বাচনে ইমনকে চেয়ারম্যান পদে দ্বিগুণ ভোটে হারিয়ে ‘প্রতিশোধ’ নেন মুকুট। একজনের রয়েছে কেন্দ্রে লবিংয়ের জোর আর অন্যজনের তৃণমূলের। ভিন্নধর্মী এই শক্তি নিয়ে রাজনীতির মাঠে একে অপরের সঙ্গে লড়ে যাচ্ছেন। এই লড়াই কখনও হচ্ছে নীরবে, একেবারে দলীয় গণ্ডির মধ্যে, আবার কখনও চলে আসছে প্রকাশ্য রাজপথে। মাঝে মধ্যে ঐক্যের ‘ফটোসেশন’ এ অংশ নিলে এই দুই নেতা যারা যার মতো করে রাজনীতি করে যাচ্ছেন।
গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতির শপথ নেন নেতারা। কিন্তু ঐক্যের মিষ্টির স্বাদ জিহ্বায় লেগে থাকা অবস্থায়ই ইউনিট কমিটি ভাঙা নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে চলে যান নূরুল হুদা মুকুট ও ইমন। এই যাত্রায় শুরুটা করেন ইমন। ইমন বলয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় সভায় ছয়টি ইউনিট কমিটি ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর বিরোধিতা করেন মুকুটের অনুসারীরা। পরবর্তীতে জেলা সভাপতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ছয়টি নয়, দুটি কমিটি ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অপর দুটি আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয় সভায়।
কিন্তু বিপরীত মেরুতে থাকা ইমন-মুকুট দু’জনেরই আস্থাভাজন হয়ে রাজনীতি করে যাচ্ছেন জেলা সভাপতি মতিউর রহমান। যে কারণে অনেককেই বলতে শোনা যায়, মুকুট ইমন যার যার, মতিউর সবার।
ঐক্যের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান সুনামকণ্ঠকে বলেন, ‘তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দলকে ভালবাসে, নেত্রীকে ভালবাসে, তারা আমাকে ভালবাসে। তারা ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ চায়। আমি বলে দিয়েছি ঐক্যের বিরুদ্ধে কেউ গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আমি সবার সাথে সম্পর্ক রেখে চলি। সবার ডাকে যাই। এতে কে কী মনে করল, কে কী বলল, তাতে আমার কিছু যায় আসে না।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2019
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..