এবার ডেঙ্গুতে জাবি ছাত্রীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ৮:৪৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০১৯

এবার ডেঙ্গুতে জাবি ছাত্রীর মৃত্যু

Manual7 Ad Code

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন। তার নাম ইউ খাইন নু।

এই ছাত্রীর আত্মীয় মং ল টিন জানান, ইউ খাইন নু ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শনিবার বিকালে নিজ জেলা কক্সবাজারে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ফার্মেসি বিভাগের প্রথম বর্ষের ( ৪৮ব্যাচ) ও প্রিতিলতা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

জানা যায়, ইউ খাইন নু ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রথমে সাভারের এনাম মেডিকেলে ভর্তি হন। পরে অবস্থার অবনতি হলে নিজ বাড়িতে কক্সবাজার যান। শনিবার বিকালে বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।

ইউ খাইন নুর বাবা মংবা অং মংবা বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় ইউ খাইন। জ্বর বাড়লে তাকে বাড়িতে আনা হয়। সেখান থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে অবস্থা খারাপের দিকে গেলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে চট্টগ্রামে নেয়ার জন্য বলেন। চট্টগ্রামে নেওয়ার পথে লোহাগাড়ার আমিরাবাদ নামক স্থানে গেলে তার মৃত্যু হয়।

Manual3 Ad Code

ইউ খাইন নুর বন্ধু ফার্মেসি ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিফাত খান বলেন, গত ১৭ জুলাই অসুস্থ অবস্থায় ইউ খাইন নুকে হাসপাতালে নিয়ে যাই আমরা। সেখানে টেস্ট করালে ডেঙ্গু ধরা পড়ে।

Manual3 Ad Code

কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শ্মশানে লাশ সৎকার করানো হবে বলে জানান এই শিক্ষার্থীর বাবা মংবা অং মংবা।

Manual1 Ad Code

ক্যাম্পাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ইউ খাইন নু। ছবি: ফেসবুক

এদিকে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮ থেকে শনিবার সকাল ৮ পর্যন্ত) আরও ৬৮৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

Manual1 Ad Code

এই সংখ্যা গত এক মাসের (২৬ জুন-২৭ জুলাই) মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২৪ জুলাই সবচেয়ে বেশি ৬৬৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল।

এসব রোগীকে সামাল দিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলো রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।

সরকারি হিসাব অনুয়ায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ৯ হাজার ৬৫৭ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন আটজন। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সূত্র বলছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি।

আইসিডিডিআরবির গবেষণায় যে ওষুধ অকার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে, সেগুলো দিয়েই চলছে ঢাকার দুই সিটির মশক নিধন কার্যক্রম। আর এ কারণেই এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের ভয়াবহতা কমছে না- এমন মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, সিটি কর্পোরেশনের এসব কার্যক্রম স্রেফ লোক দেখানো।

যদিও সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টদের দাবি- এ ওষুধেই মশা মরছে। আর নতুন ওষুধ আনার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ ওষুধ আমদানি করতে সময় লাগবে। অথচ ডেঙ্গুর এ প্রকোপ চলবে আগামী অক্টোবর পর্যন্ত।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চলমান মশক নিধন কার্যক্রম এডিসের প্রজনন রোধে কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

জরুরি ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এখনই এডিস মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে রোগের ভয়াবহতার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে বলেও শঙ্কা তাদের।

শুধু বিশেষজ্ঞই নয়, সিটি কর্পোরেশন মশা নিধনে কেন কার্যকর ওষুধ ছিটাতে পারছে না- এই প্রশ্ন তুলে হাইকোর্ট বলেছেন, ওষুধ কার্যকর কিনা সে পরীক্ষা আগে কেন করা হয়নি?

সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এখনও সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের (স্বাস্থ্য অধিদফতর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর) পক্ষ থেকে মশা মারার জন্য প্রস্তাবিত কোনো ওষুধের নাম আসেনি।

চলতি সপ্তাহেও যদি কোনো ওষুধের নাম বা স্যাম্পল আসে, তাহলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওষুধ কিনতে কমপক্ষে চার মাস সময় লাগতে পারে। আর ততদিনে ফুরিয়ে যাবে ডেঙ্গুর মৌসুম। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ভুগতে হবে অসংখ্য মানুষকে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..