সিলেট ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:১২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার :: দিনভর ছিলো পেঁয়াজ নিয়ে হুলস্খুল। সন্ধ্যা হতেই শুরু হয় লবন নিয়ে। সেমাবার সন্ধ্যা থেকে লবনের দাম বেড়ে যাচ্ছে এমন খবরে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন সিলেট নগরীর ভোগ্যপণ্যের দোকানগুলোতে। বাড়তি চাপে নিমিষেই ফুরিয়ে যায় নগরীর বিভিন্ন দোকানের লবনের স্টক। আবার অনেক ব্যবসায়ী বেশি দামে বিক্রির জন্য লবন মজুদ করে রাখেন বলেও অভিযোগ ওঠেছে।
সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, লবনের দাম বৃদ্ধির খবর পুরোটাই গুজব। বাজারে নিত্য-প্রয়োজনীয় সামগ্রীর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। কোন নিত্য-প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়তে পারে এমন গুজবে কান না দেয়ার জন্য সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন সিলেটের বিভিন্ন থানা এলাকায় এমন গুজবে কান না দেয়ার জন্য পুলিশ প্রচরণা চালাচ্ছে।
এ ছাড়াও পুরো বিভাগজুড়ে লবন নিয়ে চলছে এই লকাকান্ড। কেউ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই গুজব ছড়াতে পারে। ব্যবসায়ীরাও জানিয়েছেন, লবনের চাহিদামাফিক সরবরাহ আছে। শীঘ্রই দাম বাড়ার শঙ্কা নেই। তবে ব্যবসায়ীরা এমনটি দাবি করলেও সোমবার রাতেই অনেক দো্কানে বাড়তি দামে লবন বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অতিরিক্ত দামে লবন বিক্রির দায়ে সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে বড়লেখায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে উপজেলার সাতটি দোকানের মালিককে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করে।
গুজবে কেন্দ্র করে এই হুলুস্থুলের প্রেক্ষিতে সোমবার সন্ধ্যায় জনগনকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন। নিজের ফেসবুকে পুলিশ সুপার লিখেন- ‘প্রিয় সিলেটবাসী, বাজারে নিত্য-প্রয়োজনীয় সামগ্রীর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। কোন নিত্য-প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়তে পারে এমন গুজবে কান না দেয়ার জন্য সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
আলিম আল রাজি নামে নগরীর এক চিকিৎসক সোমবার রাতে ফেসবুকে লেখেন- সিলেটে আরো একটি নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে।
‘দাম বেড়েছে’ – যারা এই গুজবটা ছড়িয়েছে তারা সফল। এখন সত্যি সত্যি অনেক যায়গায় আগের চেয়ে চারগুন বেশি দামে এই দ্রব্যটা বিক্রি হচ্ছে। কিছু যায়গায় অবস্থা আরো খারাপ। আগামীকাল দাম আরো কয়েকগুন বাড়তে পারে – এই আশংকায় আজকেই অনেকে দ্রব্যটা কিনে রাখছেন যার ফলে অনেক দোকানে দেখা দিয়েছে সংকট। আজকে বিক্রি না করে আগামীকাল বেশি দামে বিক্রি করবেন – এই আশায় দোকানীরাও ইতিমধ্যে তৈরি করে ফেলেছেন কৃত্রিম সংকট।
সরকারের উচিত কঠোর অবস্থানে যাওয়া এবং পিটিয়ে এইসব অসভ্যদের সোজা করে ফেলা। ফাজলামোর একটা সীমা থাকা উচিত।
সোমবার রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, লবন কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। বেশিরভাগ মুদি দোকানেরই মজুদ ফুরিয়ে গেছে। দোকানে লবন না পেয়ে ক্রেতারা আক্রমন আচরণ করতেও দেখা গেছে।
সব ক্রেতাদেরই দাবি, লবনের দাম বাড়তে যাচ্ছে এমন খবর শুনেছেন। তাই লবন কিনতে এসেছেন তারা। তবে কেথায় এমন সংবাদ শুনেছেন একথা কেউ বলতে পারেননি।
সুপার শপ স্বপ্ন’র হাউজিং এস্টেট শাখার ব্যবস্থাপক নাহিদ তারানা চৌধুরী, সন্ধ্যার পর থেকেই ক্রেতারা লবন কিনতে ভিড় করেন। একেক জন ৪/৫ কেজি করে লবন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে লবনের যথেস্ট সরবরাহ রয়েছে। আমরা নির্ধারিত দামেই ক্রেতাদের লবন বিক্রি করছি। লবনের দাম দ্রুত বাড়ার শঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি।
তবে স্বপ্ন’র জিন্দাবাজার শাখার এককর্মী বলেন, সন্ধ্যার পরই তাদের লবনের স্টক শেষ হয়ে গেছে।
দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকরের মুদি দোকানি কয়েছ উদ্দিন কুটি বলেন, সন্ধ্যার পর আচমকা কেবল কেনার জন্য ক্রেতারা এসে দোকানে ভিড় করতে থাকেন। অল্প সময়ের মধ্যেই আমার দোকানের সব লবন শেষ হয়ে যায়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd