খুনিদের আড়াল করতে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র : মিন্নি

প্রকাশিত: ৮:০১ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০১৯

খুনিদের আড়াল করতে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র : মিন্নি

বরগুনায় রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর সাক্ষী ও নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বলেন, ‘বরগুনায় যারা ০০৭ গ্রুপ সৃষ্টি করেছেন, তারা খুবই ক্ষমতাবান ও অর্থশালী। তারা রিফাত হত্যার বিচারকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য আমার শ্বশুরকে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। খুনিদের আড়াল করতে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

আজ রবিবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা মাইঠা এলাকায় তার বাবার বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তার শ্বশুরের করা সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে মিন্নি বলেন, ‘২৬ জুন আমার চোখের সামনে আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আমি সন্ত্রাসীদের বারবার প্রতিহত করার চেষ্টা করেও আমার স্বামীকে বাঁচাতে পারিনি। সবার কাছে সহযোগিতা চাইলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। এরপর ২৭ জুন আমার শ্বশুর বরগুনা সদর থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। হত্যা মামলায় আমাকে কোথাও অভিযুক্ত না করে এক নম্বর সাক্ষী বানানো হয়। এখন হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে মামলাটি ভিন্ন খাতে নেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

এসময় সিসিটিভি ফুটেজের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কিন্তু আসল ঘটনা জানার চেষ্টা কেউ করেননি। আমি সেদিন কলেজে গিয়েছিলাম। রিফাত গিয়ে আমাকে বলে বাবা এসেছেন তোমাকে ডাকছে। আমি এসে দেখি রিফাতের বাবা (আমার শ্বশুর) সেখানে নেই। তাই আমি আবার কলেজের ভেতরে ঢুকে যেতে চাইছিলাম, এসময় রিফাত আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার আবদার করে। এর মধ্যেই রিশান ফরাজী, রিফাত ফরাজীসহ কয়েকজন এসে ওকে জাপটে ধরে পূর্ব দিকে নিয়ে যায়। আমি ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক হয়ে যাই। হাঁটতে হাঁটতে তাদের পেছনে যাই। যখন দেখি রিফাতকে মারধর শুরু করেছে, আমি প্রাণপণ চেষ্টা করেছি তাকে বাঁচাতে। কিন্তু সন্ত্রাসীদের হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বরগুনার পুলিশ সুপার ও প্রশাসনকে আমি ধন্যবাদ জানাই আমার নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুবিচারের জন্য আবেদন করছি। আমার বিরুদ্ধে যারা মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র করছে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিসহ প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য আবেদন করছি।’

রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোর রাতে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত তিন জনসহ সাত আসামি হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় বর্তমানে ছয় জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। সন্ত্রাসীরা রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে। তারা চেহারা লুকানোরও কোনো চেষ্টা করেনি। গুরুতর আহত রিফাতকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..