সিলেট ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৫৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৮
স্বাধীন দেশে থেকেও নিজেকে অনেক সময় পরাধীন মনে হয়। তবুও কলম হাতে নিয়ে লিখা শুরু করে দেই আমার দেখা বীর উত্তম, দেশনেত্রী গণতন্ত্রের জননী বেগম খালেদা জিয়া’র জন্য। মনকে বিষণœ ও উদ্ধিগ্ন অবস্থা নিয়ে কি লিখবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তবুও নিজের অন্তঃস্থল ও মনের গভীরে ভেসে উঠা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে না লিখা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না। ব্যক্তিজীবনে আমরা প্রত্যেকেই যেকোনো ভাবে হোক একটু হলেও রাজনীতির সাথে জড়িত আছি অথবা নিজেকে রাখতে চাই। হোক সেটি প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে। সকালবেলা যখন চা চুমুক দিয়ে পত্রিকাদি অধ্যয়নের মাধ্যমে আমরা আমাদের দিনের শুরু করি তখন (বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে) পত্রিকার কোন পাতায় রাজনৈতিক বিষয়ক সংবাদ রয়েছে সেটি দেখার জন্য আমরা অসম্ভব আগ্রহ প্রকাশ করি। ব্যক্তিজীবনে পড়ালেখার পাশাপাশি সাংবাদিকতা, লেখালেখি, গণমাধ্যম, ছাত্ররাজনীতিক গবেষণা, সামাজিক সংগঠন ইত্যাদি কার্যকলাপের সাথে স্পর্শক হয়ে থাকতে পছন্দ করি। ১৯৭১ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মতো লিখনীর প্রতিবাদে বিশ্বাসী রেখে নিজেকে সর্বদা সত্য ও ন্যায় পথে পরিচালনার চেষ্টা করি। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই লিখনীর তুচ্ছ মূল্যায়ণও অর্জন করতে পারিনি। তা তখনই প্রমাণ হলো যখন বাংলাদেশ ও তার গণতন্ত্র বন্দিশালায় আমার লেখালেখি ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না। কি আর করার ছিলো আমার। আমি তো পারবো না রাস্তায় দাড়িয়ে মিছিল করতে, আমি তো পারবো না পুলিশের সাথে হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হতে, আমি তো পারবো না ছাত্রলীগ’র হয়রানির শিকার হতে, আমি তো পারবো না বাকশাল হতে। হ্যা আমি অবশ্যই পারতাম এই কাজগুলো করতে যদি বাংলাদেশের সু-শাসন আমার সাথে থাকতো। “দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ”- এই কথাটির তাৎপর্য এতোই বেশি যে তা বুঝতে পারলে অনেক কিছু আর না বুঝতে পারলে কিছুই নয়। এই আরবি প্রবাদ বাক্য সবসময় জীবনে ধারণ করি। এখন হোক বাংলাদেশে অবৈধ আওয়ামী সরকার বিদ্যমান কিন্তু আমি দেশের সংবিধানের প্রতি সর্বদা আনুগত্য। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান তার জীবনে গুণগুলো বিবেচনা করলে দেখা যায় রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে তিনি স্বদেশপ্রেম ও দেশের সংবিধানের প্রতি ছিলেন অটল শ্রদ্ধাবান। তবে আমি পারি একটি বদ্ধ পরিকরে বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ, গুণীজনদের নিয়ে সভা, সেমিনার, গোল টেবিল বৈঠক ইত্যাদি করতে। সংবাদকর্ম এবং রাজনীতি এই দুইটি বিষয় আমার জীবনের এক মূখ্য হেতু হয়ে দাড়িয়েছে। কেনো জানিনা কিন্তু ফেসবুক ব্লগ, কলাম লিখা, পত্রিকা কার্যক্রম ইত্যাদিতে নিজের জীবনের প্রকৃত আনন্দটুকু খুঁজে পাই। আমি রাজনীতিকে যেভাবে দেখি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের ভাষায়,“আমার রাজনীতি দেশের সেই সব জনগণের জন্য যারা অন্নহীন, বস্ত্রহীন, অসহায়, দুর্দশায় জর্জরিত, ক্ষতিগ্রস্ত, স্বম্বলহীন এবং নিজেকে আত্মতৃপ্তি মিটিয়ে এক বেলাও খেতে দিতে পারছে না সেই সব জনগণের জন্য। দল থেকে জনগণ বড়। যারা রাজনীতিকে আরাম-আয়েশের মনে করেন আমি তাদের জন্য রাজনীতিকে কঠিন করে তুলবো।” তবে আমার বয়স মাত্র আটারো। তাই জিয়াউর রহমানকে আমার দেখা হয়নি। কিন্তু উনার মিডিয়া ও গণমাধ্যমে দেয়া জীবনীর ভিডিওচিত্রগুলি প্রায় সবই আমার দেখা। কিন্তু বাস্তবে উনাকে দেখতে পারিনি। তবে আমি দেখেছি একজনকে যার হাঁটা-চলা, কথা-বার্তা, কর্ম-পরিকল্পনা, রাষ্ট্র পরিচালনা সবকিছুর মধ্যেই শ্রদ্ধ্যেয় জিয়াউর রহমান (বীরউত্তম)-কে পরিলক্ষিত হয়। আমি দেখেছিলাম উনাকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখে। আমি দেখেছিলাম সেদিন জনবর্ষণ। আমি দেখেছিলাম সেদিন আরেক বীরউত্তমকে। আমি দেখেছিলাম সেদিন এই দেশে পুনরায় বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকারীর আরেক প্রতিচ্ছবি। আমি দেখেছিলাম সেদিন খুব শীঘ্রই এই দেশে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি ফিরে আসার অভূতপূর্ব লক্ষণ। আমি উপলব্ধি করেছিলাম সেদিন উনিই সেই মাইকেল মধুসূদন দত্তের বীরাঙ্গনা। আমি উপলব্ধি করেছিলাম সেদিন আর্তমানবতার অগ্রদূত মাদার তেরেসার এক অনন্য রূপ। আমি উপলব্ধি করেছিলাম সেদিন নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার এক আত্ম-প্রতিচ্ছবি। আমি দেখেছিলাম সেদিন এই দেশের গণতন্ত্রের জননীকে। কষ্ট হচ্ছে বলতে তবুও বলছি আজ এই গণতন্ত্রের জননী বন্দী হয়ে আছেন এখন নাজীমুদ্দীন রোডে। ৮ তারিখের রায় কালো ছাঁয়ায় আচ্ছন্ন করে দেয় এই দেশের অসহায়-গরিব-বঞ্চিত মানুষদেরকে। যে রায় ঘোষণাটি ছিলো ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলো তার মতো। ৮ তারিখ দুপুরের পর থেকে পারছিলাম না মনকে শান্তনা দিতে। কান্নায় মন ভেঙ্গে পড়ে। চারদিকে শুধু একটি জবাবই খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম এই রায়ের মধ্যে কতটুকু সততা আছে। আপনাদেরকে একটি কথা বলে রাখি বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটকে এক বাক্য লাইন দ্বারা সূচীত করা যায়ঃ- “সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ।” যেখানে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়। যেখানে ছয় ছয় দিন প্রশ্নপত্র ফাঁস। যেখানে বয়সের অভিযোগ দেখিয়ে নোবেল প্রাপ্ত মোহাম্মদ ইউনুস স্যার-কে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে পদচ্যুতি করানো হয় যাতে করে আওয়ামী সরকার ব্যাংক ডাকাতিতে আরো শীর্ষ স্থান অর্জন করতে পারে। যেখানে প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগকে সংসদের আওতাভুক্ত করার বিরোধীতা করার কারণে ক্যান্সার রোগ দিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে স্থানচ্যুত করানো হয় যাতে করে অবৈধ আওয়ামী সরকার তাদের দুর্নীতির মাত্রা অসহনীয় মাত্রায় বাড়াতে পারে। যেখানে অবৈধ অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনী কক্ষে স্ট্যাম্প ডিউটির নামে জালিয়াতি করে নির্বাচন করানো হয় এবং বাংলার মহান জাতীয় সংসদের অবমাননা করা হয়। যেখানে বিনা ভোটে ১৫৩ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। যেখানে ব্যাংক ও শেয়ার বাজারের নামে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে তাদের কষ্ট করে আয় রোজগারের টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র রায়ঃ যারা শুরু থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র ১০ বছরের আইনজীবী, রায়ের দিন বকশি বাজার অস্থায়ী আদালতে তাদেরকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় নি। তবে সেখানে সুষ্ঠু নাকি অবৈধ বিচারকার্য হলো কিভাবে বিশ্বাস করবো। একমাত্র রায়ের দিনই সেখানে কোনো মিডিয়াকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় নি। বেগম জিয়া’র আদালতে রায় হওয়ার আগেই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রায় ঘোষণা করে দেন তবে কিভাবে বিশ্বাস করবো এটি সুষ্ঠু নাকি অবৈধ রায়।
একটি কথা বলতে পারি, এই রায় বাংলাদেশের সুষ্ঠু আইন করেনি করেছে এই দেশের অবৈধ আওয়ামী সরকার। উনারা দারুন একটা ফাঁদ পেতেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠাবেন, বিএনপি হরতাল দেবে, তারপর উনারা নিজেরাই কিছু বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরে বিএনপি’কে জঙ্গী সংগঠন হিসেবে বিশ্বে প্রচার করবেন। জাতির নাতি তো ফেসবুকে এই বিষয়ে আগাম স্ট্যাটাসও দিয়ে রেখেছিল। থানায় থানায় আগাম মামলা তৈরী করে রাখা হয়েছিল ৭ তারিখ আর ৮ তারিখে দেবার জন্য। যারা চেয়েছিলো বেগম জিয়াকে কারাবন্দী করলে বিএনপি হরতাল, জ্বালাও-পোড়াও করবে এবং সাধারণ জনগণের কাছে বিএনপি’র ভাবমূর্তি নষ্ট হবে এবং আমরা নির্বাচনে কারচুপি না করেই জিততে পারবো। কিন্তু সেই ফাঁদে পা দেয়নি বিএনপি। কারণ হলো বিএনপি বর্তমান অবৈধ আওয়ামীলীগের মতো মন্ত্রী, এমপি-রূপের দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসীদের দল নয়। আওয়ামীলীগ সরকার যেভাবে বিএনপিকে নিয়ে এতো চিন্তামগ্ন থাকেন তারা যদি তার ১০ শতাংশও এই দেশের মানুষকে নিয়ে করতেন তাহলে দেশ আজ এরকম হতো না। মনে রাখবেন বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা হলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান যিনি মাওলানা ভাসানির রাজনৈতিক আদর্শকে অনুকরণ করে রাজনীতি করতেন।
জাতিসংঘ, ভারতীয় গণমাধ্যম, বিবিসি, বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিসহ সবাই খালেদা জিয়ার এই রায় নিয়ে বেশ উদ্ধিগ্ন এবং তাদের বিবৃতি কি প্রমাণ দেয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কোনো অন্যায় করেননি। ধন্যবাদ জানাই আমেরিকার ১০১জন আইনজীবীকে যারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রায় পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আমার কথা না হয় বাদই দিলাম। পারবেন কি এদেশের দুর্দশায় জর্জরিত, অসহায়, ক্ষতিগ্রস্ত, গরিব, অন্নহীন, বস্ত্রহীন, স্বম্বলহীন মনে দুঃখ-কষ্টের গ্লানি ভরা সাধারণ জনগণকে বুঝাতে। এই রায় নিয়ে অনেকেই অনেক মন্তব্য করছেন। কোর্ট বা আদালতের সচরাচর অনেক রায়ই জনগণ মেনে নিতে পারে না।
আপনাদেরকে একটা ঐতিহাসিক উদাহরণ দেইঃ গ্রীক দার্শনিক মহান সক্রেটিস যাকে পৃথিবীর সবাই চিনেন। এই মহান ব্যক্তির বিচারকার্য যখন হয় তখন বিচারক ছিলেন ৫০০জন। তখন বিচারটা হয়েছিল পারলামেন্টে। সে বিচারের মধ্যে প্রথমে দেখা গেলো যে, তাকে যারা দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন তারা তাকে একটা অপশন দিয়েছিলেন আপনি দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন আর না হলে আপনাকে দেশে থাকতে হলে আপনার মৃত্যুদন্ড হবে। তখন মহান সক্রেটিস বললেন আমি মৃত্যুদন্ডই বেঁচে নিলাম। তখন উনাকে মৃত্যুদন্ডই দেয়া হলো। কিন্তু পরবর্তীকালে তার আড়াই হাজার বছর পর যখন আমরা দেখি মানুষ বলতে লাগলো সক্রেটিসকে ঐ মৃত্যুদন্ড দেয়া ঠিক হয় নি। ঊীঃৎবসব লঁংঃরপব ংড়সবঃরসবং ঢ়ৎবপরঢ়রঃধঃবং রহ লঁংঃরপব. দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও মহান সক্রেটিসের মতো পন্থা অবলম্বন করলেন। চাইলে তিনি পারতেন রায় ঘোষণার আগেই দেশের বাইরে চলে যেতে কিন্তু তিনি তা করেননি একমাত্র এই দেশের কথা চিন্তা করে। এই দেশের গরিব, অসহায়দের কথা চিন্তা করে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে একাই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আমাদের এই দেশনেত্রী। কিন্তু তখন কি করেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বৈরাচারকে ভয় পেয়ে দুই বছরের জন্য অন্য দেশের চলে যান। রাজনৈতিক কারণে আমাদের এখানে অনেক সময় বিচার ক্ষমা করে দেয়া হয়। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রায়ের পর বিচারক বললেন উনার বয়সের কথা বিবেচনা করে, উনার মর্যাদার কথা বিবেচনা করে উনার শাস্তি কম দেয়া হয়েছে অন্যদের চাইতে। সেইটাই যদি হয় যাহা বাহান্ন তাহাই তিপ্পান্ন বলি আমরা। তাহলে যাহা ১০ থেকে ৫ হইতে পারে তাহা ৫ থেকে ০ হলে অসুবিধা কি ছিলো।
অনেকদিন পর বিএনপি চেয়ারপার্সন’র আসনটি খালি দেখতে হলে। স্থায়ী কমিটি এবং জোট বৈঠকের সবাই সম্মানজনক প্রদর্শন করেন মিটিঙ্গের মধ্যে ঐ চেয়ারটিতে কাউকে না বসিয়ে। ঐ চেয়ারটাও সেখানে উপস্থিত ছিলো। শুধু ছিলেন না চেয়ারপার্সন আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। উনি বলেছেন সবাইকে “আপনাদের খালেদা জিয়া কোনো অন্যায় করেনি, কোনো দুর্নীতি করেনি।” আপনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক দূর পড়ালেখা করেছেন তা আমরা সবাই জানি। আপনারা আমাদের দেশনেত্রীর ৮ম পাশ নিয়ে হাস্য উপহাস করেন। আপনি অক্সফোর্ড, ক্যামব্রীজ থেকে পড়ালেখা করলেই কী ভালো রাজনীতিবীদ হয়ে যাবেন। ভালো রাজনীতিবীদ হতে হলে মনুষ্যত্ববোধ, বিচক্ষণতা, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত এই গুণগুলো থাকতে হবে। যা আপনার থেকে ভালোই আছে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র মধ্যে। রাজনীতি তো আমরা সবাই করি। কিন্তু তা করতে হবে মানবতা, সততা, নিষ্ঠা ও বিনয়ের সাথে। মানবতা ও সততার সবচেয়ে বড় উদাহরণ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন মেজর জিয়া। তিনি চাইলে শ্রদ্ধ্যেয় শেখ মুজিবের নাম নিয়েই স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারতেন। মানবতা তো তাকেই বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনাকে কিন্তু এ দেশে মেজর জিয়াই আহবান করে এনেছিলেন। মেজর জিয়া বলেছিলেন এই দেশের বিজয় প্রতিষ্ঠা করে গেছেন শেখ মুজিব আপনার বাবা এই দেশে রাজনীতি করার আপনার পূর্ণ অধিকার আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনি যখন গ্রেফতার হোন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “শেখ হাসিনা একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় নেতার কন্যা এবং দেশের সম্মানিত নাগরিক। তাকে গ্রেফতার করায় বিবেকবান নাগরিকেরা আহত হয়েছেন। যার ফলে দেশে বিদেশেও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে।” এটি হলো মানবতার পরিচয়। কিন্তু আপনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার চাইতে রাজনীতিকে বেশি বড় করে দেখলেন।
বাংলাদেশ ও তার গণতন্ত্র বন্দিশালায় বসে একটি চিঠি লিখেছেন আপনাদের উদ্দেশ্যে তার একাংশ আমি তুলে ধরলাম আপনাদের উদ্দেশ্যেঃ-
“একা হয়ে পড়েছি কিন্তু অন্যয়ের সাথে আপোষ করিনি। যত জন দল ছেড়ে চলে গেছে তার চেয়ে লক্ষ গুন মানুষ দলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। যত বেশী দল ভাঙ্গতে চেয়েছে তত বেশী দল মজবুত হয়েছে। দলের ঐক্য গড়ে উঠেছে। দল ও দেশের প্রতি নিবেদিত প্রাণ নেতা-কর্মি সৃষ্টি হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটেছে বার বার বহুবার। কিন্তু ওরা কখনই আমাকে আমার আদর্শ থেকে আমার বিশ্বাস থেকে টলাতে পারেনি।
আমাকে আমার স্বামী-সন্তানের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করেছে। জেলে দিয়েছে। আমার দুই সন্তান কে বন্দি করে নির্যাতন চালিয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য করতে চেয়েছে। বার বার একই কথা বলেছি, বাংলাদেশের বাইরে আমার কোন ঠিকানা নাই। বাংলাদেশ আমার প্রথম ও শেষ ঠিকানা। আমি আমার বন্দিদশায় মা হারিয়েছি, ভাই হারিয়েছি, হারিয়েছি দলের অনেক সন্তানকে। তবুও হারায়নি আমার মনোবল। মইনুদ্দিন-ফকরুদ্দিনের অগণতান্ত্রিক অপকর্মের বৈধতা না দিয়ে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছি প্রধানমন্ত্রিত্বের পদ। অবিচল দাঁড়িয়ে থেকেছি দেশ, দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রের পক্ষে। যন্ত্রণার হাহাকারের তীব্র কষ্ট বুকে বেঁধে দাঁড়িয়ে থেকেছি নয়নের মনি ছোট ছেলের কবরের পাশে। তার পরেও মাথা নত করিনি অন্যায়ের কাছে, গনতন্ত্রের হত্যাকারকদের কাছে। দেশের মানুষের ওপর ওদের অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়নের প্রতিবাদ করেছি। দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে গনতন্ত্রের মুক্তি মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছি। কোন লোভ লালসা, ভয় ভীতি ষড়যন্ত্র কোন কিছুই আমাকে আমার দেশের মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি। ইনশাআল্লাহ পারবে না।”
কয়েকটি প্রশ্নঃ এই দেশে কি সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আছে…? এই দেশে কি সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা আছে…? আসলেই কি আইন সবার জন্য সমান…? কেমন আছেন বাংলাদেশ ও তার গণতন্ত্র বন্দিশালায়…? কতটুকু সততা ছিলো দেশনেত্রীর রায়ে…? আসলেই কি এই মামলা সত্য নাকি মিথ্যে…? একাদশ জাতীয় নির্বাচন কি সুষ্ঠু হবে…?
মো.নাঈমুল ইসলাম
ছাত্র ব্যক্তিত্ব লেখক, কলামিস্ট ও সংগঠক।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd