সম্ভ্রমহানি নয় ওড়না দিয়ে রক্ষা করতে গিয়েছিল শায়লা, দাবি মায়ের

প্রকাশিত: ১২:০৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০১৮

Manual1 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম সংগঠনের আন্দোলনকারী ছাত্রীদের ওপর হামলাকারী শ্রাবন্তী শায়লাকে দোষী ভাবেন না তার মা সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী ও কলেজ শিক্ষক শাহনাজ বেগম শম্পা। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ওই ঘটনার সত্যতা প্রকাশেরও দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এ সভাপতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রীদের ওপর নির্যাতন চালানোর দৃশ্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পর শ্রাবন্তী শায়লার নাম দেশজুড়ে আলোচিত হওয়ার পর ২৫ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার রাতে প্রিয়.কমের সঙ্গে কথা হয় তার মা শাহনাজ বেগম শম্পার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবন্তী শায়লা। শায়লা’র বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সরদহ থানা পাড়া এলাকায়। দুই ভাই বোনের মধ্যে শায়লা বড়। ছোট ভাই অর্নব পরে রাজশাহী নগরীর বালিয়াপুকুর বিদ্যা নিকেতনে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। বাবা এসএম সানাউল হক থানাপাড়া সোয়ালেজে চাকরি করেন। ২০১২ সালে সরদহ সরকারি পাইলট স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন শায়লা। এরপর ২০১৪ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি।

Manual1 Ad Code

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাম সংগঠনের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় মেয়ে শায়লার ভুমিকায় কোনো দোষ দেখেন না মা শাহনাজ বেগম শম্পা। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব ছবি প্রকাশিত হয়েছে তা সত্যি নয় বলে দাবি করেছেন তিনি। ওই ঘটনায় শায়লা আহত হয়েছেন দাবি করে শম্পা জানান, তার মেয়ে গত ডিসেম্বর মাসে ভারতে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন। তার এপেনডিক অপারেশন হয়েছে সেখানে। এরপর থেকে শায়লা এখনো সুস্থ হতে পারেননি। সেদিনের ঘটনায় শায়লা গেলেও বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা শায়লাকে পিটিয়ে আহত করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। শায়লা বর্তমানে ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গণমাধ্যমে বাম সংগঠনের এক নারী নেত্রীকে পিটিয়ে বিবস্ত্র করার যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাবেক এই ছাত্রলীগ নেত্রী। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে যেসব ছবি প্রকাশিত হয়েছে, তা সত্য নয়। শায়লা ওই নারীর সম্ভ্রমহানি নয়, বরং তাকে ওড়না দিয়ে রক্ষা করতে গেছিল।’ তার মেয়ে এমন কোনো কাজ করতেই পারে না বলে তিনি দাবি করেন।

বর্তমান ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেত্রী জানান, আগের চেয়ে বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি বিরাজ করছে। তিনি যখন ’৮৭-৮৮ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তখন বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায়। তখন ক্যাম্পাসে প্রতিদিনিই এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকত। তবে এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশ অনেক ভালো। এখন কোনো হানাহানি নেই। সেশনজট নেই।

Manual8 Ad Code

ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে শম্পা বলেন, ‘দল ক্ষমতায় থাকলে ছাত্র সংগঠনগুলো একটু চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ঠিক আমরা যখন ছাত্রলীগ করতাম, তখন যেমন বিএনপি-জামায়াত মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। তবে ক্ষমতায় থাকলেও ছাত্রলীগে এখনো শৃঙ্খলা রয়েছে।’

শায়লার রাজনীতিতে আসা সম্পর্কে শম্পা বলেন, ‘আমাদের পুরো পরিবার আওয়ামী লীগ করে। আমি ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ১৯৯১-৯৪ পর্যন্ত তাপসী রাবেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। আমার কর্তাও আওয়ামী লীগ সমর্থক। শায়লা মূলত আমাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েই রাজনীতি শুরু করে। ছোট থেকে দুর্দান্ত ও মেধাবী শায়লা। ২০১৪ সালে রাজশাহী কলেজে পড়াশুনা করার সময় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে পুরোপুরি জড়িয়ে পড়ে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরও ছাত্রলীগের সাথে রয়েছে। বর্তমানে সে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।’

Manual8 Ad Code

উল্লেখ্য, ২৩ জানুয়ারি, মঙ্গলবার বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী ঢাবিতে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও ছাত্রীদের ‘যৌন হয়রানি’ করা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিচারসহ চার দফা দাবি নিয়ে গিয়েছিলেন। তারা উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়ে উপাচার্যকে উদ্ধার করে। সেখানেই শায়লাসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেত্রী বাম সংগঠনের এক নারী নেত্রীকে বিবস্ত্র করে পেটান। যার স্থির চিত্র ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

Manual6 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..