জগন্নাথপুরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভূক্তভোগী জনতার আন্দোলন

প্রকাশিত: ২:৩৮ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০১৮


Manual7 Ad Code

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ভূক্তভোগী জনতা আন্দোলন করেছেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অথচ বলিরপাঠা বানানো হয়েছে সচিবকে। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

Manual2 Ad Code

জানা গেছে, জন্ম-মৃত্যু সনদ নিবন্ধন ও ভূল সংশোধনীর জন্য অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগে গত ২১ জানুয়ারি রোববার জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আবু ইমানীর বিরুদ্ধে স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষোভ মিছিল করে ইউনিয়ন পরিষদ অফিস ঘেরাও আন্দোলন করেন। এ সময় সচিব তোফাজ্জল হোসেন ও ইউপি সদস্য জাকির হোসেন সহ স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজনের হস্তক্ষেপে এবং বিষয়টি চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনাক্রমে নিস্পত্তি করা হবে বলে আশ্বস্ত করলে আন্দোলনকারীরা ফিরে যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অতি উৎসাহী ২/১টি পত্রিকা সচিবকে বলিরপাঠা বানিয়ে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে গত ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) হোসাইন মুহাম্মদ হাই জকী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতার সাথে কথা বলেন।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সরজমিনে স্থানীয় আন্দোলনকারীদের মধ্যে অন্যতম মিলাদ মিয়া বলেন, আমার মেয়ে ও ভাতিজা-ভাতিজিসহ ৩ জনের জন্ম নিবন্ধন করতে গিয়ে চেয়ারম্যান শাহ আবু ইমানী অনেক ঘুরিয়ে অবশেষে আমার কাছে ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। তখন আমি অতিরিক্ত ফিস চাওয়ার প্রতিবাদ করে চলে আসি। পরে সরকারি গেজেট সংগ্রহ করে দেখতে পাই জন্ম-মৃত্যু সনদ নিবন্ধন ও সংশোধন করতে মাত্র ২৫ থেকে ১০০ টাকা লাগে। এ সময় গেজেটের কপি বিভিন্ন জন দেখে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে ভূক্তভোগী জনতা মিলিত হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে অফিস ঘোরও করেন।

স্থানীয় দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমার যুক্তরাজ্য প্রবাসী নাতি-নাতনী ও তাদের পিতাসহ ৩ জনের জন্ম নিবন্ধন করতে গিয়ে চেয়ারম্যান শাহ আবু ইমানীকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।

Manual4 Ad Code

আন্দোলনকারীদের মধ্যে ব্যবসায়ী শাহ সাদিক মিয়া বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং সরকারি বিধি মোতাবেক জন্ম-মৃত্যু ও সংশোধনী ফিস নেয়ার দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছি।

যুক্তরাজ্য প্রবাসী খলিলুর রহমানের ভাই দিপক মিয়া বলেন, আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন চেয়ারম্যান, সচিব নয়।

Manual2 Ad Code

.ইউপি সদস্য জাকির হোসেন ও সমাজ সেবক সুহেল আহমদ খান টুনু বলেন, আন্দোলনকারীদের সামাল দিতে গিয়ে অনেক হিমশিম খেতে হয়েছে। তা না হলে বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেত। ইউপি সদস্য শাহ ছানু মিয়া বলেন, কারো প্রলোভনে তারা আন্দোলন করেছে।

ইউপি সদস্য আবদুস সামাদ ও ফজলু মিয়া বলেন, তারা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে, সচিবের বিরুদ্ধে নয়।

আরেক ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা আলাল বলেন, গত ৮ মাস আগ থেকে পুরনো গেজেটের আলোকে নিবন্ধন কাজ করা হয়েছে। এতে এফিডেভিট সহ খরচ একটু বেশি লাগায় জন ভোগান্তি বেড়েছে। বর্তমানের নতুন গেজেটের আলোকে নিবন্ধন ও সংশোধন করা সহজ হয়েছে।

এছাড়া আন্দোলনকারীদের মধ্যে আরো অনেকে বলেন, আমাদের আন্দোলন দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে, সচিবের বিরুদ্ধে নয়। অথচ ২/১টি পত্রিকা সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢেকে দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানকে রক্ষা করতে গিয়ে নিরপরাধ ব্যক্তি সচিবের বিরুদ্ধে লিখেছে। যা কোন অবস্থায় কাম্য নয়। এতে সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে।

Manual3 Ad Code

এ ব্যাপারে ইউপি সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, কারো কাছ থেকে জন্ম-মৃত্যু ও বা ভূল সংশোধনী করতে অতিরিক্ত ফিস নেয়া হয়নি। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে কারো কোন অভিযোগ নেই। কিছু মানুষ আন্দোলন করেছেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অথচ ২/১ একজন সংবাদকর্মী ঘটনাটি ভালভাবে না জেনে লিখে আমাকে বলিরপাঠা বানিয়ে দিয়েছে। যা খুবই দুঃখজনক। যেখানে আমি আন্দোলকারীদের বুঝিয়ে শান্ত করেছি।

এ ব্যাপারে আশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আবু ইমানী বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারো কাছ থেকে সরকারি বিধিমালার বাইরে কোন টাকা নেইনি।

জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) হোসাইন মুহাম্মদ হাই জকী বলেন, প্রথমে শুনেছিলাম সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানলাম, সচিবের বিরুদ্ধে নয়, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জনগণের অভিযোগ। তবে তদন্তক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..