মৌলভীবাজারে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে প্রতিবন্ধী ভাতিজাকে হত্যা করলো চাচা

প্রকাশিত: ৭:১৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০১৮

Manual3 Ad Code

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন চাচার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী ভাতিজাকে হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে এসেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর তদন্তে। গত বছরের জুন মাসে ঘটনাটি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাজীপুর গ্রামে ঘটেছিল। হত্যাকাÐের মূল পরিকল্পনাকারী নিহত আরিফের চাচা ইয়াকুত মিয়া ও হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী তোফায়েল আহমেদ গত বুধবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

Manual1 Ad Code

বৃহস্পতিবার দুপুরে পিবিআই মৌলভীবাজারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নারকীয় ঘটনার এসব তথ্য দেয় পিবিআই।

পিবিআই’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, যৌথ পুকুর নিয়ে দুই প্রতিবেশী আরবেশ আলী ও আব্দুল খালিকের বিরোধের জেরে গত বছরের ২৮ জুন দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় আরবশে আলীর ১৮ বছরের প্রতিবন্ধী ছেলে আরিফ হোসেন খুন হয়। আব্দুল খালিকের লোকের হাতে আরিফ হোসেন খুন হয়েছে এই অভিযোগে আরবেশ আলী বাদী হয়ে আব্দুল খালিককে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় হত্যা-মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. রফিকুল ইসলাম মামলার সার্বিক তদন্ত শেষে মো. আব্দুল খালিকসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এবং ৩ জনকে অব্যাহতি প্রদান করেন। তিন আসামিকে অব্যাহতি প্রদান করায় বাদী চার্জশিটের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে না-রাজী আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত বাদীর না-রাজী আবেদন মঞ্জুরক্রমে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য গত বছরের নভেম্বরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), মৌলভীবাজারকে নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআই তিনটি বিষয় সামনে নিয়ে তদন্ত শুরু করে।

Manual4 Ad Code

১. কোন একটি মারামারির ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি আহত হলে সবচেয়ে গুরুতর আহত ব্যক্তিকে সবার আগে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু এই মামলার ঘটনায় প্রতিবন্ধী আরিফ হেসেন সবচেয়ে গুরুতর আহত হলেও তাকে কেন সবার পরে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। যা খুবই রহস্যজনক।

২. মৃত আরিফ হোসেনের সুরতহাল ও ময়না তদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, তার মাথার পিছনে ও দুই পায়ের পিছনে গোড়ালির উপরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের এবং গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি বর্ণিত আছে। কিন্তু সরেজমিনে তদন্তকালে জানা যায় দুই পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল ছোঁড়াছুঁড়ি ব্যতিত অন্য কোন ঘটনা ঘটেনি।

Manual4 Ad Code

৩. গ্রাম্য মারামারির ঘটনায় সাধারণত একপক্ষ আরেক পক্ষের সবল ব্যক্তিকে আঘাতের মাধ্যমে জয়ী হওয়ার চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু অত্র মামলার ঘটনায় একজন প্রতিবন্ধীকে হত্যা করা হয়েছে। এটিও রহস্যজনক। এই তিনটি যৌক্তিক প্রশ্নকে সামনে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের চাচা ইয়াকুত মিয়াকে গত ১৩ জানুয়ারি এবং হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী তোফায়েল আহমেদকে গত ১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার আটক করে। পরদিন বুধবার তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধী প্রদান করেন।

জবানবন্ধীতে তারা জানায়- প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই ইয়াকুত আলীর পরিকল্পনায় খুন করা হয় আরিফ হোসেনকে। পরিকল্পনামতো প্রথমে নিহত আরিফের মাথায় ইয়াকুত মিয়া আঘাত করে আহত করে। পরে তার (ইয়াকুত মিয়ার) নির্দেশে হাসপাতালে নেয়ার পথে সিএনজিচালিত অটোরিক্সার ভিতর তোফায়েল, বেলাল, জুনায়েদ আরিফকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে খুন করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নিহত আরিফ হোসেনের চাচা ইয়াকুত মিয়া ও অন্যতম সহযোগী তোফায়েল আহমেদকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..