সিলেট ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:১১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০১৮
নাজমুন নাহার, জুড়ী থেকে : বাঙ্গালী জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ নামক এ দেশটিকে স্বাধীন করতে আজ থেকে ৪৬বছর আগে সারা দেশের মতো মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার অনেক মুক্তিপাগল মানুষ মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ২৫মার্চ কালোরাতের মধ্য দিয়েই বাঙ্গালী নিধন শুরু হয়। জানা গেছে,১৯৭১ সালের মাঝামাঝি সময়ে মৌলভীবাজারের জুড়ীতে পাক্বাহিনী প্রবেশ করে । শুরু করে লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতন । তখন অনেকেই শরনার্থী হয়ে আশ্রয় নেন পার্শ্ববর্তী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ধর্মনগর ও তার আশ পাশের এলাকায় । ৫ডিসেম্বর জুড়ী শত্র“ মুক্ত হলে শুরু হয় ঘরে ফেরা। জুড়ী শহরের বাস ষ্ট্যান্ড এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের ৪নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের মার্কেট এবং পুরনো জনতা ব্যাংক ভবণে পাকবাহিনীর ক্যাপ্টেন দাউদ ও তার সহযোগিরা নির্যাতন শালা তৈরী করে স্থানীয় রাজাকার ,আল্-বদর, আল্-শাম্স ও দালালদের সহযোগিতায় এলাকার নারী-পুরুষদের ধরে এনে এখানে নির্যাতন করে পাক্হায়েনারা ।মুক্তিযোদ্ধা মাসুক আহমদ বলেন, মুক্ত জুড়ীতে ফিরে দেখা গেছে,জগোদারী পুকুরকে ঘিরে রয়েছে কুকুর ও শকুনিরা। যে পুকুরটি আজো বিদ্যমান আছে ।জুড়ী মডেল স্কুল একাডেমিক ভবণের পেছনের পুকুরটিই জগোদারী পুকুর হিসেবে অত্রাঞ্চলের মানুষের কাছে পরিচিত। প্রয়াত গণপরিষদ সদস্য তৈমুছ আলীসহ উৎসুক জনতা ভীড় করেন ওই পুকুরের কাছে। হাতের শাঁখা, চুল,ছেঁড়া শাড়ি,বুকের পাঁজর,হাড় আর অসংখ্য মাথার খুলি যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে । কুকুর,শকুনের দল মৃত দেহ নিয়ে টানাটানি করছে,তখন পুরো এলাকায় মাতম শুরু হয়। হাঁউ মাঁউ করে কেঁদে উঠেন সবাই। হারিয়ে যাওয়া আপনজনকে খুঁজতে থাকেন অনেকেই ।যুদ্ধ থেকে ফেরা মুক্তিযোদ্ধা ছত্তই মিয়া শনাক্ত করেন তার পিতার বিকৃত লাশ । তবে ,আর কাউকেই শনাক্ত করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। পরে বাঁশ দিয়ে ভার তৈরী করে লাশগুলো দাফনে নেমে পড়েন সবাই । জুড়ীর মুক্তিযোদ্ধা মুজম্মিল আলী, আব্দুস শহিদ চৌধুরী খুশি,কুলেশ চন্দ্র মন্টু স্যার,আব্দুল আজিজ, তসলিম মিয়া,আব্দুল হান্নান জানান ,এটি জুড়ীর বৃহত্তম বধ্যভূমি । কিন্তু বড় অযতেœ পড়ে আছে এ স্থানটি। এ প্রজন্মের অনেকরই বুহৎ এ বধ্যভূমির তথ্যটি জানা নেই । স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও এ বধ্যভূমির সংরক্ষনে কোনো উদ্যোগ নেই। লোকচক্ষুর অন্তরালে হারিয়ে যাচ্ছে এটি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, বিগত সরকারগুলোর আমলে অত্রাঞ্চলের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহল এ স্থানটিতে স্মৃতি স্তম্ভ স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছেন । কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো সরকারই আশার বাণী শোনাননি। বর্তমানে তারা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার জাতির জনক বঙ্গ বন্ধু শেখমুজিবুর রহমানের মানষ কন্যা,দেশ রতœ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এ স্থানটিতে স্মৃতি স্তম্ভ স্থাপনের জোর দাবি জানান ।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd