মাদক সম্রাট থেকে ‘বিজলী রাণী’, লজ্জায় কাছে ভিড়ে না পুলিশ!

প্রকাশিত: ৯:৩৮ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২১

মাদক সম্রাট থেকে ‘বিজলী রাণী’, লজ্জায় কাছে ভিড়ে না পুলিশ!

Manual5 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : তার নাম ইয়াছিন আরাফাত। বাড়ি বরিশাল হলেও ছোটবেলা থেকেই চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার মোহরা এলাকায় রয়েছেন। এখানেই একটি বস্তিতে পরিবারের সঙ্গে থাকেন তিনি। স্বাভাবিক প্রকৃতির ছেলে হলেও চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার লোভে পড়ে হিজড়া বনে যান ইয়াছিন। তার নাম এখন ‘বিজলী রাণী’।

নগরের মোহরা থেকে বহদ্দারহাট এলাকা পর্যন্ত চলে ইয়াছিনের রাজত্ব। তার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ওই এলাকার ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। চাঁদা না দিলে চলে নানা ধরনের নির্যাতন।

Manual7 Ad Code

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইয়াছিনের পুরো পরিবার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সন্ধ্যার পর মোহরার মৌলভীবাজার সংলগ্ন পোল এলাকায় ইয়াছিনের নেতৃত্বে বসে রমরমা মাদকের আসর। হিজড়া হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পান না কেউ। এমনকি লজ্জায় তার কাছে ভিড়ে না পুলিশও।

Manual1 Ad Code

জানা গেছে, এক সপ্তাহে আগে মৌলভীবাজার এলাকা থেকে বরযাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন কামরুল হাসান। ওই সময় তার গাড়ি আটকে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন ইয়াছিন। পরে দুই হাজার দিতে রাজি হলেও সেই টাকা না নিয়ে বরযাত্রীর গাড়ি ভাঙচুর করে ইয়াছিনের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ। এরপর পুলিশ এসে দুই পক্ষকে সরিয়ে দিলেও হিজড়া পরিচয়ধারী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো আইনি পদক্ষেপ।

২০২০ সালে মাদক ব্যবসার অভিযোগে ইয়াছিনের ভাই হানিফকে আটক করে র‌্যাব। ওই সময় খবর পেয়ে অবরোধ করে হানিফকে ছাড়িয়ে নেয় ইয়াছিনের নেতৃত্বে হিজড়ার একটি দল।

Manual5 Ad Code

স্থানীয় সূত্র জানায়, ইয়াছিন আরাফাতের বাবা লোকমান, ভাই হানিফ ও বোন নাজু সবাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মৌলভীবাজারের পোল বস্তিসহ মোহরা এলাকা মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতে ইয়াছিনকে সুকৌশলে হিড়জা বানিয়েছে তার পরিবার। প্রতিদিন হিজড়া রূপ নিয়ে এলাকায় জোর করে টাকা তোলেন ইয়াছিন। কেউ কিছু বললে সবার সামনে উলঙ্গ হওয়ার ভান করেন। পরে বাধ্য হয়ে তাকে টাকা দেন লোকজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী নুরুল আমিন মামুন বলেন, উত্তর মোহরার অর্ধেক অংশ ও পশ্চিম মোহরাসহ বেশকিছু এলাকায় মাদক ব্যবসা চলছে। বিষয়টি আমি এখানকার সহকারী কমিশনার ও চান্দগাঁও থানার ওসিকে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

চান্দগাঁও থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মাদক ব্যবসার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন ইয়াসিন আরাফাত।

তিনি বলেন, মাদকের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। যারা বলছেন, তারা মিথ্যা বলছেন। আমাকে হেয় করতে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন।

Manual4 Ad Code

স্বাভাবিক প্রকৃতির মানুষ হয়েও হিজড়ার বেশে চলাফেরা কেন? এমন জবাবে ইয়াসিন বলেন, স্বাভাবিক প্রকৃতির মানুষ হলে আমিও বিয়ে করতাম, সংসার করতাম। ভিক্ষা করতাম না।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..