তাহিরপুরে সীমান্তে ৪ কোটি টাকার চুনাপাথর পাচারের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৭:২৭ অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০১৯

তাহিরপুরে সীমান্তে ৪ কোটি টাকার চুনাপাথর পাচারের অভিযোগ

Manual7 Ad Code

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা বীরেন্দ্রনগর সীমান্ত দিয়ে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে প্রায় ৪ কোটি টাকা মূল্যের ২ হাজার মেট্রিকটন চুনাপাথর পাচারের খবর পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে চোরাচালানীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্থানীয় এলাকার রাস্তা মেরামতের নাম করে চুনাপাথর পাচার করার পর পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও সাংবাদিকদের নাম ভাঙিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা উত্তোলন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Manual5 Ad Code

এ ব্যাপারে বাগলী শুল্ক স্টেশনের ব্যবসায়ী ও রঙ্গাছড়া এলাকার লোকজন জানান, জেলার তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের রঙ্গাছড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে চিহ্নিত চোরাচালানী মস্তোফা মিয়া মস্তো, একই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান ছেলে আলী হোসেন, বীরেন্দ্রনগর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে হযরত আলী ও মৃত জামাল মিয়ার ছেলে মঞ্জুল মিয়া ও মজিবুর মিয়া নিজেদেরকে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের সোর্স ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি শামীমা শাহরিয়ারের কর্মী পরিচয় দিয়ে রঙ্গাছড়া এলাকা দিয়ে প্রতিদিন ১০টি ট্রলি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে চুনাপাথর পাচার শুরু করে। প্রথমে তারা বাগলী শুল্ক স্টেশন ও স্থানীয় এলাকার রাস্তা মেরামতের কথা বলে ১৫-২০ ট্রলি চুনাপাথর ভারত থেকে পাচার করে এলাকার বিভিন্ন জায়গাতে নিয়ে মজুত করে রাখে।

Manual2 Ad Code

তারা জানান, এ সময় বাগলী এলসি পয়েন্টের মাঝেরকান্দা নামক এলাকার আফসার আলী নিজেকে সীমান্তের ১১৯৩নং পিলার সংলগ্ন জিরো পয়েন্টের খাস জায়গার মালিক দাবি করে। পরে চোরাচালান সিন্ডিকেটের সদস্য বিজিবি সোর্স আলী হোসেন ও পল্লী চিকিৎসক মনির সরকারি খাস জায়গার মালিক দাবিদার আফসার আলীর সাথে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে তাকে ১৫ হাজার টাকা দেয় এবং অবাধে ভারত থেকে অবৈধভাবে চুনাপাথর পাচার করে ১ ট্রলি চুনাপাথর থেকে বিজিবির নামে ২০টাকা, থানার নামে ২০টাকা, স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের নামে ১০ টাকা, বাগলী কয়লা ও চুনাপাথর আমদানীকারক সমিতির নামে ১০টাকা, বিজিবি অধিনায়কের নামে ২০টাকা, সোর্সদের নিজের নামে ১০ টাকাসহ মোট ১২০টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করে সোর্স পরিচয়ধারী চোরাচালানী মস্তোফা মিয়া মস্তো ও বাগলী কয়লা-চুনাপাথর আমদানীকারক সমিতির সচিব আকবর মিয়া। আর প্রতিদিন পাচারকৃত অবৈধ চুনাপাথরের হিসাব বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বসে খাতায় লিখে রাখে চোরাচালান সিন্ডিকেডের সদস্য আলমগীর, সেলিম ও মিন্টু।

বড়ছড়া ও চারাগাঁও শুল্ক স্টেশনের ব্যবসায়ী রহিম উদ্দিন,আব্বাস আলী, দিন ইসলাম, রহমত আলী, সবুজ মিয়া, নিয়ামত উল্লাহসহ আরো অনেকেই বলেন, বিজিবির সহযোগিতায় গত ২৭ এপ্রিল থেকে আজ শুক্রবার (২৪ মে) পর্যন্ত গত ২৭ দিনে প্রায় ২ হাজার মেট্রিকটন চুনাপাথর অবৈধভাবে পাচার করে সোর্স মস্তোফা মিয়া মস্তো ও পারুল খাসহ তাদের সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যরা নিজেরাই নৌকা বোঝাই করে নদীপথে এলাকার বাইরে নিয়ে বিক্রি করে। চোরাচালানীরা সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গত কয়েক বছরে হয়েছে কোটিপতি। কিন্তু সরকারের এই রাজস্ব উদ্ধার করাসহ চোরাচালানীদের অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধ করার জন্য আজ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি আইনগত কোনো পদক্ষেপ।

Manual1 Ad Code

এ ব্যাপারে বাগলী শুল্ক স্টেশনের কয়লা ও চুনাপাথর আমদানীকারক সমিতির সভাপতি খালেক মাস্টার বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনেক কিছুই হয়, কিন্তু আমি এসব অবৈধ কাজের সাথে জড়িত না। আমাকে ২ দিনের সময় দিন। এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে আপনাকে সব জানাব।

বীরেন্দ্রনগর বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার ফরিদ বলেন, রাস্তা মেরামতের জন্য কিছু চুনাপাথর সংগ্রহ করা হয়েছে এবং বিজিবি দাঁড়িয়ে থেকে এসব চুনাপাথর ভারত থেকে আনা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুর আলম বলেন, সীমান্ত এলাকায় আমার কোনো সোর্স নেই। সীমান্ত চোরাচালান বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Manual6 Ad Code

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর সোর্স মস্তোফা মিয়া মস্তো, আলী হোসেন, হযরত আলী, লিটন মিয়া, নজরুল মিয়া ও মঞ্জুল মিয়া গং প্রায় ১০ কোটি টাকার কয়লা ও চুনাপাথর পাচার করেছে। সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব উদ্ধার করাসহ উপরের উল্লেখিত চোরাচালানীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সুনামগঞ্জবাসী।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..