সিলেট ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার জাহিদপুর গ্রামের শ্রমিক কর্তৃক ঠিকাদার সুজাত মিয়া হত্যার মূল আসামী গিয়াস উদ্দীন (৫০) কে গ্রেফতার করেছে পিবিআই সিলেট জেলা। গ্রেফতারের পর বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ এর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তমিূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন আসামী গিয়াস উদ্দীন।
২০২৩ সালের ১৩ জানুয়ারী রাত অনুমান সাড়ে ১২ টার ঘটিকার সময় সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানাধীন জাহিদপুর তদন্ত কেন্দ্রের পাশে ভাড়াটিয়া বাসায় পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো দা দিয়ে ডিসিস্ট সুজাত মিয়া (২৬), পিতা-মৃত নুর আলী , সাং-বানেশ্বর , থানা-বানিয়াচং, জেলা-হবিগঞ্জ কে ঘুমের মধ্যে কোপাইয়া মুখ মন্ডলে একাধিক গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে আসামী গিয়াস উদ্দীন পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নার্গিস বেগম বাদী হয়ে ছাতক থানায় হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখমের অভিযোগে গিয়াস উদ্দীন সহ আরও ৪ জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানার মামলা নং-০৭ তারিখ-১৮/০১/২০২৩ খ্রিঃ ধারা-৩২৪/৩২৬/৩০৭/১০৯/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারী সুজাত মিয়া সিলেট এমএ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে উক্ত মামলায় ৩০২ পেনাল কোড সংযুক্ত করা হয়।
ছাতক থানা পুলিশ তদন্ত শেষে গিয়াস উদ্দীনকে পলাতক দেখাইয়া বিজ্ঞ আদালতে তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র নং-২৫৩ তাং-২৬/১০/২০২৩ খ্রিঃ ধারা-৩০২ পেনাল কোড দাখিল করেন। অপর আসামীদের কে অব্যাহতি দেন।উক্ত অভিযোগ পত্রের বিরুদ্ধে বাদী নারাজি দাখিল করিলে বিজ্ঞ আদালত ২১/১২/২০২৩ খ্রিঃ তারিখের আদেশে পিবিআই সিলেট জেলাকে তদন্তভার অপন করেন।
পিবিআই সিলেট জেলার তদন্তকারী অফিসার এসআই মিন্টু চৌধুরী তাহার তদন্তকালে বিশ্বস্ত গুপ্তচর নিয়োগ করিয়া অবহিত হন যে, মামলার প্রধান ও পলাতক আসামী গিয়াস উদ্দিন (৫০), পিতা-মৃত: আন্জব আলী, সাং-বানেশ্বর, বিশ্বাসের পাড়া, পোঃ-যাত্রাপাশা, ০৩নং দক্ষিন পূর্ব ইউপি, থানা-বানিয়াচং, জেলা-হবিগঞ্জ মামলার ঘটনার পর হইতে পাগলবেশে চুল দাড়ি বড় করিয়া বিভিন্ন মাজারে এবং বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তি এলাকায় আত্মগোপনে রহিয়াছে এবং সে কোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না । উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ব্যাপক গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করিয়া তদন্তকারী কর্মকর্তা গত কাল ০৯/০৮/২০২৩ খ্রিঃ সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট থানাধীন সীমান্তবর্তী মনরতল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকালে আসামীর পরনে ছিল অজস্র ছেড়া ও সেলাই করা পাঞ্জাবি। তাহার চুল, দাড়ি গোঁফ সবই বড় এবং এলোমেলো দেখা যায় । তার আচার আচরন আপাত দৃষ্টিতে পাগলের মত মনে হলেও গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তার সুস্থতা প্রকাশ পায় এবং সে নিজেকে আড়াল রাখতে অসামর্থ হয়।পিবিআই কার্যালয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে পুরো ঘটনা বর্ণনা দেয় এবং বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি প্রদান করে।
বিজ্ঞ আদালতে প্রদত্ত ফৌঃ কাঃ বিঃ এর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তমিূলক জবানবন্দিতে সে প্রকাশ করে যে, ডিসিস্ড সুজাত মিয়া একজন বিল্ডিংয়ের ঠিকাদার। ছাতক থানা এলাকায় ঘটনাস্থলের সাইটে সুজাতের অধীনে শ্রমিকের কাজ করাকালে আসামী গিয়াস উদ্দীন এর স্ত্রী সুফিয়া বেগমের ঘরে গিয়াস উদ্দীনের অনুপস্থিতিতে সুজাত মিয়া প্রবেশ করে এবং ছবি তুলে। দুই দিন পর সাইটে আসিয়া সে আকারে ইঙিগতে সুজাত মিয়ার স্ত্রীর সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক আছে মর্মে বুঝাতে চেষ্টা করে এবং তার মোবাইলে আসামী গিয়াস উদ্দীনের স্ত্রীর ছবি দেখায়। উক্ত দৃশ্য দেখিয়া গিয়াস উদ্দীন উত্তেজিত হয়ে পরে এবং ডিসিসডকে ছবি ডিলিট করতে বলে। ডিসিসড তাতে রাজি হয়না। তখন গিয়াস উদ্দীন কাজ না করেই বাড়িতে চলে যাবে বলে। কিন্তু ডিসিসড সুজাত বলে চলে গেলে তার বিরুদ্ধে চার লক্ষ টাকা চুরির মামলা দিবে। আসামী গিয়াস উদ্দীন ভয়ে কোথাও যেতে পারেন। এমনিক ডিসিসড তাকে ৮ দিন আটকে রাখে এবং বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। তখন ঘটনার দিন গত ১৩/০১/২০২৩ খ্রিঃ দিবাগত রাত অনুমান ১২.৩০ ঘটিকার সময় ডিসিসড সুজাত মিয়া সহ সকল স্টাফ ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় আসামী গিয়াস উদ্দীন ডিসিসড সুজাত মিয়ার রুমে সঙ্গোপনে ঢুকে বটি দিয়ে ঘুমন্ত সুজাত মিয়াকে উপর্যুপরি কোপাইয়া পালাইয়া যায়। এবং গ্রেফতার এড়াতে পাগলবেশে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে থাকে। তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd