শোকে স্তব্ধ সাংস্কৃতিক অঙ্গন

প্রকাশিত: ৮:১৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

শোকে স্তব্ধ সাংস্কৃতিক অঙ্গন

Manual8 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সড়ক দুর্ঘটনায় গীতিকার, সুরকার, শিল্পী পাগল হাসানের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে সুনামগঞ্জের সাংস্কৃতিক অঙ্গন। তাঁর এমন মৃত্যুকে কেউ মেনে নিতে পারছেন না। সাংস্কৃতিক কর্মীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পাগল হাসানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য পাগল হাসানের মরদেহ নিয়ে আসা হয়। এই শিল্পকলা একাডেমিতে জড়িয়ে রয়েছে পাগল হাসানের অসংখ্য স্মৃতি। লাশবাহী গাড়িতে পাগল হাসানের মরদেহ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় উপস্থিত সংস্কৃতিকর্মীসহ সাধারণ মানুষজন চোখের জলে ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা অঝোরে কেঁদেছেন। পাগল হাসানের ভক্ত, অনুরাগীদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে চারপাশ। তাঁকে শেষ বারের মতো একনজর দেখতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ। পাগল হাসানের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণ।
জেলা কালাচারাল অফিসার আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জে অনেক সংগীত মহাজনের জন্ম হয়েছে। তাদের উত্তরসূরী ছিলেন পাগল হাসান। পাগলা হাসান অসংখ্য লোকগান উপহার দিয়েছেন। তিনি নিজে গান লিখতেন ও সুর দিতেন। তার অকাল প্রয়াণে বাংলাদেশের সংগীত অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
নাট্যকর্মী সামির পল্লব বলেন, পাগল হাসান ছিলেন আমাদের আত্মার আত্মীয়। তার গানে অন্যরকম ভাব ছিল। বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে তার সুর ও গান পৌঁছে গেছে। তিনি তাঁর গানে অমর হয়ে থাকবেন।
কণ্ঠশিল্পী তুলিকা ঘোষ চৌধুরী বলেন, বিশ্বাস করতে পারছি না সে আমাদের মাঝে নেই। সে আর গান গাইবে না, এটা মেনে নেয়া কষ্টকর। আমরা শোকে স্তব্ধ। পরপারে ভালো থাকুক আমাদের পাগলা হাসান।
জেলা উদীচী’র সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আসমানে যাইওনারে বন্ধু ধরতে পারবো না তোমায়’সহ অনেক জনপ্রিয় গানের শিল্পী মতিউর রহমান হাসান (পাগল হাসান)। কিসের এতো তাড়া ছিলো তাঁর? তাঁকে নিয়ে আমরা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নতুন ইতিহাস নির্মাণের স্বপ্ন দেখছিলাম। আজ সুনামগঞ্জের সাংস্কৃতিক অঙ্গন শোকে স্তব্ধ।
পাগল হাসানের ভক্ত মোহাম্মদ মইনুদ্দিন বলেন, সেই তো কিছুদিন আগে বলেছিল, সঙ্গীত সাধনার জন্য একাকীত্বের প্রয়োজন। এই কথাটাই সত্যি হলো। এতো কিসের তাড়া ছিল তাঁর?
শিক্ষক স¤পা তালুকদার বলেন, জীবন ক্ষণস্থায়ী। এক নিমিষেই জীবনগাড়ি থেমে যায়। তবুও আমরা পথ চলি খেয়াল খুশিমতো। কতো সহজে এক তাজা প্রাণের মৃত্যু হল, যা আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। বাউলিয়ানা এই শিল্পী নিজে গান লিখতো, গান গাইত মনের সুখে, সুরের মায়া ছড়িয়ে। মাটি ও মানুষের গান গেয়ে এতো তাড়াতাড়ি মাটির সাথে মিশে যাবে কেউ কি ভেবেছিল! ওপারে ভালো থেকো পাগল হাসান।
সাংবাদিক শামস শামীম বলেন, ছোট জীবনে, সঙ্গীত পরিভ্রমণে বিশাল অর্জন ছিল পাগল হাসানের। মঞ্চ মাতিয়ে রাখা, শ্রোতাদের মন বুঝে সঙ্গীত পরিবেশন করা; তাদেরকে বুদ রাখা ছিল তার অসাধারণ গায়কী গুণ। এই অঞ্চল তথা নেট দুনিয়ার একটা বিশাল গোষ্ঠীকে গানে মাতিয়ে রেখেছিলেন পাগল হাসান। তার মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ আমি। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..