হরিপুরে প্রশাসনের নামে চাঁদাবাজি, তাদের কাছে অচল দেশের আইন-কানুন!

প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ৫, ২০২৪

হরিপুরে প্রশাসনের নামে চাঁদাবাজি, তাদের কাছে অচল দেশের আইন-কানুন!

Manual7 Ad Code

ক্রাইম প্রতিবেদক: সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার ৫নং ফতেহপুর ইউনিয়নের হরিপুর বাজার এলাকায় চার কুতুবের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে চলছে প্রশাসনের নামে চোরাচালানের লাইনম্যান পরিচয়ে চাঁদাবাজি। প্রতিদিন দিন ও রাতে অবৈধ ভারতীয় নিষিদ্বকৃত নানারকম মালামালের পরিবহণ হতে চার কুতুবের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে প্রশাসনের নামে চাঁদাবাজি চললেও অদৃশ্য কারণে যেনও এই চার কুতুবের কাছে অচল দেশের আইন-কানুন! তাতে অল্পদিনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন চার কুতুব।

 

অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় এলাকার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী অসাধু চোরাকারবারী দলের সদস্য প্রশাসনের লাইনম্যান পরিচয়ে এমন চাঁদাবাজি করলেও অদৃশ্য কারণে নিরব দর্শকের ভূমিকায় প্রশাসন। স্থানীয় সচেতন মহল হামলা ও মামলার ভয়ে এবিষয়ে কথা বলতেও নারাজ। তবে সিলেট জেলা পুলিশের ডিবি পুলিশ ও জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের নামে এই চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে দৈনিক। এই চার কুতুব সরকার দলীয় স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মী হিসেবে প্রশাসনের সমূহ সেক্টরের সহীত রয়েছে তাদের গভীর দহরম-মহরম।

 

এই চার কুতুব হলেন- একই ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের শীর্ষ চোরাকারবারী ও সিআইডি সদস্যের উপর হামলাকারী আসামি রুবেল ও আবুল আর তাদের গডফাদারের ভূমিকায় রয়েছেন চোরাকারবারী আজির রহমান ও রুবেল শরীফ ওরফে তেলচুরা।

Manual6 Ad Code

 

সরেজমিন খুঁজ নিয়ে জানা গেছে- দীর্ঘদিন ধরে এই চাঁদাবাজ চক্র স্থানীয় এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। প্রত্যেকদিন রাতে জৈন্তা, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট থানার আওতাধিন থাকা সীমান্ত এলাকা হয়ে প্রতিনিয়ত ভারতীয় চোরাইপণ্য নিয়ে দৈনিক অন্তঃত সাড়ে ৩শ’ গাড়ি চোরাইদ্রব্য প্রকাশ্যে প্রবেশ করছে এই হরিপুর বাজারে। কিন্তু প্রশাসন তা দেখেও না দেখার ভান করছে। মালবাহি ড্রামট্রাক, কাভারভ্যাণ, ডিষ্ট্রিক ট্রাক, এইচ পিক-আপ, মাইক্রোবাস, কার, লেগুনা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা পরিবহণে এসব মালামাল যাতায়াতের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে। বিদেশী অস্ত্র, বিভিন্ন ধরণের মাদক সহ এমনকি রোগাক্রান্ত গরু-মহিষও এ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। অতি নিম্নমানের এসকল পন্য হরিপুর বাজারের ভেতরে গরুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় এনে প্রত্যেক গাড়ি লোড-আনলোড করা হয়। সেখান থেকে পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র বাংলাদেশে। নিরাপদ রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে হরিপুর টু গাছবাড়ি কানাইঘাট রাস্তা ও সিলেট-তামাবিল হাইওয়ে রোডসহ সিলেট হাইওয়ে ঢাকা মহাসড়ক।

 

Manual3 Ad Code

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হরিপুর বাজারের বেশ কয়েকজন দোকান ব্যবসায়ী জানিয়েছেন- প্রত্যেকটি বড় গাড়ি থেকে ৩ হাজার, মাঝারি গাড়ি হতে ১ হাজার ও অন্যান্য ছোট গাড়ি থেকে ৫শ’ টাকা হারে চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চার কুতুবের চক্রটি। তবে এই চাঁদাবাজির বড় একটি অংশ চলে যায় থানা পুলিশের টেবিলে। এছাড়া ভাগবাটোয়ারার আরেকটি অংশ পেয়ে থাকেন স্থানীয় উপজেলা পর্যায়ের কথিত কিছু হলুদ সংবাদকর্মী। আর বাকী অবশিষ্ট চাঁদা এই চার কুতুব হজম করছে।

 

যদিও ইতোমধ্যে এসব চোরাকারবারিদের নিত্যলীলা বিভিন্ন জাতীয়-স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, জাতীয় টিভি চ্যানেল, অনলাইন টিভি চ্যানেলসহ নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষরা নিরব ভূমিকা পালন করছেন। বরাবরের মতো বক্তব্য নিতে গেলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান। বিস্তর অভিযোগ রয়েছে এরকম সংবাদ প্রকাশের পর অনেক সাংবাদিক’কে কৌশল অবলম্বন করে বিভিন্ন ধরণের হামলা-মামলায় জড়ানো হয়। এতে বিপাকে পড়েছেন সংবাদকর্মী ও স্থানীয় উপজেলার অসহায় নিরীহ আমজনতারা।

 

স্থানীয়রা মনে করেন- প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষরা এগিয়ে আসলে এসব চোরাকারবারি ও চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব। পাশাপাশি তাদের দাবি প্রশাসনের সহযোগী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই প্রতিকারে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

 

অপরদিকে শীর্ষ চেরাকারবারি আবুল মিয়া বলেন- তিনি কয়েকদিন থেকে সিলেটের বাহিরে ছিলেন শুক্রবার বাড়িতে এসে তিনি অসুস্থ হয়ে যান তাই তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেন না। চেরাকারবারি রুবেল শরীফ ওরফে তেলচুরা বলেন- তিনি কোন ব্যবসায়ী নয় এ ব্যাপারে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। শীর্ষ চোরাকারবারি রুবেল বলেন- এ ধরণের কোন কাজে তিনি জড়িত নহে। একইভাবে আজির রহমানও বিষয়টি অস্বীকার করেন।

 

Manual6 Ad Code

এব্যাপারে মুঠোফোনে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন- এনিয়ে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপরএক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার থানা এলাকার কোন পুলিশ সদস্য এরকম কাজে জড়িত পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা হরিপুর বাজার এলাকায় চাঁদা উত্তোলন করছে তাদের খুঁজ নিয়ে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে।

 

গোয়াইনঘাট থানার ওসি বলেন, তার সীমান্ত থেকে কোন ধরনের চোরাইপণ্য পাঁচার হচ্ছে না হয়ে থাকলেও তার পুলিশ সোচ্চার রয়েছে।

 

কানাইঘাট থানার ওসি জানান, তার উপজেলায় চোরাইকৃত মালামালের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরকম কাজে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

March 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সর্বশেষ খবর

………………………..