কলেজছাত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে ওসি, চাপে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে!

প্রকাশিত: ১০:৫০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২৪

কলেজছাত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে ওসি, চাপে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে!

Manual6 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম এক কলেজছাত্রীকে নিয়ে একটি রিসোর্টে কয়েকদিন ধরে রাত্রিযাপন করে পরে চাপের মুখে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

Manual6 Ad Code

গত বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় গ্রিন শালবন নামের একটি রিসোর্টে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনা জানাজানির পর ওসি’কে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বাসিন্দা। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে থাকেন। আর নববধূ মানিকগঞ্জ সদরের একটি দরিদ্র কৃষক পরিবারের মেয়ে। এইচএসসি পাস করে অনার্সে ভর্তির অপেক্ষায় রয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫-২০ দিন আগে মিজানুর ইসলাম জয়দেবপুর থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মানিকগঞ্জে থাকা অবস্থায় তিনি সিংগাইর থানায় এক বছর ও সদর থানায় তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে তিনি ঐ ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

জানা গেছে, কয়েক দিন আগে ঐ কলেজছাত্রীর অন্যত্র বিয়ের কথা শুরু হয়। এ খবর জানতে পেরে ওসি তার এক ঘনিষ্ঠ লোকের মাধ্যমে মেয়েটিকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জয়দেবপুর নিয়ে আসেন। ১০-১২ দিন ধরে তাকে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় গ্রীন শালবন নামে রিসোর্টের একটি কক্ষে রাখেন তিনি। পরে ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে ওই কটেজে রাত্রীযাপন করতেন ওসি। কিছুদিন পর কলেজছাত্রীকে তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে পাঠাতে চাইলে তিনি বাড়ি যেতে অস্বীকৃতি জানান এবং বিয়ের জন্য ওসিকে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু ওসি বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান।

Manual4 Ad Code

গত বুধবার রাতে ওসি ঐ রিসোর্টে কয়েকজন যুবক পাঠিয়ে ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখান বলে অভিযোগ ওঠে। মেয়েটিকে গ্রামের বাড়ি না গেলে প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়। রাতে ঐ কলেজছাত্রী ওসির ঘনিষ্ঠ সেই ব্যক্তিকে বিষয়টি জানান। ছাত্রীর খারাপ কিছু হলে তিনি ফেঁসে যেতে পারেন এ ভয়ে ঐ ব্যক্তি গাজীপুর জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম বুধবার রাতেই রিসোর্টে গিয়ে ছাত্রীকে উদ্ধার করে এসপি অফিসে নিয়ে আসেন। পরে ওসিকে এসপি অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। এদিকে এই খবর শুনে ওসির প্রথম স্ত্রী জয়দেবপুর ছুটে আসেন। অন্যদিকে ঐ ছাত্রীর মা এবং এক ফুপাও সেখানে হাজির হন।

Manual6 Ad Code

বৃহস্পতিবার দিনভর উভয় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিষয়টি সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ছাত্রী ওসির সঙ্গে বিয়ের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কলেজছাত্রীকে তার মায়ের জিম্মায় দিয়ে গাজীপুর জেলা শহরের একটি কাজী অফিসে ১০ লাখ টাকার দেনমোহরে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের কাবিননামায় নগদ ১ লাখ টাকা পরিশোধ দেখানো হয়। বিয়েতে মেয়ে পক্ষের উকিল নিযুক্ত করা হয় মেয়ের ফুপা মো. কছিম উদ্দিনকে। এ সময় উভয় পক্ষের আত্মীয়স্বজন উপস্থিত ছিলেন। কাজী অফিসের সহকারী কাজী মোস্তফা কামাল তাদের বিয়ে পড়ান। কাজী মোস্তফা কামাল তাদের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, প্রথম স্ত্রী অসুস্থ থাকায় ওই ছাত্রীকে তিনি দুই মাস আগে দুই লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেছেন। হঠাৎ বদলি হওয়ায় বাসা নিতে পারেননি। তাই সাময়িকভাবে রিসোর্টে নিয়ে রেখেছিলেন। সামান্য ভুল-বোঝাবুঝির কারণে তাঁকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আনা হয়েছিল। দেনমোহর কম হওয়ায় স্যারদের পরামর্শে ১০ লাখ টাকায় ফের বিয়ে করেছেন।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী সফিকুল আলম বলেন, সৈয়দ মিজানুর ইসলাম একটা দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন। মৌখিকভাবে তার নৈতিকস্খলনের অভিযোগ পেয়ে তাকে থানার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে সত্য প্রমাণিত হলে তার (মিজানুর ইসলাম) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

January 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..