অপচনশীল বর্জ্য: সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে পেয়েছে সিসিক

প্রকাশিত: ২:৩৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২

অপচনশীল বর্জ্য: সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে পেয়েছে সিসিক

নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেট মহানগরে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা এ বর্জ্য সংগ্রহ করে দক্ষিণ সুরমার পারাইরচকস্থ ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলে আসেন। এর মধ্যে অপচনশীল বর্জ্য নিয়ে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয় সিটি করপোরেশনকে। অপচনশীল বর্জ্যে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এমন অভিযোগও ওঠে বিভিন্ন সময়।

তবে এবার এ সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে পেয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে অপচনশীল বর্জ্য সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হবে ছাতকে। সেখানে লাফার্জ হোলসিমের প্লান্টে ধ্বংস করা হবে এ সলিড বর্জ্য।

এ ব্যাপারে সম্প্রতি জিওসাইকেল কোম্পানি ও সিসিকের মধ্যে চুক্তিও সম্পাদিত হয়েছে।

সিসিক সূত্র জানায়, নগরে প্রতিদিনের উৎপাদিত প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন বর্জ্য পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ২১টি প্রাইমারি ও ৪৫টি সেকেন্ডারি ডাম্পিং স্টেশনে এনে জড়ো করেন। পরে সেগুলো ট্রাকে করে পারাইরচকস্থ ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ডে’ নিয়ে ফেলা হয়। উৎপাদিত বর্জ্যরে মধ্যে ৬৭ ভাগ জৈব ও ১৭ ভাগ প্লাস্টিক। ই-বর্জ্য, মেডিকেল ও অন্যান্য বর্জ্য মিলে বাকি ১৬ ভাগ।

সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং গ্রাউন্ডের প্লাস্টিকের বর্জ্যে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন পরিবেশবাদীরা। প্লাস্টিকের তৈরি শপিং ও ট্রাভেল ব্যাগ, বোতল, আসবাবপত্র, পিভিসি পাইপ, ব্যানার, ফেস্টুন, খেলনাসহ বিভিন্ন সামগ্রী পচে মাটিতে না মেশায় পারাইরচক এলাকার কৃষিজমি ও হাওরে গিয়ে পড়ছে এসব বর্জ্য। এতে স্থানীয় কৃষি ও মাছ উৎপাদনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

এ ছাড়া মাটি দূষিত হয়ে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় অপচনশীল সলিড বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জিওসাইকেল নামক কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি সম্পাদন করেছে সিসিক। ১৪ সেপ্টেম্বর দ্বিপক্ষীয় এ চুক্তি সম্পাদিত হয়। সিসিকের পক্ষে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও জিওসাইকেলের পক্ষে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার ও মানবসম্পদ পরিচালক আসিফ ভূইয়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী সিসিক নিজ দায়িত্বে ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে সলিড বর্জ্য বাছাই করে ট্রাকে তুলে দেবে। জিওসাইকেল তা নিজ খরচে ছাতকের লাফার্জ হোলসিমের প্লান্টে নিয়ে ধ্বংস করবে। পরীক্ষামূলক এ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সফল হলে উভয়পক্ষ দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করবে।

লাফার্জ হোলসিমের কর্মকর্তা আসিফ ভূইয়া বলেন, ‘পরিবেশ অধিদফতর অনুমোদিত এটাই বাংলাদেশের একমাত্র টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি। বর্জ্যকে উদ্ভাবনী উপায়ে ব্যবস্থাপনা করাই জিওসাইকেলের উদ্দেশ্য। সারা বিশ্বের ৫০টি দেশে জিওসাইকেলের অপারেশন্স রয়েছে; যা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে আমাদের নেতৃস্থান দখলে সাহায্য করেছে।’ সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটি পরিচ্ছন্ন নগর উপহার দেওয়া। জিওসাইকেল সলিড বর্জ্য অপসারণের পাশাপাশি আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের উন্নত প্রশিক্ষণ দেবে। এতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আরও গতি আসবে।’

সিসিকের প্রধান নির্বাহী বিধায়ক রায় বলেন, ‘নগরের সব বর্জ্য প্রথমে দক্ষিণ সুরমার পারাইরচক এলাকায় নিয়ে ফেলা হবে। পরে সেখান থেকে অপচনশীল বর্জ্যগুলো ছাতকে লাফার্জ হোলসিমের প্লান্টে নিয়ে ধ্বংস করা হবে। সিলেট থেকে ছাতকে নিয়ে বর্জ্য ধ্বংস করার পরিবহন খরচও জিওসাইকেল বহন করবে।’

 

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2022
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930

সর্বশেষ খবর

………………………..