সিলেট ২৫শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:০০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বালু খেকোদের ভয়ংকর থাবা। বিলীন হওয়া পথে ৬ টি গ্রামসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্টান।
উপজেলার উত্তর ঢালারপাড়, দক্ষিণ ঢালারপাড়, মোস্তফা নগর, উত্তর মেঘারগাও, উত্তর রাজনগর ও দক্ষিণ রাজনগরের যৌথ মিলনস্থল ঢালার মুখে অর্ধশতাধিক লিস্টার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।ছোট বড় অর্ধাশতাধিক স্টিলের নৌকা দিয়ে বালু পরিবহন করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে নদী ভাঙ্গণের শিকার ৬ টি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতি বছর পাহাড়ি বন্যায় এই গ্রামগুলো ভাঙ্গণের মুখে পড়ছে। এরই “মরার উপর খাড়ার ঘা” হয়ে উঠেছে সাম্প্রতিককালে ঢালাইয়ের মুখ থেকে বালু উত্তোলন।স্থানীয় দালাল চক্রের শুকুনিদৃষ্টি পড়ায় এই গ্রাম গুলো এখন নিশ্চিত নদী গর্ভের শিকার হতে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার দুপুর ১ টার সময় ঢালার মুখ থেকে খননযন্ত্র লিস্টার মেশিন দিয়ে ইজারার সীমানা থেকে প্রায় ৩/৪ শত ফুট ভেতরে প্রবেশ করে অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে।
অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে চকবাজার-ইসলামগঞ্জ বাজারের বেরিবাধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।এতেকরে পাহাড়ি বন্যার পানি বৃদ্ধি পেলে বাধটি ভেঙ্গে যেতে পারে।এছাড়াও নদীর পাড়ে বসতি গড়ে উঠা গ্রামগুলো ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।নদীর দুই পারে অবস্থিত মসজিদ,বিদ্যালয় ও কবরস্থানগুলো ঝুকির মধ্যে রয়েছে।যে কোনো সময় ধর্মীয় ও সরকারী স্থাপনা গুলোতে ধস নামতে পারে।
ঢালার মুখ থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ঢালার পাড় গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি অভিযোগ করেছেন, কলাবাড়ি গ্রামের বিল্লাল, মাসুক মিয়া, দক্ষিণ রাজনগর গ্রামের মাসুক মিয়া (মেম্বার), ঢালার পাড় গ্রামের সফর আলী, এরশাদ, সেলিম, খায়ের গাও গ্রামের আলমগীর আলম (মেম্বার), উত্তর বুরদেও গ্রামের মোহাম্মদ আলী এই বালু সিন্ডিকেটের নের্তৃত্ব দিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ আলীর সাথে মোমাইলে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, আমার কোনো নৌকা ঢালার মুখে যায় না।
তিনি আরও বলেন চকবাজার-ইসলামগঞ্জ বাজারে যাওয়ার বেরিবাধটি আমরা কয়েকজনের অর্থায়নে নির্মিত।যদি এই বাধ ভেঙ্গে যায় তবে এই এলাকার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।যারা ঢালার মুখ থেকে বালু উত্তোলন করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হোক।
উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি সিরাজুল হক জানান,অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে গত বছরে ঢালার পাড় গ্রামের ৫ টি পরিবারের বসতঘর নদী ভাঙ্গণে বিলীন হয়ে গেছে।কিছু দালাল চক্র প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে আবাসিক এলাকা ধংসে ঢালার মুখ থেকে বালু উত্তোলনে ব্যাস্ত রয়েছে।এদের বিরুদ্ধে কথা বললেই মামলা-হামলার হুমকি দেয়।
যুবলীগ নেতা বাবুল আহমদ বলেন, আজ সকালে অভিযান দিতে এসেছিল কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সাহেব।
অভিযান শেষ হতেই ১৫/২০ মিনিটের মধ্যেই আবারও পূর্বের স্থানে ফিরে এসেছে নৌকা গুলো।
উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য তোফাজ্জল হোসেন জানান,প্রতিদিন শত শত নৌকা এই ঢালার মুখ থেকে বালু নিয়ে যাচ্ছে।যার ফলে বড় বড় গর্ত তৈরী হচ্ছে।এতে করে বর্ষার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এই গ্রাম গুলোতে ভাঙ্গন শুরু হবে।যদি ভাঙ্গন শুরু হয় তবে কে এর দায়ভার নিবে?এমনিতে শতাধিক পরিবার বিগত কয়েক দশকে নদী ভাঙ্গণের শিকার হয়ে পথে বসেছে।
২ নং পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের বাবুল মিয়া বলেন,ঢালাইয়ের মুখ থেকে বালু উত্তোলন করলে ৬/৭টি গ্রাম ভাঙ্গনের মুখে পড়বে।তাছাড়া এই জায়গাটি ইজারা সীমানার বাহিরে।এখান থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হোক।থানা প্রশাসনের উচিত ঢালার মুখে পুলিশ টহল টিম বসানো।যাতে করে এখান থেকে কেউ বালু উত্তোলন করতে পারে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য জানান, ইজারা বর্হিরভূত কোন জায়গায় থেকে বালু উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। অবৈভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে প্রতিদিন পুলিশ টহলে থাকে বলেও জানান তিনি।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd