সিলেট ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৪৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ৫, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সাত বছর আগে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে হারিয়ে যাওয়া খুশি আরা নামের এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তবে দীর্ঘ সময় পর পুলিশ হারিয়ে যাওয়া খুশিকে খুঁজে বের করলেও সন্তানকে দেখে দৌঁড়ে পালান বাবা। শেষে হতভাগা খুশির ঠাঁই হলো সেফহোমে।
পুলিশ জানায়, খুশি আরা দিনাজপুরের খানসামা থানার গুচ্ছগ্রাম পাকেরহাট গ্রামের আজিজার রহমানের মেয়ে। গরিব পিতার সংসার থেকে ২০১২ সালে রাজধানীর গুলশানের নিকেতন একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতে আসেন।
নিকেতনের যে বাসায় খুশি কাজ করতেন, সে বাসার মালিক মাসুদুজ্জামান সরকারের বাড়িও একই থানা এলাকায়। মাসুদুজ্জামানের অনুরোধেই খুশির বাবা তাকে গুলশানের নিকেতন ‘বি’ ব্লকের ৯১ নম্বর বাসায় কাজ করতে পাঠায়।
তখন খুশির বয়স ছিল ১১ বছর। খুশি টানা এক বছর মাসুদুজ্জামানের বাসায় কাজ করেন। পরে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কাউকে কিছু না বলে হঠাৎ বাসা থেকে কোথায় যেন চলে যান।
এ বিষয়ে ২০১৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পাশাপাশি মাসুদুজ্জামান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিংসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। কিন্তু কোন হদিস মিলেনি খুশি আরার।
অপরদিকে, মেয়ের কোন সন্ধান না পাওয়ায় খুশির বাবা আজিজার রহমান ওই বাড়ির গৃহকর্তা মাসুদুজ্জামানসহ তার পরিবারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে দিনাজপুর জেলার বিজ্ঞ আদালতে একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
পরে বিজ্ঞ আদালত খানসামা থানাকে নিয়মিত মামলা দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলাটি খানসামা থানা পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত করেন পিবিআই ও সিআইডি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে।
চলতি বছরের ৩০ জুন গুলশান থানা পুলিশ জানতে পারে, খুশি বনানী কড়াইল বস্তিতে বসবাস করছেন। সংবাদ পেয়ে গুলশান থানা পুলিশ কড়াইল বস্তির বউ বাজারের একটি বাসা থেকে খুশিকে উদ্ধার করে।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাবিরুল ইসলাম খুশিকে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপনের জন্য গুলশান থানা থেকে নিজ হেফাজতে নিয়ে আসেন।
খুশি আরাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার দিন সে বাসা থেকে হঠাৎ বের হয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন। পথ খুঁজে না পেয়ে সে হাটতে হাটতে গুলশানের গুদারাঘাট এলাকায় রাস্তার পাশে গাছের নিচে বসে কান্না করছিলেন।
পরে গুলশান-১ ডিসিসি মার্কেটের ক্লিনার মনোয়ারা বেগম (খোকনের মা) তাকে কাঁদতে দেখে নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাসা করেন।
খুশি তার নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে না পারায় মনোয়ারা বেগম কড়াইল বস্তিতে তার বাসায় নিয়ে যান এবং তিনিই খুশি আরাকে দীর্ঘ সাত বছর লালন পালন করেন।
পুলিশ আরো জানায়, মেয়েটিকে গ্রামের বাড়িতে নেয়া হয়। এরই মধ্যে খুশির মা গত তিন বছর আগে মারা গেছেন। খুশির সঙ্গে পুলিশ দেখে ভয়ে বাবা পালিয়ে যায়।
পরে গত শনিবার তাকে দিনাজপুরের আদালতে হাজির করা হলে উপযুক্ত অভিভাবক না পাওয়ায় আদালত তাকে সেফহোমে পাঠানোর আদেশ দেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd