করোনা রুগীর প্রতি আরো মানবিক আচরণ করা উচিত

প্রকাশিত: ১১:৩০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০২০

করোনা রুগীর প্রতি আরো মানবিক আচরণ করা উচিত

সাইফুল ইসলাম রুকন : বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন করোনা মহামারির চতুর্থ পর্যায়ে রয়েছে। এ পর্যায়ে করোনা ভাইরাসের সামাজিক সংক্রমন হবে।এই পর্যায়টি আমাদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ন। সেই অনুযায়ী দেশের আনাচে কানাচে এই ভাইরাস সংক্রমিত কেইস দিন দিন বেরেই চলছে।এ অবস্থা আরো মিনিমাম দুই সপ্তাহ চলতে থাকতে পারে।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রুগীর পরীক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসা পদ্ধতি বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্থার একটি গাইড লাইন অনুযায়ী হয়ে থাকে।যতদুর জানি বাংলাদেশেও এ গাইডলাইন মেনে করোনা ভাইরাস মোকাবিলার চেষ্টা চলছে। তারা যেটা বলেছে সেটা হল করোনা ভাইরাস অর্থাৎ কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের আশি শতাংশ অন্যান্য সাধারন ফ্লোর যেরকম চিকিৎসা যেমন নাপা এক্সট্রিম,হিস্টাসিন এরকম ঔষধে ভাল হয়ে যায়। পাঁচ থেকে দশ শতাংশ আক্রান্তদের অ্যাজিথ্রোমাইসিন এর মত এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে। বাকী দশ শতাংশ কেইসে ঝুঁকি থাকে যাদের ভ্যান্টিলেটর কিংবা অক্সিজেন সাপোর্ট লাগতে পারে।তবে আক্রান্তকালীন সময়ে রোগীর খাওয়া দাওয়ায় কিছু নতুন মেনু অনুসরন করতে বলা হয়েছে। কারন করোনা আক্রান্ত রোগীর সবচেয়ে বেশি নাকি দরকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাই রোগ প্রতিরোধ করে এরকম খাবার যেমন ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল,গরমপানি পান করা,গরম পানির বাপ নেওয়া,মধু,লেবু চা,দুধ ইত্যাদি নিয়মিত খাদ্যাভাসে রাখা।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ ও বলেছে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত সবাইকে হাসপাতালে যেতে হবে না। তবে তাদের অবশ্যই আইসোলেটেড করে রাখতে হবে। বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্থার এরকম নির্দেশিকায় কিন্তু আশার আলো দেখা যায়।

আমাদের দেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের প্রতি প্রাথমিক পর্যায়ে যেভাবে আচরন করা হয় তাতে হার্ট দূর্বল হলে অনেকেরই ফেইল করার কথা। পিপিই পরিহীত স্বাস্হ্য কর্মীরা অ্যাম্বুলেন্স করে করোনা রুগীদের যেভাবে বাড়ি থেকে নিয়ে আসে,অনেকেই (ছি এন এন/ফেসবুক সাংবাদিকরা) এটি আবার লাইভ সম্প্রচার করে রীতিমত ভীতিকর পরিবেশ তৈরী করে। এদিকে কেউ যখন পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজেটিভ আসে তখন পাড়া প্রতিবেশীও যেমন তাকে শত্রুর মত দেখতে শুরু করে।তাকে দ্রুত বাসা কিংবা গ্রাম মহল্লা থেকে বের করে দিতে পারলেই মনে হয় তারা সবাই নিরাপদ।এরকম দৃশ্য কোভিড আক্রান্ত রুগী এবং তার পরিবারের জন্য খুবই বিব্রতকর এবং এক ধরনের অসহায়ত্ব প্রকাশ পায়।যদিও আমাদের সমাজের সবসময় নিয়ম না মানার সংস্কৃতি কাজ করে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত সাধারন রোগী যদি নিয়ম মেনে বাসায় আইসোলেটেড থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ্য নিত তাহলে অনেকেই হয়ত বাসা থেকেই সুস্থ্য হয়ে যেত।সেক্ষেত্রে হাসপাতালের পরিবেশ,খাওয়া দাওয়া কিংবা গরম পানির অভিযোগও করতে হত না।আমেরিকা,ইউকে সহ অনেক উন্নত দেশে খুব গুরতর (শ্বাসকষ্ট ) না হলে আক্রান্তদের বাসায় থেকেই চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ্য প্রদান করা হয়েছে।

নিজের অবহেলায় কেউ যখন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে আবার অন্যের অবহেলার শিকার হয়েও অনেকে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। একই সাথে জনগন কে করোনা থেকে সুরক্ষিত রাখতে কিংবা চিকিৎসা সেবায় জড়িত পুলিশ,ডাক্তার স্বাস্হ্য কর্মী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হচ্ছে। কাজেই করোনা রুগীর প্রতি সবার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা উচিত। তার প্রতি আরো মানবিক আচরন করা উচিত ।মানসিক সাপোর্ট খুব প্রয়োজন এ সময়। তাহলেই হয়তো আর শুনতে হবেনা হাসপাতাল থেকে করোনা রুগী পালিয়ে গেছে কিংবা করোনা উপসর্গ নিয়েও ভয়ে অনেকে কোভিড টেস্ট হতে দুরে থাকবে না।

পাশাপাশি কোভিড আক্রান্ত সাধারন রোগী যাদের নিজেদের বাসা বাড়িতে আইসোলেট থেকে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে তারা যদি হাসপাতালে যেতে না চায় তাদেরকে যেন জোরপূর্বক হাসপাতালে না নেওয়া হয়।

লেখকঃ সাইফুল আলম রুকন, সিলেট জেলা সহকারি মিডিয়া অফিসার ও জেলা গোয়েন্দা শাখা (উত্তর জোন)’র অফিসার ইনচার্জ ।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..