সিলেট ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:০০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গণহারে চাঁদাবাজির ঘটনায় সিএমপির কনস্টেবল সোহেল রানাসহ গ্রেপ্তারকৃত তিনজনের বিরুদ্ধে অবশেষে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল বুধবার ভুক্তভোগী এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করলে তাদেরকে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এদিকে কনস্টেবল সোহেল মাদকাসক্ত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে আগেও বিভাগীয় মামলা দায়ের হয়েছিল। এরপর সে পলাতক ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইনে কর্মরত কনস্টেবল মো. সোহেল রানা, তার সোর্স ইমরান ও মোনাফকে নিয়ে সীতাকুণ্ডের কুমিরা বাজারে একটি প্রাইভেটকারযোগে উপস্থিত হয়। এরপর সোহেল রানা নিজেকে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের এস আই পরিচয় দিয়ে লকডাউনের সময় কেন দোকান খোলা হয়েছে- এমন প্রশ্ন করে দোকানিদের গ্রেপ্তারের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রত্যেক দোকানি থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় শুরু করে। এভাবে কুমিরা ডাল-চাল মিয়া মাজার সড়কে গণ চাঁদাবাজির কথা ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়।
এক পর্যায়ে তারা তারা তিনজনকে আটক করে রেখে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন কুমিরার ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম চৌধুরী ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বর মো. আলাউদ্দিন। তারা সীতাকুণ্ড থানায় খবর দিলে ওসি মো. ফিরোজ হোসেন মোল্লা ও ওসি (তদন্ত) মো. শামীম শেখ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। সোহেল রানা খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা থানাধীন হাতিমোড়া গ্রামের হেমায়েত উদ্দীনের ছেলে।
কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোর্শেদুল আলম চৌধুরী ও ইউপি সদস্য মো. আলাউদ্দিন জানান দামপাড়া পুলিশ লাইনের কনস্টেবল সোহেল রানা, তার দুই সঙ্গী ইমরান ও মোনাফ মিলে গণ চাঁদাবাজি শুরু করে। এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের ক্যাশ বাক্স থেকে জোর করে টাকা লুট শুরু করলে সবার সন্দেহ হয়। এতে এলাকাবাসী তাদেরকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে আমরা জানতে পারি কুমিরার আগে জোড়আমতল নামক স্থানেও সে চাঁদাবাজি করেছে। শেষে আমাদের উপস্থিতিতে ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা তাদেরকে থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে এ ঘটনায় গতকাল বুধবার ভুক্তভোগী এক মুদি দোকানি কুমিরা রহমতপুর গ্রামের মৃত ফোরকান আলীর ছেলে মো. দিদারুল আলম বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেন। তাতে উল্লেখ করা হয় সোহেল রানা দিদারের মুদি দোকান থেকে ২৫ হাজার টাকা, নুর হোসেনের দোকান থেকে এক হাজার, কাস্টমার সেলিমের পকেট থেকে দুই হাজার টাকাসহ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এস আই টিবলু কুমার মজুমদার বলেন ঘটনাটি আমি তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, কনস্টেবল সোহেল রানা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করেছে। এ কারণে এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করলে বুধবার আমরা কনস্টেবল সোহেল রানাসহ তিনজনকে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালত জেলহাজতে পাঠায়।
এদিকে অভিযুক্ত কনস্টেবল সোহেল রানা একজন মাদকাসক্ত বলে জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান। তিনি সাংবাদিকদের জানান, সে সিএমপির পুলিশ লাইনে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় ডোপ টেস্টে মাদক সেবন ও বিভিন্ন অপকর্মের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হলে সে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে তার বাড়ির ঠিকানায় চিঠিপত্র পাঠালেও সে গ্রহণ করছিল না। এসব ঘটনার তদন্ত শেষে চূড়ান্তভাবে দোষী প্রমাণিত হলে সে চাকরিও হারাতে পারে বলে জানান তিনি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd