ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি, ১০ টাকার বালু ৭০ টাকায় বিক্রি!

প্রকাশিত: ৪:১৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯

ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি, ১০ টাকার বালু ৭০ টাকায় বিক্রি!

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ১০-১২ টাকা সেফটি দরে বিক্রি করেন শ্রমিকরা। সেই বালু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয় ৬৫-৭০ টাকা সেফটি দরে।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকায় বালু আনতে অন্তত ৮-১২টি স্পটে চাঁদা দিতে হয়। ফলে কয়েকগুণ দাম বাড়িয়ে বালু বিক্রি করতে হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, আরনারপুর, পাঠানপুর, সোয়ালা, দৌলতপুর, ঘাগড়া হতিপুর, হাজিরপুরসহ বিভিন্ন ঘাটে চাঁদা দিতে হয়। কোথায় শ্রমিক ইউনিয়ন আবার কেউ সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েছে দাবি করে প্রতি বালু বোঝাই ভলগেট থেকে মোট দুই-তিন হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে।

সম্প্রতি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা হয়ে হাওর পথে ট্রলারে করে তাহিরপুর উপজেলায় যাওয়ার পথে একটি কয়লা বোঝাই ভলগেটের শ্রমিকের সঙ্গে কথা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘হাওরের বিভিন্ন ঘাটে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। টাকা না দিলে বিভিন্ন সমস্যা করে। ভলগেট আটকে দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা আদায়ের পরিমাণ বাড়ায় বালু, কয়লা, পাথারের দামও বাড়াতে বাধ্য হচ্ছি।’

তাহিরপুর উপজেলার লাউয়েরগড় এলাকার বালু বোঝাই ভলগেটর শ্রমিক অবুল বলেন, ‘বালু বোঝাইয়ের পর থেকে ঘাটে ঘাটে নামে-বেনামে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে ভলগেট আটকে দেয়। বিভিন্ন ধরনের হেনস্তা করা হয়।’

তাহেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসিফ ইমতিয়াজ বলেন, ‘সরকার নির্ধারণের বাইরে যেসব ইজারাদার চাঁদা তুলছে তারা অবৈধ। তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে।’

আনারপুর ঘাটের বৈধ ইজারাদার দাবিদার ফয়সাল। তার কাছে কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি। তবে যে রশিদ দিয়ে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে তাতে কিছু লেখা নেই, শুধু টাকার অংক লেখা আছে।

ইজারাদার আজাদ হোসেনের ম্যানেজার ইব্রাহিম বলেন, ‘আমাদের এই ঘাটে পাথর ও বালির ভলগেট থেকে টাকা নেওয়া হয়।’

তবে তিনিও ইজারা নেওয়ার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, ‘বালুভর্তি ভলগেটে চাঁদাবাজির বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে যদি কেউ অভিযোগ করেন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2019
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..