সিলেটে আদম ব্যবসায়ীর প্রতারণায় নি:স্ব পরিবারের দিন কাটছে প্রাণনাশের ভয়ে

প্রকাশিত: ৫:৫৭ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০১৯

সিলেটে আদম ব্যবসায়ীর প্রতারণায় নি:স্ব পরিবারের দিন কাটছে প্রাণনাশের ভয়ে

Manual6 Ad Code

পরিবারকে আর্থিক অস্বচ্ছতা থেকে মুক্তি দিতে প্রতিনিয়ত বিদেশ পাড়ি জমাচ্ছেন দেশের তরুণরা। জীবনমান পরিবর্তনের রঙিন স্বপ্ন বুনে মৃত্যুর ভয়কে পেছনে ফেলে অজানায় পা বাড়ান। পরিবার ঋণকরে, কখনো শেষ সম্বল ভিটেমাটি বিক্রি করে সন্তানকে বিদেশ পাঠান দালালের প্ররোচনায়। জীবনের প্রয়োজনে টাকা রোজগার করতে গিয়ে অনেকের যেমন জীবন প্রদীপ নিভে যায় তেমনি পৈত্রিক ভিটেমাটি হারিয়ে পথে বসে কোনো পরিবার।

Manual8 Ad Code

তেমনই একজন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জহির আলী (৪০)। তিনি চান্দাই তালুকদার পাড়ার মৃত আমির আলীর পুত্র। আদম ব্যবসায়ীদের লোভনীয় প্ররোচনায় দশ লক্ষ টাকা দালালের হাতে দিয়ে গ্রীস যেতে না পারায় জহির আলী এখন দিশেহারা। ধারদেনা আর জায়গা বিক্রির টাকা ফেরত পেতে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। করেছেন মানব পাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৬(২), ৭ ও ৮ ধারায় মামলা (নং- ০৮/২০১৮)। মামলা সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরীর ধোপাদিঘীপারের আল ফালাহ্ টাওয়ারের এয়ার শাহ্পরান ইন্টারন্যাশনাল নামক ট্রেভেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান জুবেল তার ভাই রনি দশ লক্ষ টাকায় জহিরকে গ্রীসে পাঠাতে প্রথমে ডুবাই পাঠায়। ডুবাই যাত্রার আগে তারা চার লক্ষ টাকা নেয় এবং বাকি টাকা ডুবাই পৌছে গ্রীসের ভিসা লাগার পর দেয়ার কথা হয়।

গত ১৩/০৮/২০১৮ ইং তারিখ জহির ডুবাই পৌছলে ট্রেভেল এজেন্সির লোকজন জহিরকে একটি বাসায় রাখে। সেখানে তিনমাস রাখার পরও গ্রীসের ভিসা লাগাতে ব্যর্থ হয় জুবেল ও রনির এজেন্সি। এদিকে ডুবাই ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কারনে জহির ডুবাইতে অবৈধ অধিবাসী হয়ে যাওয়ায় দেশে ফিরতে ছটফট করেন। এ অবস্থায় দালাল চক্র অজ্ঞাত আরেক বাসার একটি কক্ষে বন্দি রেখে জহিরকে বাংলাদেশ থেকে টাকা নিতে প্রতিনিয়ত শারীরিক নির্যাতন করে, ভয় দেখায় খুন করার। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে জীবন বাঁচাতে জহির একসময় দেশে পরিবারকে অবশিষ্ট টাকা জুবেল ও রনিকে দিতে বলেন। জহিরের ভাই তার দোকানের মালামাল ও তাদের চাচাত ভাইয়ের কাছে জায়গা বিক্রি করে বাকি টাকা ০২/০১/২০১৯ ইং তারিখে জুবেল ও রনি বাড়ি গিয়ে পরিবারের লোকজন দিয়ে আসে। টাকা পাওয়ার খবর পেয়ে দালাল চক্র জহিরকে আবুদাবী শ্যামা নামক স্থানে রাতের আধাঁরে অসুস্থ অবস্থায় ফেলে যায়। পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা করান। পরে জেলে সাজা ভোগকরে বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে ফেরেন জহির। শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় জহির উন্নত চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে প্রতারকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। চতুর জুবেল ও রনি মামলা দায়েরের আগে হাইকোর্ট থেকে আগান জামিন নিয়ে পুনরায় গত ১৫/০৫/১৯ইং তারিখে সিলেট চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবারো জামিন নিতে গেলে আদাল জামিনা না মঞ্জুর করে তাদের কারাগার প্রেরণ করে। আদম ব্যবসায়ী দুইভাই জেল হাজতে থেকে মামলা তোলে নিতে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। জায়গাজমি হারিয়ে প্রাণনাশের ভয়ে দিনযাপন করছেন জহিরের পরিবার।

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..