সাইফুর রহমানকে খুনের পর যা করেছিলো রুপা ও তার প্রেমিক

প্রকাশিত: ৫:৩৩ অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০১৯

সাইফুর রহমানকে খুনের পর যা করেছিলো রুপা ও তার প্রেমিক

Manual7 Ad Code

সিলেট নগরীর মদন মোহন কলেজের খন্ডকালীন প্রভাষক সাইফুর রহমানকে নগরীর হোটেলে হত্যার পর লাশ ফেলে দেওয়া হয় দক্ষিণ সুরমার হাওরের পাশে। সিএনজিচালিত যে অটোরিকশায় করে লাশ ফেলে আসা হয় সেই অটোরিকশা চালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২৩ মে বৃহস্পতিবার আদালতে লাশ ফেলে আসার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন চালক হাফিজুর রহমান।

Manual7 Ad Code

জানা যায়, ২২ মে বুধবার নগরীর রিকাবীবাজার থেকে অটোরিকশা চালক হাফিজুৃর রহমানকে গ্রেপ্তার করে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ। এরপর ২৩ মে বৃহস্পতিবার তাকে সিলেট মহানগর ৩য় হাকিম সাইফুর রহমানের আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন হাফিজুর। হাফিজুর রহমান নেত্রকোনা উপজেলা ঠাকুরকোণা গ্রামের মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরাণ থানার ২নং ওয়ার্ডের টুলটিকর মিরাপাড়াস্থ বাবুল মিয়ার কলোনিতে বসবাস করতেন। দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল বলেন, হাফিজুরকে গ্রেপ্তারের পর ২৩ মে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে লাশ ফেলে আসার কথা স্বীকার করে হাফিজুর। আদালতে হাফিজুরের জবানবন্দির বরাত দিয়ে ওসি বলেন, সাইফুরের লাশ নগরীর হোটেল মেহেরপুর থেকে দক্ষিণ সুরমার হাওরের পাশে ফেলে আসার ব্যাপারে তার সাথে চুক্তি হয়েছিল। বড় অংকের অর্থের লোভে সে লাশ ফেলে আসে বলে স্বীকারোক্তিতে জানায় হাফিজুর। তাসনিম রুপা ও মুজাম্মিল হোসেন লাশ ফেলে আসার জন্য হাফিজুরের সাথে চুক্তি করেন বলেও আদালতকে জানান তিনি।

চাঞ্চল্যকর এই মামলায় আগেই তাসনিম রুপা ও মুজাম্মিল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দেন তারা। ত্রিমুখী প্রেমের জেরে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানায় পুলিশ।

জানা যায়, সিলেট নগরীর শাহপরান এলাকার খিদিরপুর গ্রামের শফিকুর রহমানের বাসায় লজিং শিক্ষক হিসেবে থাকতেন সিলেট মদন মোহন কলেজের প্রভাষক মো. সাইফুর রহমান (২৯)। শফিকুর রহমানের মেয়ে নিশাত তাসনীম রুপা (২০) কে পড়াতেন তিনি। একপর্যায়ে রুপাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন সাইফুর। এতে ক্ষুব্ধ হন রুপার প্রেমিক মোজাম্মিল হোসেন (২৪)। রুপা ও মোজাম্মিল পরিকল্পনা করে হত্যা করেন সাইফুরকে। ১ এপ্রিল সোমবার দুপুরে মোজাম্মিল ও রুপা সিলেট মহানগর ৩য় আদালতের হাকিম সাইফুর রহমানের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন তথ্য জানান।

Manual8 Ad Code

মদন মোহন কলেজের শিক্ষক সাইফুর হত্যার ঘটনায় ৩১ মার্চ রবিবার রাতেই নগরীর টিলাগড় থেকে ছাতক উপজেলার আলমপুর গ্রামের মোজাম্মিল হোসেন (২৪) এবং খিদিরপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিশাত তাসনীম রুপা (২০) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ১ এপ্রিল সোমবার নিহতের মা রনিফা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। যার নং-০১ (০১/০৪/২০১৯)।

তবে সাইফুররের ঘনিষ্টদের সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক সাইফুর রহমানের সাথে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে প্রেম চলছে রুপার। রূপাও ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী। সম্প্রতি মোজাম্মিলের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন রুপা। এতে বাধা দেন সাইফুর। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হত্যা করা হয়। দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল বলেন, সাইফুরের লাশ উদ্ধারের পরই তদন্তে নামে পুলিশ। এতে প্রেমসংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টি উঠে আসে। এই সূত্র ধরে মোজাম্মিল ও রুপাকে আটক করা হয়। ১ এপ্রিল সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করা হলে হত্যার দায় স্বীকার করে তারা ১৪৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। প্রেমসংক্রান্ত বিরোধের কারণেই সাইফুরকে হত্যা করা হয় বলেও জবনবন্দিতে জানায় তারা। কলেজ শিক্ষক সাইফুর হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা জানান।

Manual2 Ad Code

প্রসঙ্গত, মদন মোহন কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক সাইফুর রহমান গোয়াইনঘাট উপজেলার ফলতইল সগাম গ্রামের মো. ইউসুব আলীর ছেলে। ৩১ মার্চ রবিবার সকালে দক্ষিণ সুরমার তেলিরাই এলাকায় তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন।

Manual7 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..