সিলেট ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৪০ অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০১৮
নিজস্ব সংবাদদাতা :: সিলেট সদর উপজেলার ৭নং মোগলগাঁও ইউনিয়নের ১, ২, ৩, ৪ ও ৫নং ওয়ার্ডের নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার মোঃ সিরাজুল ইসলাম কর্তৃক বাল্যবিবাহের রেজিস্ট্রেশন করায় তার লাইসেন্স বাতিল ও তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, যুগ্ম সচিব (প্রঃ-২), সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন জানিয়েছেন এলাকাবাসীর পক্ষে ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের আবু ইসা মোঃ হায়দার ও হেলাল আহমদ।
তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৬/০৫/১৮ইং তারিখে সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার বরাবরে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিচার শাখা-৭ এর সিনিয়র সহকারী সচিব বুলবুল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে ৭নং মোগলগাঁও ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মোঃ সিরাজুল ইসলাম ফতেহপুর গ্রামের মৃত মোঃ শাহিদ আলীর পুত্র কামরুজ্জামানের সাথে খালপার গ্রামের মোঃ আব্দুস সাত্তারের কন্যা মোছাঃ শিউলী বেগমের বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করেছেন কিনা এবং বরের দাখিল পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ও জন্ম সনদ অনুযায়ী জন্ম তারিখ ০২/০৫/১৯৯৯ইং হওয়া সত্ত্বেও নিকাহ নামায় জন্ম তারিখ ০২/০৫/১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ উল্লেখে বিবাহ রেজিস্টেশন করেছেন কিনা সে বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক একটি সুস্পষ্ট তদন্ত প্রতিবেদন পত্র পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের প্রেরণে নির্দেশ দিয়েছেন।
আবেদন সূত্রে জানা যায়, বিগত ২৫/১১/২০১৭ইং তারিখে কাজী মোঃ সিরাজুল ইসলাম জালালাবাদ থানাধিন ফতেহপুর গ্রামের মৃত মোঃ শাহিদ আলীর পুত্র কামরুজ্জামানের সাথে খালপার গ্রামের মোঃ আব্দুস সাত্তারের কন্যা মোছাঃ শিউলী বেগমের বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করেছেন। উক্ত বিবাহের নিকাহ নামায় তিনি কনের জন্ম তারিখ ০৮/০৫/১৯৯৫ইং এবং বরের জন্ম তারিখ ০২/০৫/১৯৯৬ইং লিখেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বরের দাখিল পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ও জন্ম সনদ অনুযায়ী জন্ম তারিখ ০২/০৫/১৯৯৯ইং। তাই বিবাহের দিন তার বয়স হয়েছিল ১৮ বছর ৬ মাস ২০ দিন।
বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ১৯২৯ (ধারা ১২) অনুযায়ী বরের বয়স কমপক্ষে ২১ এবং কনের বয়স কমপক্ষে ১৮ না হলে কোন কাজী (নিকাহ রেজিষ্টার) বিয়ে রেজিস্ট্রি পারবেন না। এ ক্ষেত্রে কাজী মোঃ সিরাজুল ইসলাম বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ১৯২৯ (ধারা ১২) অমান্য করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাই তার লাইসেন্স বাতিল সহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। যাতে ভবিষ্যতে অন্য কাজী বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন অমান্য না করেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাল্য বিবাহ রোধকল্পে যে সফলতা দেখিয়েছেন এবং সিলেট বিভাগকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে যা বাংলাদেশ সহ গোটা বিশে অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছে। যেখানে বিয়েতে কনের বয়স ১৮ বছর এবং বরের বয়স ২১ নির্ধারণ করা হয়েছে সেখানে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অপপ্রয়াসে নিকাহ রেজিস্ট্রার মোঃ সিরাজুল ইসলাম তথ্য গোপন করে একটি বাল্যবিবাহ রেজিস্ট্রারী করেছেন। যা আইনগত দন্ডনীয় অপরাধ এবং এই ঘটনায় সিলেট সদর সহ সিলেট বিভাগকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণাকে কলঙ্কিত করেছে। ফলে সরকারের বাল্য বিবাহ রোধ এর সফলতা ম্লান করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ক্লাব’র চেয়ারম্যান সাংবাদিক জাকির হোসেন মনির এর সাথে মুটোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্রাইম সিলেটকে বলেন একজন সরকারি কাজী হয়ে এমন জঘন্য কাজ কিছুতেই করতে পারেননা।
এই বাল্য বিবাহ পড়ানোর কারিগর কারিগর কাজী সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন জনসাধারণের স্বার্থে প্রয়োজনের অন্যতায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ক্লাব উচ্চ আদালতে যেতে বাধ্য হবে।
উক্ত বিষয়ে মোঃ সিরাজুল ইসলাম এর সাথে মুটোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্রাইম সিলেটকে বাল্য বিবাহ নিবন্ধনের বিষয়টি শিকার করেছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd