স্বামীর উদ্দেশে নিপা’য় আক্রান্ত নার্সের হৃদয়বিদারক চিঠি

প্রকাশিত: ৫:২০ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০১৮

স্বামীর উদ্দেশে নিপা’য় আক্রান্ত নার্সের হৃদয়বিদারক চিঠি

Manual1 Ad Code
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ‘সাজি চেট্টি, আমি হয়তো আর বেশিক্ষণ পৃথিবীর আলো দেখবো না। তোমাকে শেষ বার দেখে যেতে পারবো বলেও মনে হয় না। আমায় ক্ষমা করো। সন্তানদের প্রতি যত্ন নিও। আমাদের নিষ্পাপ শিশুদের নিয়ে দূরে কোনো দূর্গমাঞ্চলে আশ্রয় নিও। তারা আমাদের মত পিতৃহারা হোক সেটা আমি চাই না। তোমাদের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা।’

এভাবেই মৃত্যুশয্যায় বসে স্বামীর কাছে চিঠিতে নিজের শেষ আকুতি জানিয়ে গেছেন ৩১ বছর বয়সী নার্স লিনি পুথুশ্রী। যিনি সোমবার দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যের কোজিকোডির পেরামবারা হাসপাতালে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

Manual5 Ad Code

দুই বছর ও সাত বছরের দুই শিশুর জননী লিনি পুথুশ্রী বিদায় নেওয়ার আগে তার পরিবারের কাউকে শেষবারের মতো দেখে যেতে পারেননি। নিপা ভাইরাসের জীবাণু যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য হাসপাতালের বিশেষ ইউনিট থেকে তাকে সরিয়ে দ্রুত সমাধি করা হয়। তবে সেটা পরিবারের সম্মতি নিয়েই করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পেরামবারা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ।

Manual5 Ad Code

লিনি ছিলেন কেরেলায় নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবার জন্য নিযুক্ত প্রথম দলের একজন নার্স। যিনি অন্য রোগীর কাছ থেকে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন।

ডাক্তারদের নেটওয়ার্ক বলে পরিচিত দৈনিক রাউন্ডের প্রধান নির্বাহী ডা. দিপু সেবিন এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‘নিপা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে আমাদের নার্স লিনির মৃত্যু হয়েছে। তিনি মানুষকে বাঁচাতে গিয়েই নিপার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার মাত্র ৩১ বছর বয়স। দুই শিশুর জননী। যদি তাকে শহিদ না বলা হয়, তাহলে কে শহিদ সেটা আমি জানি না।’

Manual5 Ad Code

অন্যদিকে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে কেরেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক কে জে রেনা এ পর্যন্ত নিপা ভাইরাসে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এর মধ্যে একই পরিবারের তিন সদস্য রয়েছে।

কোজিকোডি ও পার্শ্ববর্তী মালামপুরামের এ পর্যন্ত ১২ জনের মতো মৃত্যু বরণ করেছেন। যাদের নিপা ভাইরাসের মত উচ্চমাত্রার জ্বরসহ বিভিন্ন লক্ষণ ছিলো। একইসঙ্গে একটি অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে, কোজিকোডি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরো দুই নার্স নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

Manual8 Ad Code

নিপা ভাইরাস প্রধানত ফল খাওয়া বাদুড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। এর প্রধান লক্ষণগুলো হলো, প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট, মস্তিষ্কের প্রদাহ, জ্বর, মাথাব্যথা, নিদ্রাহীনতা, চিনতে না পারা ও ভুল বকা। এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোমায় চলে যেতে পারেন। এটি একজনের থেকে আরেকজনের শরীরে চলে যেতে পারে। বর্তমানে ভারতের কেরালা রাজ্যে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে সেখানকার ডাক্তারদের সাহায্য করার জন্য কেন্দ্র থেকেও একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হয়েছে।

নিপা ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। ১৯৯৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত মালয়েশিয়া, ভারত ও বাংলাদেশে ২৬০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

May 2018
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..