বিচার বিলম্ব করতে আদালতে আসছেন না খালেদা জিয়া

প্রকাশিত: ৯:৪২ অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০১৮

Manual2 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ বিলম্বিত করতে আইনজীবীদের পরামর্শেই খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে তিনি এ অভিযোগ করেন।

এদিন বেলা ১১টা ২৪ মিনিটের দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতেই খালেদা জিয়ার জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তার আইনজীবী।

Manual4 Ad Code

এরপর দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, এদিন মামলার যুক্তিতর্কের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। একই সঙ্গে কারাগারে থাকা মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার নির্দেশও ছিল। কিন্তু তিনি আদালতে আসেননি। এর আগেও চারটি ধার্য তারিখে একই অবস্থা হয়েছে। তিনি অসুস্থতার কথা বলে আদালতে আসতে চান না। খালেদা জিয়া যেখানে আছেন, সেখান থেকে কিছু দূর হেঁটে গাড়িতে উঠতে হয়। কিন্তু ওইটুকু পথই তিনি হাঁটতে চান না বা হুইলচেয়ারে যেতে চান না। এ ছাড়া কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে জানিয়েছেন তিনি আনফিট।

মোশাররফ হোসেন কাজল আরও বলেন, আমার বিজ্ঞ বন্ধুরা (খালেদা জিয়ার আইনজীবী) ঘন ঘন তার (খালেদা জিয়া) সঙ্গে দেখা করে যেভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন, তিনি (খালেদা জিয়া) সেভাবেই চলছেন। মামলার বিচার কার্যক্রম যাতে এগিয়ে যেতে না পারে এ জন্যই মূলত তিনি আইনজীবীদের পরামর্শে আদালতে আসছেন না। তিনি সম্মানিত মানুষ, তাই তাকে আদালতে আনতে জোর করাও যাচ্ছে না।

Manual2 Ad Code

দুদক প্রসিকিউশনের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা কোনো প্রতিউত্তর দেননি। শুনানি শেষে আগামী ৬ জুন পরবর্তী যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন। একই সঙ্গে ওইদিন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিন বর্ধিত করেন।

এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া, মো. মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মো. জাকির হোসেন ভূইয়া, আমিনুল ইসলাম, জিয়া উদ্দিন জিয়া, এম হেলাল উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় দুদকের পক্ষ থেকে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারির আবেদন করা হয়। দুদকের করা ওই আবেদনের ওপর ২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি হয়। ওই দিনও খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারির বিরোধিতা করেছিলেন। শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৩ মার্চ আদালত খালেদা জিয়াকে হাজিরের এ আদেশ দেন।

এরপর গত ২৮ মার্চ, ৫ এপ্রিল ও ২২ এপ্রিল খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরের দিন ধার্য থাকলে কারা কর্তৃপক্ষ অসুস্থতার জন্য তাকে হাজির করেনি বলে আদালতকে জানায়। সর্বশেষ এ দিনও অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজির করা হয়নি খালেদা জিয়াকে।

এরও আগে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ সব আসামির সর্বোচ্চ সাজা অর্থাৎ ৭ বছর কারাদণ্ড দাবি করে দুদক প্রসিকিউশন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরু হয়।

খালেদা জিয়া ছাড়া মামলায় অপর আসামিরা হলেন, তার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন সহকারী একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। মামলায় হারিছ চৌধুরী পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। আর অপর দুই আসামি জামিনে আছেন।

Manual3 Ad Code

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং প্রত্যেকের ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জারিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত।

রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। প্রথম শ্রেণির কারাবন্দি হিসেবে বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

May 2018
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..