বিশ্বনাথে স্ত্রীকে নির্যাতন করে গর্ভের সন্তান নষ্ঠ : অভিযোগে প্রবাসীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ২:১১ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৮


Manual5 Ad Code

ক্রাইম ডেস্ক : সিলেটের বিশ্বনাথে ‘গর্ভে থাকা ৪ মাসের সন্তান নষ্ঠ ও স্ত্রীকে নির্যাতন করা’র অভিযোগে  যুক্তরাজ্য প্রবাসীসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ১ (তাং ১.০২.১৮ইং)। গত ২৪ জানুয়ারী রাত ৯টার দিকে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চড়চন্ডি গ্রামস্থ প্রবাসী আবদুল মতিনের স্ত্রী রাজনা বেগমের পৈত্রিক বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্তদের হামলায় রাজনার পিতা জহির উল্লাও আহত হয়েছেন।

গত ২৯ জানুয়ারী রাজনার পিতা জহির উল্লা বাদী হয়ে সিলেট আদালতে বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর-নোয়াগাও গ্রামের মৃত আনফর আলীর পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবদুল মতিন (৬০), রাজন আলী (৩২), আলম মিয়া (৩২) ও মৃৃত ক্বারী নছিব আলীর পুত্র লোকমান আলী (৪০)’কে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করেন। যার নম্বর বিশ্বনাথ সি.আর মামলা নং ২১/২০১৮ইং। এরপর আদালতের নির্দেশে ১ ফেব্রুয়ারী বিশ্বনাথ রাতে থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।

Manual1 Ad Code

মামলার বাদী তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর কাবিন রেজিষ্ট্রারীর মাধ্যমে তার (জহির উল্লাহ) মেয়ে রাজনা বেগম’কে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবদুল মতিনের কাছে বিয়ে দেন। বিয়ের ১ম মাসেই গর্ভবর্তি হন রাজনা বেগম। রাজনার গর্ভবর্তি হয়েছে জানতে পেরে তার (রাজনা) স্বামী আবদুল মতিন’সহ অভিযুক্তরা পরিকল্পিতভাবে গর্ভ নষ্ঠ করার জন্য রাজনাকে বিভিন্নভাবে প্ররোচনা দিতে থাকে। তাতে রাজনা রাজী না হওয়ায় অভিযুক্তরা তাকে (রাজনা) জোরপূর্বক ঔষধ খাওয়াইয়া গর্ভ নষ্ঠ করার চেষ্ঠা করে। তাতেও অভিযুক্তরা সফল না হতে পেরে রাজনাকে মারপিঠ’সহ নানাভাবে নির্যাতন শুরু করে। মেয়েকে মারধরের খবর পেয়ে জহির উল্লা রাজনাকে উদ্ধার করে গত ৫ ডিসেম্বর সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে রাজনা বেগম বাদী হয়ে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারী তার স্বামী আবদুল মতিন’কে অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৪ (তাং ১৩.০১.১৮ইং)।

Manual2 Ad Code

ওই মামলা দায়েরের পর থেকে আবদুল মতিন  তাদের উপর আরোও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ও তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। আবার কৌশলে বেশ কয়েকবার বিষয়টি আপোষের প্রস্তাবও দেন আবদুল মতিন। কিন্তু আব্দুল মতিন নিজের মতো করে আপোষ না হওয়ায় বার বার তা প্রত্যাখ্যান করেন। অবশেষে ২৪ জানুয়ারি রাতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘দা, লোহার রড, ডেগার’সহ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রবাসী আবদুল মতিন নিজের আতœীয়-স্বজনকে সাথে নিয়ে রাজনার পৈত্রালয়ে গিয়ে আবারও কৌশলে আপোষের প্রস্তাব দেন। রাজনার পিতা প্রবাসী মতিনের সেই আপোষ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অভিযুক্তরা তাদের সাথে থাকা অস্ত্র নিয়ে ‘জহির উল্লা’র উপর তারই বসত ঘরে হামলা করে। পিতার চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন রাজনা বেগম। এসময় অভিযুক্ত রাজন আলী তার হাতে থাকা দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে রাজনা বেগমের স্বজোরে কুপ মারে। দায়ের কুপ মাথায় পড়ে রাজনা বেগমের রক্তাক্ত জখন হয়। সাথে সাথে অভিযুক্ত আবদুল মতিন ও লোকমান আলী গর্ভের সন্তান নষ্ঠ করার জন্য স্বজোরে রাজনা বেগমের তলটেপে কয়েকটি লাথি মেরে তাকে (রাজনা) মাটিতে ফেলে দিয়ে স্বজোরে আরও একাধিক লাথি মারে। জহির-রাজনার চিৎকার শুনে আশপাশ থেকে মানুষ এগিয়ে আসতে দেখে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। যাওয়ার সময় অভিযুক্তরা মামলা না উঠাইলে ‘বাপ-মেয়ে (জহির-রাজনা)’কে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে গেছে বলে এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় রাজনাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে রাজনা বেগম সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

Manual8 Ad Code

মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2018
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728  

সর্বশেষ খবর

………………………..