এবার দক্ষিণ সুরমা’তে জুয়া খেলার নিয়ন্ত্রক অসাধূ সাংবাদিক ও পুলিশ !

প্রকাশিত: ৩:৩১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৬, ২০১৭


Manual6 Ad Code

নিজস্ব প্রতিনিধি:: সিলেটের পুরো দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় কিছুতেই থামছে না ইন্টারনেট ভিত্তিক তীর জুয়া ও টিকিটিকি নামক জুয়া খেলা। তীর খেলার নতুন সংযোজন নাইট তীর। রাত ১০.৩০ মিনিট ও রাত ১১.৩০ মিনিটে এ খেলার ড্র অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

Manual6 Ad Code

এসব জুয়া খেলার বিরুদ্ধে পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের অভিযান চললেও বড় বড় রাঘব বোয়ালরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রশাসনের অভিযান শেষে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠে এসব জুয়ার আসরের মালিকরা। অধিক লাভের আশায় নারী পুরুষ দলঁ বেধে এইসব জুয়া খেলায় প্রতিনিয়ত যুক্ত হয়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে।

এমনও দেখা গেছে, বাড়ী থেকে চাল, ডাল কিনার টাকা নিয়ে এসে তীর ও টিকটিকি খেলায় জড়িয়ে পড়ে রেজাল্টের পর কাঁদতে কাঁদতে খালি হাতে বাড়ি ফিরছে। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ীতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগে আছে। এসনকি অনেকের সংসারে নেমে এসেছে অশান্তি। তীর ও টিকটিকি খেলার মূল এজেন্টরা প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে এসব জুয়ার আসর চালাচ্ছে বলেও জানা যায়। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়ায় আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে যে কোন স্থানে বসেই এসব খেলা পরিচালনা করা যায়। অনেক স্কুল কলেজের ছাত্ররা অধিক লাভের আশায় জড়িয়ে পড়ছে টিকটিকি ও তীর জুয়া খেলায়।
এছাড়াও দিনমজুর, রিক্সা চালক যানবাহনের চালক- হেলপার সহ বেকার যুবকরা বেশি অংশ নিচ্ছে এসব জুয়া খেলায়। অনেকেই জুয়ার টাকা সংগ্রহ করতে চুরি, ছিনতাইর মত নানা ধরণের অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। আর এ কারণেই দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন জায়গায় চুরি ছিনতাই বেড়েই চলেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দক্ষিণ সুরমার কুশিঘাট গ্রামের বাজারে তিনটি জুয়ার বোর্ড ও কদমতলী বালুর মাঠে দুটি রয়েছে। বাবুল , বছন, ছাদি, রুহেল ও রাহেল নামের পাঁচ ব্যক্তি ঐ তিনটি তীর ও টিকটিকি জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে থাকে। ঝালোপাড়া চাঁদনীঘাটে রয়েছে দক্ষিণ সুরমার সবচেয়ে বড় তীর ও টিকিটিকি জুয়ার আসর। বাবনার মোড়, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এবং লালাবাজারে রয়েছে আরো কয়েকটি তীর ও টিকটিকি জুয়ার বোর্ড। কদমতলীর ফেরিঘাট এলাকায় সেলিমের হোটেলের পিছনে তীরের আস্তানা রয়েছে। তীর খেলার আয়োজক আস্তানার ক্যাশিয়ার হিসেবে স্থানীয় যুবকরা দৈনিক ৪০০ টাকা করে বেতন পেয়ে দায়িত্ব পালন করেন। যারা তীর খেলায় জড়িয়ে পড়ে নিঃস্ব হয়ে ফিরে এসেছে তাদের অনেকের কাছ থেকেই এমন তথ্য পাওয়া যায়। তারা আর এখন জুয়ার আস্তানায় যেতে চায়না।

Manual6 Ad Code

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন কলোনীতে তীর জুয়ার আস্তানা গড়ে উঠেছে। এসব কলোনীর জুয়ার বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করে কয়েকজন নামধারী সাংবাদিক ও অসাধু পুলিশ । তারা বিভিন্ন কলোনীতে ভ্রাম্যমান ভাবে জুয়া খেলা চালায়। অনেকাংশে মোবাইলের মাধ্যমে ওয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার ইত্যাদি ব্যবহার করেও এই তীর খেলা পরিচালনা করা হয় এবং টেকনিক্যালের মিন্টুর চা স্টলে ও তেলের ডিপোর পাশে সিপলু ও দেলোয়ার নামীয় ২ যুবক তীর জুয়া ও টিকটিকি জুয়ার বোর্ড চালায় বলেও একটি সূত্রে জানা যায়।

ক্বীনব্রীজের নীচ, বাবনা পয়েন্টের জিঞ্জির শাহ’র মাজারের পাশে ভাঙ্গাড়ী কাসেমের আস্তানা, হুমায়ুন রশিদ চত্বর, লাউয়াই মাসকাট পয়েন্টের পাশে বসে নিরাপদে খেলার নাম্বার টোকন বিক্রয় হয়। ভাঙ্গাড়ী কাসেমের আস্তানায় কিছুদিন আগে এই তীর খেলা ও টিকিটিকি জুয়া খেলা নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্ধে অপর পক্ষ ভাঙ্গাড়ী কাসেমকে মারধর করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জালালপুর বাজারেও রয়েছে টিকটিকি ও তীর জুয়ার বোর্ড।

Manual4 Ad Code

দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যানও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তীর ও টিকটিকি জুয়া খেলার বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রদান করেন এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান। এতো কিছুর পরও থেমে নেই এই শর্বনাসা তীর খেলা।

এ ব্যাপারে এসএমপির মূখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল ওহাব বলেন, তীর ও টিকটিকি নামীয় জুয়া খেলা বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। যেখানে খবর পাওয়া যাবে সেখানেই আমাদের অভিযান চলবে।

Manual2 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2017
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..