সুনামগঞ্জে যুবককে হত্যা: র‍্যাবের হাতে অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ১০:২৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪

সুনামগঞ্জে যুবককে হত্যা: র‍্যাবের হাতে অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ড্রেন নির্মাণকে কেন্দ্র করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় সোলেমান নামে একজনকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন র‍্যাব। এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছয়জনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।

অভিযুক্তরা হলেন- নজরুল ইসলাম, সাব্বির, তাকবির, জাকির, জসিম উদ্দিন ও সেলিম উদ্দিন।

র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, ২৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা থানার জয়শ্রী ইউনিয়নের অন্তর্গত শান্তিপুর এলাকায়, ড্রেন পুনঃনির্মাণ করার কারণে ইউপি সদস্য রাসেল ও তার লোকজনের ওপর নজরুল তার সহযোগীদের নিয়ে হামলা চালায়। মূলত সাতারিয়া-পাথারিয়া হাওরের বোরো ধানের জমিতে পানি সেচের জন্য ড্রেনটি নির্মাণ করা হয়। গ্রেপ্তার নজরুল ও তার লোকজন অ্যাক্সেভেটর দিয়ে মাটি তুলে ড্রেনটি ধ্বংস করে দেয়। ঘটনার দিন ২৬ ডিসেম্বর রাসেল মেম্বারের লোকজন তাদের স্বত্ব দখলীয় হাওরের বোরো জমিতে পানি সেচের জন্য ড্রেনটি পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

খবর পেয়ে নজরুলের নেতৃত্বে সাব্বির, তাকবির, জাকির, মিজান, নাঈম, জসিম উদ্দিন, সেলিম উদ্দিন, নয়ন, আক্কল এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮ ও ১০ জন দেশীয় অস্ত্র দা, রামদা, রড, রডের পাইপ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ওপর নৃশংস হামলা চালায়। হামলায় ভিকটিম সোলেমানসহ মোট ১০ জন গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় এলাকাবাসী আহত ব্যক্তিদেরকে উদ্ধার করে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

ভিকটিম সোলেমানসহ মোট ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ মেডিকেলে আইসিইউতে থাকা অবস্থায় ৯ জানুয়ারি সোলেমানের মৃত্যু হয়।

আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, হামলার ঘটনায় ৩ জানুয়ারি ভিকটিমের চাচাতো ভাই দীন ইসলাম বাদী হয়ে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। ভিকটিম সোলেমানের মৃত্যু হওয়ার পর ১০ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারা সংযোজিত হয়ে মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হয়। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে ধর্মপাশায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করে। আসামিরা নিজ এলাকা ছেড়ে রাজধানী ঢাকায় আত্মগোপনে চলে আসে। পরে র‍্যাব-৩ এর গোয়েন্দারা তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে, আসামি নজরুল তার আত্মীয়স্বজন এবং অনুসারীদের সহায়তায় দীর্ঘদিন যাবৎ শান্তিপুর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে সাধারণ মানুষের জমিজমা জবরদখল করে আসছিল। ভিকটিম সোলেমানের চাচাতো ভাই রাসেল আহমদ ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। রাসেল মেম্বার নজরুলের এ সকল অপকর্মের প্রতিবাদ করায় নজরুল রাসেল মেম্বারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়। এর আগে শান্তিপুর গ্রামের একটি মসজিদের উন্নয়ন কাজের জন্য নদীপথে আনিত বালু মসজিদ ঘাটে আনলোড করার সময় নজরুল বাঁধা প্রদান করে। ওদিন ভিকটিম সোলেমান তার চাচাতো ভাই রাসেল মেম্বারের পক্ষ হয়ে নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। এতে নজরুল সোলেমানের ওপর ক্ষিপ্ত হন।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে নজরুলের কুকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে ভিকটিম সোলেমান নজরুল এর চক্ষুশূলে পরিণত হয়। কারণেই নজরুল ভিকটিম সোলেমানকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে। নজরুল রাসেল মেম্বার এবং সোলেমানকে উচিত শিক্ষা দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে হুমকি প্রদান করে। নজরুল শান্তিপুর এলাকার একজন চিহ্নিত অপরাধী। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং দখলদারিত্বের জন্য নজরুল বিভিন্ন লোকজনকে হুমকি প্রদান করতো।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2024
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829  

সর্বশেষ খবর

………………………..