১১ বিয়ে করে কোটিপতি হামিদা বেগম

প্রকাশিত: ৭:৩৮ অপরাহ্ণ, জুন ২৭, ২০১৯

১১ বিয়ে করে কোটিপতি হামিদা বেগম

Manual4 Ad Code

নাম তার হামিদা বেগম। বয়স ৩৪ বছর। বিয়ে করা তার পেশা। একটি নয় দুটি নয় বিয়ে করেছেন ১১বার। বিয়ে করে কিছুদিন পর সেই স্বামীকে ছেড়ে দেয়া এবং তার কাছ থেকে দেনমোহরের টাকা সহ নানা কৌশলে আরো বেশি করে টাকা হাতিয়ে নেয়া তার ব্যবসা। একে একে ১১টি বিয়ে করলেও তিন-চারটি ছাড়া অধিকাংশ স্বামীর সঙ্গেই কোনো প্রকার বিয়ে বিচ্ছেদ হয়নি হামিদার। তার মূল টার্গেট থাকে প্রবাসী এবং সম্পদশালী ব্যবসায়িরা। প্রথমে টার্গেট নিশ্চিত করেন তিনি এর পর নিজ দেহের সৌন্দর্য দিয়ে আকৃষ্ট করেন পুরুষদের।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকায় হামিদার পৈতৃক বাড়ি। বাবা বালু মিয়া, মা আবেদা খাতুন। হামিদার বাবা ছিলেন একজন চা দোকানি।

পারিবারিকভাবে হামিদার প্রথম বিয়ে হয় সরাইল সদরের বড্ডাপাড়া গ্রামের প্রবাসী আলমগীর মিয়ার সঙ্গে। অনুমান ১০ বছর সংসার করার পর হামিদা কালীকচ্ছ এলাকার ব্যবসায়ী ইব্রাহিম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে প্রবাসী আলমগীরকে তালাক দেয় এবং দেনমোহর ও অন্যান্য পাওনা বাবদ প্রায় নয় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় হামিদা।

Manual2 Ad Code

পরবর্তীতে ইব্রাহিমের সঙ্গে সংসার শুরু করে হামিদা। মাত্র একবছরে কৌশলে হামিদা নিজ পিত্রালয়ে নতুন ঘর নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজের অজুহাতে ১০ লক্ষ টাকার বেশি ইব্রাহিমের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়।

এরই মধ্যে কালীকচ্ছ এলাকার বাপ্পী নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলেন হামিদা। এরকিছু দিন পর দুর্ঘটনায় ইব্রাহিম পা ভেঙে অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাকে ছেড়ে হামিদা বেগম বাপ্পীর সঙ্গে নতুনভাবে সংসার শুরু করে।

মাত্র কয়েকমাসে বাপ্পীর কাছ থেকে হামিদা মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পর সরাইল সদরের বাসিন্দা রেজেক আলীর সঙ্গে আবারো নতুনভাবে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক গড়েন।

পরবর্তীতে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে হামিদা গ্রামের বাড়ি কালীকচ্ছ থেকে কয়েক বছর আগে বিতাড়িত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বিয়ে বাণিজ্য চালাতে থাকেন।

বিশেষ করে প্রবাসী ও ব্যবসায়ীদের নানাভাবে ফাঁদে ফেলে প্রথমে বিয়ে ছাড়াই তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন হামিদা। পরে বিয়ে ছাড়া রাত্রিযাপনের অপরাধে মামলার ভয় দেখিয়ে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা দেনমোহরে এসব ব্যক্তিদের রেজিস্ট্রি বিয়ে করেন হামিদা। কিছুদিন পর সুযোগ বুঝে দেনমোহরের পূর্ণ টাকা ও বিবাহ বিচ্ছেদকালীন স্ত্রীর ভরণপোষণ বাবদ আরো লক্ষাধিক টাকা আদায় করে এসব স্বামীদের তালাক দেন হামিদা।

সর্বশেষ ১০ নম্বর স্বামী জহিরুল ইসলামকে নিয়ে সংসার করা অবস্থায় গত ২৩ জুন জহিরুলের বন্ধু আবদুল্লাহকে বিয়ে করেছেন হামিদা। হাতিয়ে নিয়েছে জহিরুলের সবকিছু।

Manual1 Ad Code

এদিকে বিষয়টি অনুসন্ধানে হামিদার একের পর এক বিয়ের কাবিননামাসহ বেশকিছু নথি প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে। হামিদা বিয়ের প্রতারণার ফাঁদ ফেলতে ভুয়া ঠিকানা দিয়ে পাসপোর্ট, বয়স কম দেখিয়ে জন্ম নিবন্ধন তৈরি ও অনৈতিক কাজে বিভিন্ন স্থানে নিজেকে রক্ষা করতে প্রথম স্বামীর নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় সনদপত্র করেছেন হামিদা।

Manual1 Ad Code

এ বিষয়ে কালীকচ্ছ এলাকার জনপ্রতিনিধি, সমাজকর্মী সহ সুশীল সমাজের বেশকয়েকজন জানান, হামিদার ব্যবসা হলো বিয়ে। দেনমোহরের টাকা হাতিয়ে নিতেই হামিদা একের পর এক বিয়ে করেই যাচ্ছেন। তার কারণে অনেক পরিবারে এখন শুধুই অশান্তি। অনেক মানুষ আজ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) মুঠোফোনে যোগাযোগ হামিদা বেগম বলেন, একাধিক বিয়ে এটি আমার ব্যক্তিগত জীবনের বিষয়। মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের সবকিছু জানতে নেই। হামিদা বেগম এসব কিছু অস্বীকার করে দাবি করেন, একাধিক বিয়ে ও দেনমোহরের টাকা আদায়, এসব তিনি তার স্বামীর ইচ্ছাতেই করছেন। তার স্বামী তাকে দিয়ে এসব রোজগার করাচ্ছেন।

পরে তাকে প্রশ্ন করা হয় আপনার কোন স্বামী, আপনাকে দিয়ে এ অনৈতিক কাজগুলো করাচ্ছেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে হামিদা বলেন, এসব জানতে হলে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে হবে। এটি জানিয়ে তিনি মুঠোফোনোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।এর পর একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোনের সংযোগটি আর সচল পাওয়া যায়নি।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..