সিলেটে অবৈধ পাথর উত্তোলন নেপথ্যে প্রশাসনও!

প্রকাশিত: ৬:১৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৮

সিলেটে অবৈধ পাথর উত্তোলন নেপথ্যে প্রশাসনও!

Manual4 Ad Code

ক্রাইম প্রতিবেদক :: সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার পাথর শ্রমিক নূর হোসেন। দীর্ঘ দিন ধরে বাস করছেন কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জের গুচ্ছগ্রাম এলাকায়। এক সময় বেলচা শ্রমিক হিসেবে ভোলাগঞ্জ কোয়ারিতে পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন আর তাকে বেলচা হাতে নিতে হয় না। কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ করায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে ব্যবহৃত বোমা মেশিনের শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। প্রতিদিন ৭-৮শ- টাকা আয় করা নূর হোসেনের মতে, যার প্রভাব আছে কিংবা প্রশাসনের সঙ্গে লিয়াজোঁ আছে, তারাই বোমা মেশিন চালাতে পারে। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী, সীমান্তের কোয়ারিগুলোতে শতাধিক ব্যক্তি অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িত। আদালতের নির্দেশ, সামাজিক আন্দোলন ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের ফলে অধিকাংশ কোয়ারিতে এখন বোমা মেশিন ব্যবহার বন্ধ। শুধু দেশের সর্ববৃহৎ কোয়ারি ভোলাগঞ্জে কৌশলে বোমা মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিদিন ২০-৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে একেকটি মেশিন চালানো হয়। অপর আরো এক ব্যক্তি হলেন,সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার আলাউদ্দিন । তার ঈশারায় সমগ্র কান্দুবস্তি এলাকা এখন বিলীন হয়ে গেছে । তার সাথে জড়িত রয়েছেন জামাই সুমন ও শাহপরান নামক এক পাথর খেঁকো প্রভাবশালী ব্যক্তি । মূলত তাদেরকে শেল্টার দেয় প্রশাসন !

Manual8 Ad Code

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ভোলাগঞ্জ রেলওয়ের জায়গা ও সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এখনও অপ্রতিরোধ্য বোমা মেশিন সিন্ডিকেট। খোদ রেলওয়ের কর্মকর্তা ও থানার ওসিকে ম্যানেজ করে এ মেশিন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কোম্পানীগঞ্জের পাথর ব্যবসায়ী ক্রাশার মিল মালিক বিল্লাল হোসেন। তার অভিযোগ, যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, তা না নিয়ে নিরীহদের হয়রানি করা হচ্ছে।

Manual3 Ad Code

অপরিকল্পিত এ পাথর উত্তোলনের ফলে কোয়ারিগুলোর পরিবেশ ও আশপাশের জনবসতি হুমকিতে পড়ায় ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের পাঁচটি কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে পাথর কোয়ারিগুলোতে সব ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন সর্বোচ্চ আদালত। জাফলং, লোভাছড়া, বিছনাকান্দিসহ কিছু এলাকায় বোমা মেশিন বর্তমানে বন্ধ থাকলেও অনেক কোয়ারিতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন হচ্ছে।

Manual2 Ad Code

বৃহৎ ভোলাগঞ্জ কোয়ারি :দেশের বৃহৎ ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি এলাকায় ৫০-৬০টি মেশিনের ভাসমান ভেলা বা বোর্ড দেখা গেছে। কোনো বোর্ডের ওর মেশিন লাগানো আবার কোনোটির ওর শুধু পাইপ। রেলওয়ের বাংকার এলাকা, লিলাইবাজার, দয়ারবাজার, গুচ্ছগ্রাম ও কালিবাড়ি এলাকায় এসব মেশিন ও ভেলা দেখা যায়। সম্প্রতি চালিত অভিযানের ফলে লিলাইবাজার, দয়ারবাজার ও গুচ্ছগ্রাম এলাকার বোমা মেশিন তুলে নেওয়া হয়েছে। শুধু রেলওয়ের রোপওয়ের বাংকার এলাকায় ১৫-২০টি ও কালিবাড়ি এলাকায় ৫-৬টি বোমা মেশিন দেখা গেছে। রাতে ওইসব স্থানে বোমা মেশিনগুলো চালানো হয়। টাস্কফোর্স অভিযানে সর্বশেষ বিগত ২৮ আগস্ট বাংকার এলাকা থেকে ৪টি মেশিন উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে গুচ্ছগ্রাম ও লিলাইবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২০টি বোমা মেশিন ও একটি পেলোডার ধ্বংস করা হয়।

জাফলং, শ্রীপুর ও লোভাছড়া কোয়ারি :সীমান্তের গোয়াইনঘাটের জাফলং, জৈন্তাপুরের শ্রীপুর ও লোভাছড়া পাথর কোয়ারি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাথর উত্তোলনের ফলে অনেক এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। ২০০১ সালে এক্সক্যাভেটর দিয়ে সর্বপ্রথম যান্ত্রিক পদ্ধতিতে জাফলংয়ে শুরু হয় পাথর উত্তোলন। ২০০৯ সাল থেকে এ মেশিনের পরিবর্তে বিকল্প পদ্ধতি বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু হয়। বছরখানেক ধরে জাফলংয়ে বোমা মেশিন বন্ধ। তবে কোয়ারির বাইরে কিছু এলাকায় এখনও পাথর উত্তোলন চলছে কৌশলে। জৈন্তাপুরের শ্রীপুর ও খাসি নদীতে তিন শতাধিক সেভ মেশিন নামে এক প্রকার যন্ত্র দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। রাং পানি নদীর পাড় থেকে ছাগল খাউরি পর্যন্ত দেড় কি.মি. ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। শ্রীপুর পাথর কোয়ারির বাইরে পাথরের গর্ত বিক্রি করে এককালীন টাকা ও পাথরবাহী গাড়ি থেকে ৫শ- টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।

হরিপুরের বাসিন্দা শাহ আলম শ্রীপুর পাথর কোয়ারি ইজারা নিলেও দু-মাস আগে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তার। কিন্তু তার পরও তিনি রয়্যালটি আদায় করছেন। প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত করে তা আদায় করা হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক পাথর শ্রমিক জানিয়েছেন। লোভাছড়ার প্রবেশমুখ মেছারচর থেকে ভালুকমারার চর সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে বিশাল পাথররাজ্য। মূল পাথর কোয়ারি এলাকার বাইরেও টিলার ওপরে ডাউকেরগুল গ্রাম, চাতলটিলা, ডেয়াটিলা ও সাউদ গ্রামের নদী সংলগ্ন ফসলি জমি থেকে গর্ত করে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে কোম্পানীগঞ্জের শাহ আরেফিন টিলা এখন কঙ্কালসার। গর্ত করে পাথর উত্তোলন করায় টিলার অস্তিত্বই নেই সেখানে। কালাইরাগ, মাঝেরগাঁও ও বিছনাকান্দি কোয়ারিতেও একটি সিন্ডিকেট অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছে।

Manual1 Ad Code

বোমা মেশিন বসাতেও ঘুষ :ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, ড্রেজার মেশিনকেই বলা হয় বোমা মেশিন। পানি ও বালু উত্তোলনের জন্য ড্রেজার মেশিন ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু মূল মেশিনের সঙ্গে কিছু অংশ সংযুক্ত করে তার মধ্যে বড় পাইপ লাগিয়ে পাথর উত্তোলন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বোমার মতো বিকট শব্দ করে চলে এবং ধ্বংস করে বলে এটিকে বোমা মেশিন নামেই ডাকেন স্থানীয়রা।

সংশ্নিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, একটি মেশিন কিনতে খরচ হয় ১৫-২০ লাখ টাকা। পাথর তুলতে মেশিনটি বসানো হয় পানির ওর ড্রাম দিয়ে তৈরি প্লেট বা ভেলার ওপর। মেশিনের পাইপ বসানো হয় আরও দুটি ভেলার ওপর। একটি ভেলা তৈরিতে ৩২টি ড্রাম প্রয়োজন। শুধু ভেলা তৈরি করতেই কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়। মাটির গভীর থেকে পানির সঙ্গে পাথর নিয়ে আসে বোমা মেশিন। ৭-৮ ঘণ্টা চললে ৮০-৯০ হাজার টাকার পাথর উত্তোলন করতে পারে এটি। প্রতিদিন একটা বোমা মেশিনের পেছনেই খরচ হয় ৩০-৪০ হাজার টাকা। মেশিনপ্রতি মালিককে প্রতিদিন দিতে হয় ২০-৩০ হাজার টাকা। অভিযোগ রয়েছে, এর মধ্যে ১০ হাজার টাকা পুলিশ এবং ১০ হাজার টাকা নেয় রেলের লোকজন। অন্যান্য খাতে দিতে হয় আরও ৫-৭ হাজার টাকা।

অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, অবৈধ বোমা মেশিন বসাতে হলে মেশিন মালিককে অগ্রিম এক লাখ টাকা দিতে হয়। তারা জানান, মেশিন চালানোর সুযোগ পেলেই প্রতিদিন -আয়- ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। বোমা মেশিন বন্ধ না হওয়া প্রসঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল লাইছ বলেন, লোভই মানুষকে বিপথে নিচ্ছে। কারও ঘরের নিচে সোনা থাকলে সে চাইবে তা বের করে নিয়ে আসতে। আগে মেশিন চালানো হতো দিনে, এখন চলে রাতে। অনিয়ম বন্ধে রাতেও অভিযান চালাচ্ছি, তবু বন্ধ করা যাচ্ছে না।

নেপথ্যে যারা :নতুন বালুচরের বাসিন্দা কাজল সিংহ, উত্তর কলাবাড়ি গ্রামের শাহাব উদ্দিন, আলিম উদ্দিন, বিলাল আহমদ ও রাসেল মিয়া; বিশ্বম্ভরপুরের শিলডুয়ার বাসিন্দা বর্তমানে উত্তর কলাবাড়িতে বসবাসকারী তাজুল ইসলাম ওরফে পরিবেশ মোল্লাসহ ১৫-১৬ জনের নেতৃত্বে পাথরখেকোরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে ভোলাগঞ্জ কোয়ারি এলাকায়। তারাই মূলত প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা করে বোমা মেশিন চালায়। এদের অনেকেরই একাধিক মেশিন রয়েছে। এক মেশিন মালিক অভিযোগ করেন, পরিবেশ মোল্লা টাকা তোলেন পুলিশের পক্ষে ও কাজল সিংহ টাকা তোলেন রেলওয়ের পক্ষে। আর থানার ওসি, রেলওয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মদদে ওইসব মেশিন চলছে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেন। পরিবেশ মোল্লা বলেন, পাথর কেনাবেচা করি। আমার কোনো মেশিন নেই। ওসির পক্ষে টাকাও উত্তোলন করি না। সম্প্রতি চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার প্রসঙ্গে বলেন, পাথর কেনা নিয়ে বিরোধের কারণে আটক করা হয়েছিল।

জৈন্তাপুর আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত আলীর দখলে শ্রীপুর পাথর কোয়ারি ও এর আশপাশ এলাকা। কানাইঘাটের লোভাছড়া পাথর কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নাজিম উদ্দিন, তমিজ উদ্দিন মেম্বার, যুবদল নেতা ফখরুল আলম, বিএনপির বিলাল আহমদ প্রমুখ। এরা প্রভাব খাটিয়ে নদীর তীর কেটে, টিলা ও ফসলি জমিতে ৪০-৫০ ফুট গভীর গর্ত করে ইচ্ছেমতো পাথর উত্তোলন করে। ইজারাদার ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশ বিদেশ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার ঘনিষ্ঠজন ইউপি সদস্য তমিজ উদ্দিন জানান, গর্ত না করে পাথর উত্তোলন সম্ভব নয়। বর্ষা মৌসুমে পাথর উত্তোলন হয় না। ইজারার বাইরে পাথর উত্তোলন করলে প্রশাসন অভিযান চালায় বলে তিনি দাবি করেন। এ ছাড়া উৎমা কোয়ারি বিএনপি নেতা ফিরোজ, নাসির মেম্বার, জমশেদ, সিদ্দেক আলীসহ কয়েকজন নিয়ন্ত্রণ করছেন।

জাফলংয়ের নয়াবস্তি: নয়াবস্তি ও কান্দুবস্তি শ্মসানঘাট সম্পন্ন এলাকা রয়েছে আলাউদ্দিন,জামাই সুমন,ফয়জুল হক,শাহপরান ও হরিপুর এলাকার যুবলীগ নেতা আজির উদ্দিন নামক ব্যক্তির দখলে । তারা সকলে একত্রিত হয়ে প্রসাশনকে ম্যানেজ করে ওই তিনটি স্থানে ধ্বংসযঞ্জ চালিয়েছেন । তাদের কাছ থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় গোয়াইনঘাট থানার এসআই জুনেদ চাঁদা কালেকশন করতেন । তাদের মূল গডফাদার ছিলেন গোয়াইনঘাট থানার সাবেক ওসি দেলোয়ার । বর্তমানে অত্র এলাকা বিলীন হয়ে গেছে বললেই চলে ।

ওসি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ :ওসি আবদুল হাইয়ের মদদে কোম্পানীগঞ্জে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের মহোৎসব চলছে- এমন অভিযোগ এনে ১৬ আগস্ট পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। ২০ আগস্ট স্মারকলিপি দেন ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম আহমদ। আরও চার ব্যক্তি পৃথক অভিযোগ দেন। তারা অভিযোগ করেন, রেলের রোপওয়ের সম্পদ হেফাজতে রাখার দায়িত্ব রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চিফ কমান্ড্যান্ট ইকবাল হোসেনের। স্থানীয় সিলেট চৌকির ইন্সপেক্টর হিসেবে রয়েছেন নূর মোহাম্মদ। কিন্তু তারা দায়িত্ব পালন না করে পাথরখেকোদের মদদ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। পাথরখেকোদের চক্রের কবলে পড়ে শারপিন টিলা, কালাইরাগ, ধলাই সেতু, সাদা পাথর এলাকা এবং লিলাইবাজারের অস্তিত্ব বিলীন হতে যাচ্ছে বলে স্মারকলিপিতে বলা হয়।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি আবদুল হাই বলেন, যাদের বোমা মেশিন রয়েছে, তারাই নানা অভিযোগ করছে। টাকা নিলে বারবার অভিযান চালাতাম না।

ইন্সপেক্টর নূর মোহাম্মদ বলেন, আমাদের কেউ টাকা তোলে না। নিরাপত্তাকর্মীরা কষ্ট করে দায়িত্ব পালন করছেন। যারা অবৈধভাবে পাথর তোলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা মামলাও করি। তবুও তাদের সামলানো যায় না।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2018
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  

সর্বশেষ খবর

………………………..